অর্থনৈতিক পিরামিডের নীচের ধাপে থাকা মানুষজনের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ক্ষুদ্রঋণ শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মাইক্রোফাইন্যান্স গ্রামীণ অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের কাছে নগদ প্রবাহের প্রধান উৎস এবং বিশেষজ্ঞদের মতে এই শিল্প প্রধানমন্ত্রীর আত্মনির্ভর ভারত অভিযানকে এগিয়ে নিয়ে যেতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।
এই প্রসঙ্গে, কলকাতা-ভিত্তিক মাইক্রোফাইন্যান্স সংস্থা ভিলেজ ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস (ভিএফএস) এর এমডি এবং সিইও কুলদীপ মাইতি বলেন “বিগত বছরগুলোর মতোই আগামী দিনে মাইক্রোফাইন্যান্স শিল্পের গুরুত্ব আরও বাড়বে। এটি এখন কেবল দারিদ্র্য দূরীকরণের মাধ্যম নয় বরং তার থেকেও বেশি, আমাদের স্বনির্ভর হওয়ার স্বপ্নের লক্ষ্য পূরণেও সহায়ক হয়ে উঠেছে।”
“স্বাবলম্বী হওয়ার মানে হ'ল সমাজের প্রতিটি বিভাগ থেকে উদ্যোক্তা গড়ে তোলা। তবে চ্যালেঞ্জ হ'ল অর্থনৈতিক পিরামিডের নীচের উদ্যোক্তাদের কাছে ঋণের সহজ সরবরাহ। কারণ তাদের কাছে এখনো পারম্পরিক ঋণ চ্যানেল থেকে ঋণ পাওয়া সহজ না। এমএফআইগুলি এই উদ্যোক্তাদের জন্যে এগিয়ে এসেছে এবং আগামী দিনেও ঋণ সরবরাহের মধ্যে দিয়ে তাদের বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে” তিনি বলেন।
সরকারের পদক্ষেপ এবং মাইক্রোফাইন্যান্সের ভূমিকা সম্পর্কে, কুলদীপ বাবু বলেন ‘সরকার ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন ব্যাঙ্ক (সিডবি) কে অর্থের মূল উত্স হিসাবে ব্যবহার করছে এবং এমএফআইগুলিকে ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেল হিসেবে। পোর্টফোলিও রিস্ক ফান্ডের অধীনে, সরকার সিডবিকে এমএফআইদের নেওয়া ঋণের বিনিময়ে প্রয়োজনীয় সিকিউরিটি ডিপোজিট প্রদান করে।‘
তাঁর মতে, এটি মনে রাখা প্রয়োজন যে পারম্পরিক ঋণ চ্যানেল যেমন ব্যাঙ্ক বা অন্য প্রতিষ্ঠানগুলি কল্যাটেরাল ভিত্তিক ঋণ প্রদান করে এবং ক্ষুদ্র শিল্পগুলির কাছে এটির অভাব থাকায় ব্যবসা পরিচালনার জন্য পারম্পরিক চ্যানেলগুলি থেকে ঋণ পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তহবিলের অভাব কেবল বৃদ্ধিকে বাধা দেয় না; উদ্যোক্তা উত্থানের সম্ভাবনা থেকেও বঞ্চিত করে। এই জায়গায় মাইক্রোফাইন্যান্স সংস্থাগুলি এগিয়ে এসেছে আর ঋণ সরবরাহের মধ্যে দিয়ে এই ক্ষুদ্র শিল্পের সহায়তার জন্য উচিত পদক্ষেপের নিয়েছে।
কুলদীপ বাবুর মতে, এমএফআই উদ্যোগ এই জন্যেও গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছোট শিল্প যেগুলি তহবিলের দক্ষ মোতায়েনের দক্ষতা রাখে না, ওই শিল্পগুলিকে মাইক্রোফাইন্যান্স সংস্থাগুলি ঋণ দেয়ার পাশাপাশি তহবিলের সঠিক মোতায়েনে করতেও সাহায্য করে। এই উদ্যোগ ক্ষুদ্রঋণ শিল্পের গুরুত্ব বাড়িয়ে তোলে।
আত্মনির্ভর ভারত অভিযানে বন্ধন ব্যাঙ্ক একটি সহযোগী অনুঘটকের ভূমিকা পালন করছে। ব্যাঙ্কের এমডি এবং সিইও চন্দ্র শেখর ঘোষ, যিনি মাইক্রো ক্রেডিট এবং ইনক্লুসিভ ব্যাঙ্কিংয়ের ক্ষেত্রে অগ্রণী, তার নেতৃত্বে সমাজের দুর্বল অংশগুলির উন্নয়নের দিকে সুনিশ্চিতভাবে কাজ করেছে। ব্যাঙ্কটি নিজের মাইক্রো ব্যাঙ্কিং ঋণ, এসএমই ঋণ, কৃষি ঋণের মাধ্যম্যে অংসখ্য সুবিধাবঞ্চিত মানুষজনের, বিশেষত মহিলাদের নিজস্ব ছোট ব্যবসা শুরু করতে সাহায্য করে মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনে সহায়তা করেছে।