রাজ্যের ডিএ নিয়ে বড় খবর। এবার রাজ্যের সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা নিয়ে সামনে এল নতুন তথ্য। কয়েকদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় বকেয়া ডিএ নিয়ে দাবি করেছিলেন, সরকারি কর্মীদের ডিএ মৌলিক অধিকার নয়, সরকারের ঐচ্ছিক বিষয়। তিনি এও দাবি করেন, বাম সরকার দেনা করে গিয়েছে। সেই দেনা পরিশোধ করতে গিয়ে তাঁর সরকার বিপাকে। তারপরও ২০১৯ সাল পর্যন্ত ডিএ দিয়েছেন ৯০ শতাংশ।
যদিও রাজ্যের সরকারি কর্মীরা এই বক্তব্যের সমালোচনা করেন। সুপ্রিম কোর্টে মামলাকারী একাধিক সংগঠন স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, সুপ্রিম কোর্টে বকেয়া ডিএ মামলা এখনও বিচারাধীন। আর কলকাতা হাইকোর্ট বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তার বিরোধিতা করেই রাজ্য সরকার SPL দায়ের করেছে। তাহলে মুখ্যমন্ত্রী এখনই কীভাবে বলতে পারেন যে ডিএ ঐচ্ছিক বিষয়?
এরইমধ্যে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ নিয়ে সামনে এল নতুন তথ্য। আর সেই তথ্য দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি জানালেন, রাজ্যের সরকারি কর্মীরা বেতন ২০ হাজার টাকারও কম পাচ্ছেন প্রতিমাসে। মুখ্যমন্ত্রী সরকারি কর্মীদের ডিএ নিয়ে যে তথ্য দিয়েছেন তা অসত্য।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন,'কেন্দ্রের সরকারি কর্মীরা ৪৬ শতাংশ হারে ডিএ পাচ্ছেন। সেই তুলনায় রাজ্যের সরকারি কর্মীরা কিছুই পাচ্ছেন না। এই রাজ্যের সরকারি কর্মীরা দিনের পর দিন আন্দোলন করছেন। কোর্টে যাচ্ছেন। শহিদ মিনারে শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা উপেক্ষা করে বসে রয়েছেন বকেয়া পাওয়ায় আশায়। রাজ্যের পুলিশও ডিএ পাচ্ছে না। একজন কনস্টেবল মাসে ২০ হাজার টাকারও কম বেতন পাচ্ছেন।'
সত্যিই কি এতটাকা কম পাচ্ছেন সরকারি কর্মীরা ? আসুন দেখে নিই হিসেব। যখন কেন্দ্রের কর্মীরা ৪২ শতাংশ হারে ডিএ পাচ্ছিলেন সেই সময় কত টাকা কম বেতন পাচ্ছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা?
২০১৬ সালে এ রাজ্যের কোনও গ্রুপ ডি-র কর্মীর এন্ট্রি পয়েন্ট ছিল ১৭ হাজার টাকা। ২০২২ সাল পর্যন্ত ইনক্রিমেন্ট হয়ে তাঁদের বেতন দাঁড়ায় প্রায় ২১ হাজার টাকা। রাজ্যের কর্মীদের AICPI অনুযায়ী ডিএ-র ফারাক ৩৬ শতাংশ। অর্থাৎ ২১ হাজার টাকার ৩৬ শতাংশ অর্থাৎ মাসে ৭৫৬০ টাকা। তাহলে বছরের হিসেবে প্রায় ৯০ হাজার ৭২০ টাকা মতো কম পাচ্ছেন গ্রুপ ডি-র কর্মীরা।
গ্রুপ সি কর্মীদের হিসেব ২০১৬ সালে গ্রুপ C-র কর্মী হিসেবে যিনি কাজে যোগ দিয়েছেন তাঁর এন্ট্রি পয়েন্ট ছিল ২২ হাজার ৭০০ টাকা। ২০২২ সাল পর্যন্ত তাঁদের ইনক্রিমেন্ট হয়ে বেতন দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ১০০ টাকা। ৩৬ শতাংশ ফারাক অর্থাৎ ৯৭৫৬ টাকা। বছরে অঙ্কটা হল ১ লাখ ১৭ হাজার টাকা।
আপার ডিভিশন ক্লাকদের হিসেবে ২০১৬ সালে আপার ডিভিশন কোনও ক্লাকের বেতন যদি ২৮৯০০ টাকা থেকে থাকে তাহলে তিনি ২০২২ সালে ইনক্রিমেন্ট হওয়ার পর বেতন পান প্রায় ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা। সেই হিসেবে মাসে ১২ হাজার ৪২০ টাকা কম পাচ্ছেন এই রাজ্যের সরকারি কর্মীকা। বার্ষিক ১ লাখ ৪৯ হাজার টাকা।