আজ রাজ্য বাজেটে ৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করেছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। রাজ্যের বাজেট পাঠ করার সময় তিনি জানান, আরও চার শতাংশ হারে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ বৃদ্ধি করা হবে। এই ডিএ মে মাস থেকে কার্যকর হবে। অর্থাৎ মে মাস থেকে রাজ্য সরকারি কর্মী-শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীরা ১৪ শতাংশ হারে ডিএ পাবেন।
তবে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে খুশি নয় শহিদ মিনারের ডিএ আন্দোলনকারী ও সুপ্রিম কোর্টে মামলাকারী সংগঠনগুলি। তাদের অভিযোগ, লোকসভা ভোটের আগে ডিএ বাড়িয়ে সরকারি কর্মীদের ভিক্ষা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারি কর্মীরা তাঁদের অধিকার চান। তাঁরা চান না, মুখ্যমন্ত্রী নিজের ইচ্ছে মতো ডিএ ঘোষণা করুন।
এই বিষয়ে শহিদ মিনারে আন্দোলনরত সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, 'আমরা যখন আন্দোলনে বসেছিলাম তখন ৩ শতাংশ হারে ডিএ পেতেন সরকারি কর্মীরা। এখন সেটা ১৪ শতাংশ হল। আমাদের আন্দোলনের চাপে পড়ে এই ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী করেছেন, এনিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে এতে আমরা সন্তুষ্ট নই। আমরা চাই নির্দিষ্ট নিয়মে ডিএ ঘোষণা করা হোক। আর আমাদের আরও দুটো দাবি ছিল। নিয়োগ এবং অস্থায়ি কর্মীদের অবস্থার উন্নতি। এই নিয়ে সরকার কোনও ঘোষণা করেনি। এর প্রতিবাদে আগামী কাল সব সরকারি দফতরে কর্মীরা অনশন করবেন।'
রাজ্য সরকারের ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে লড়াই করা অন্যতম সংস্থা সরকারি কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল বলেন, 'এটা লোকসভা ভোটের আগে সরকারি কর্মীদের ভিক্ষা ছাড়া আর কিছু নয়। এখন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা ৪৬ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা পান। সেখানে আমাদের কর্মীরা মাত্র ১৪ শতাংশ। আর বাজেটে ঘোষণা করা হয়েছে মে মাস থেকে ৪ শতাংশ বাড়বে। তা কার্যকর হতে হতে কেন্দ্রীয় সরকার আরও ৪ শতাংশ বা তার বেশি ডিএ ঘোষণা করে দেবে। তাহলে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের ফারাক তো থেকেই গেল। আর সেটা অনেক। লোকসভা ভোটের আগে ডিএ দিতেই হত মুখ্যমন্ত্রীকে। উনি চাপে পড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে এটাও মনে রাখতে হবে, সরকারি কর্মীরা দয়ার দান চান না। অধিকার চান।'
ডিএ বৃদ্ধি নিয়ে খুশি নয় কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের তরফে শ্যামল মিত্র বলেন, '৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু কেন্দ্র সরকার তো জানুয়ারি থেকেই নয়া হারে ডিএ কার্যকর করবে। তাই ফারাক বেড়ে সেই ৪০ শতাংশই থাকবে। জুন মাসেও ডিএ দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় খুশি নই আমরা। আমরা চাই AICPI অনুযায়ী আমাদের মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হোক। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, কেন্দ্রীয় সরকার ও অন্য রাজ্য সরকার যেভাবে AICPI অনুযায়ী ডিএ দেয়, সেভাবে ডিএ দেওয়া হোক পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদেরও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি বলেন, টাকা নেই তাই AICPI অনুযায়ী দিতে পারছি না, তাহলে আমাদের ডাকুন। আমরা দেখিয়ে দেব কীভাবে ডিএ দেওয়া যায়।'