এতদিন একদিন অন্তর জ্বালানির দাম বাড়াচ্ছিল তেল সংস্থাগুলি। কিন্তু রবিবার সেই নিয়মের অন্যথা ঘটলো। শনিবার পর রবিবারও বাড়ল জ্বালানির দাম। অর্থাৎ দেশে পরপর দু'দিন বাড়ল পেট্রোল ও ডিজেলের দাম। শনিবার কলকাতায় পেট্রোলের দাম ছিল ৯৭.৯৯ টাকা। আজ তা ৩১ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৯৮.৩০ টাকা। অন্যদিকে শনিবার শহরে ডিজেলের দাম ছিল ৯১.৪৯ টাকা। আজ তা ২৬ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৯১.৭৫ টাকা।
রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি দু’একদিন অন্তর বাড়িয়েই চলেছে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম। শনিবারও দেশে জ্বালানির দাম বেড়েছিল। তার আগে বৃহস্পতিবার বেড়েছিল জ্বালানির দাম। অর্থাৎ লাগাতার দাম বাড়ানোর প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাণিজ্যনগরী মুম্বই-সহ দেশের ৬টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে আগেই সেঞ্চুরি পার করেছে পেট্রোলের দাম। কলকাতাতেও ক্রমশ ১০০ ছোঁয়ার দিকে এগোচ্ছে পেট্রোলের দাম। চেন্নাইতে তা প্রায় ১০০ ছুঁয়ে ফেলতে চলেছে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক, ভারতের কোন শহরে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম রবিবার কত থাকলো। এদিনি দিল্লিতে লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম ৯৮.৪৬ টাকা। ডিজেলের দাম ৮৮.৯০ টাকা। মুম্বইতে পেট্রোলের দাম লিটারে ১০৪.৫৬ টাকা। ডিজেলের দাম ৯৬.৪২ টাকা। চেন্নাইতে রবিবার লিটার প্রতি পেট্রোল মিলছে ৯৯.৪৯ টাকায়। ডিজেলের মূল্য লিটারে ৯৩.৪৬ টাকা।
বেশ কিছু শহরে কিছুদিন আগেই ১০০-র গণ্ডী টপকেছিল পেট্রোল ৷ অন্যদিকে পিছিয়ে নেই ডিজেলও। আর এর মাঝে পড়েই নাভিশ্বাস ওঠার অবস্থা দেশবাসীর। ইতিমধ্যে দেশের নানা প্রান্তে আনলক প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। ফলে রাস্তায় নামতে শুরু করেছে যানবাহনগুলি। সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পেট্রোল ও ডিজেলের চাহিদাও। এককথায় অগ্নিমূল্য পেট্রোল ও ডিজেল। সেই ধারা বজায় রেখে ২৭ জুন সরকারি তেল সংস্থাগুলি পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম ফের একবার বাড়িয়ে দিল । ইতিমধ্যে রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্র প্রদেশ, তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক, জম্মু ও কাশ্মীর, লাদাখ এবং তামিলনাড়ুর অনেক শহরে পেট্রোল সেঞ্চুরি ছাড়িয়ে গিয়েছে। এদিকে বিশ্বজুড়ে পেট্রোলিয়াম জ্বালানির চাহিদা বাড়ার কারণে অপরিশোধিত তেলের দাম সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে।
এইভাবে নিজের শহরে জানুন পেট্রোল-ডিজেলের দাম
প্রতিদিন পেট্রোল-ডিজেলের দাম আপডেট হয়। এমন পরিস্থিতিতে, নিজের শহরে প্রতিদিন মাত্র একটি এসএমএসের মাধ্যমে পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম জানতে পারবেন আপনি। এজন্য ইন্ডিয়ান অয়েল (IOCL) এর গ্রাহকদের RSP কোডটি লিখে 9224992249 নম্বরে পাঠাতে হবে।
এদিকে পেট্রোল -ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে জিনিসের দাম বেড়েছে। মধ্যবিত্তের আয়ত্তের বাইরে চলে যাচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনী জিনিস। সেকারণেই পরিবহণ খরচ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। যার জেরে কাঁচা সবজি থেকে চাল-ডাল সবকিছুর দাম হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে। তার সঙ্গে দফায় দফায় লকডাউনে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরাও। অবশ্য এই খুব একটা হেলদোল নেই কেন্দ্রের। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী এই মূল্য বৃদ্ধিকে খুব একটা আমোল দিতে চাননি। ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেছেন, মানছি জ্বালানির দামবৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু একবছরে ৩৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে করোনার ভ্যাকসিনের জন্য। এই কঠিন পরিস্থিতিতে কল্যাণমূলক প্রকল্পের জন্য আমরা অর্থ সঞ্চয় করছি। অন্যদিকে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা ময়দানে নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।