পুজোর মধ্যে ডিএ (Dearness Allowance) বাড়তে পারে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের। এখন তাঁরা ৪২ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পেয়ে থাকেন। কিছুদিন আগেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশ পুজোর আগেই বকেয়া ডিএ পাওয়ার দাবিতে কর্মবিরতি করেছেন। হয়েছে মিছিলও। তারপর থেকেই সরকারি কর্মীদের আশা ছিল, হয়তো পুজোর আগে মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করতে পারে রাজ্য সরকার।
বকেয়া ডিএ কি দেবে রাজ্য সরকার ? এই বিষয়ে পুজোর আগে মুখ খুললেন রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, 'ডিএ যেটা বাড়ানোর ছিল, সেটা আগেই বাড়ানো হয়েছে। ডিএ-র ইস্যুটা আদালতে বিচারাধীন। সুতরাং বিরোধী দলনেতা যেটা বলছেন, সেটার বিষয়ে তিনি নিশ্চয়ই পুরো অবগত আছেন। আদালতে বিচারাধীন থাকা মামলায় কী করতে হবে, তা উনি বলে দেবেন? সেটা তো হয় না। যা বলার আদালত বলবে।’
রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রীর এই মন্তব্যে অখুশি রাজ্যের সরকারি কর্মীদের একাংশ। তাঁরা বলছেন, AICPI অনুযায়ী সব রাজ্য সরকারই ডিএ দিয়ে থাকে। অথচ এই রাজ্যের সরকারি কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত। কবে বকেয়া মেটাবে এই সরকার? চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য আরও জানিয়েছেন, ডিএ মামলা এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। তাই যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার শীর্ষ আদালতই নেবে। মন্ত্রীর এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন সরকারি কর্মীরা। মামলাকারী সংগঠনগুলির দাবি, রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে একাধিকবার এই মামলা পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। বড় আইনজীবী নিয়োগ করে মামলাকে দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করছে তারা। তাহলে কেন চন্দ্রিমা দেবী বলছেন যে, এই মামলা এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন? এর আগে SAT ও হাইকোর্ট তো নির্দেশ দিয়েছে ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার। সরকার সেই বিষয়ে কর্ণপাত না করে সুপ্রিম কোর্টে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করেছে।
প্রসঙ্গত, পঞ্চম বেতন কমিশনের ডিএ মামলা এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের অভিযোগ, তাঁদের বকেয়া ও প্রাপ্য ডিএ সরকার দিচ্ছে না। সরকার মেলা-খেলা সর্বত্র খরচ করছে। বঞ্চিত করা হচ্ছে শুধু সরকারি কর্মীদের।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা চলছে, তা পঞ্চম বেতন কমিশনের। মামলাকারী সংগঠনগুলির দাবি, এই বেতন কমিশনের আওতায় ২০০৯ সালের জুলাই থেকে ২০১৬ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বকেয়া ডিএ মিলবে।
২০২২ সালের মে মাসে হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। তারপর হাইকোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছিল রাজ্য। তাও খারিজ হয়ে যায় রাজ্যের শীর্ষ আদালতে। তাও খারিজ হয়ে যায়। তারপরই রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়।
এই বকেয়া ডিএ ইস্যুতে রাজ্য সরকারি কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ডিএ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে হেঁটেছিলেন তিনি। যোগ দিয়েছিলেন শহিদ মিনারের ধরনা মঞ্চেও। আবার বিধাসসভায় এই বিষয়ও তুলে ধরেছিলেন। যদিও তাতে কর্ণপাত করেনি রাজ্য সরকার।
এখন রাজ্য সরকারি কর্মীদেক প্রাপ্ত ডিএ-র হার ৬ শতাংশ। তাও চলতি বছরের গোড়ার দিকে তিন শতাংশ ডিএ বাড়ানো হয়েছে। রাজ্যের বাজেট পেশের মধ্যেই সেই তিন শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করেছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী। যদিও সরকারি কর্মীদের দাবি, এই পরিমাণ বকেয়া পেয়ে তাঁদের লাভ হচ্চে না। বরং সরকারের উচিত অবিলম্বে বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা।