এখন পোশাকআশাক থেকে সাধারণ জিনিসপত্রও বেশিরভাগ মানুষ শপিংমল বা অনলাইনে কেনাকাটা করেন। আর প্রতিটি জিনিসপত্রের দামের মধ্যে রয়েছে একটি সামঞ্জস্য। যা সকলের নজরেই পড়ে। যেমন প্রতিটি জিনিসের দামের সঙ্গেই যুক্ত থাকে '৯৯'। এই যেমন ৯৯, ১৯৯, ২৯৯, ৪৯৯ এমনকি ৯৯৯। প্রতিটি পোশাকের দামের সঙ্গেই থাকে এই '৯৯'। কেন এটা থাকে, কখনও ভেবে দেখেছেন কি!
প্রতিটি পোশাক বা জিনিসপত্রের দামের সঙ্গে থাকে '৯৯'। কেন ৯৯ থাকে? কেন রাউন্ড ফিগার মানে ৩৯৯-এর জায়গায় ৪০০ থাকে না? এই প্রশ্ন সকলের মাথায় আসে। অনেকে ভাবেন এটা বোধহয় কর বাঁচানোর কৌশল! তা কিন্তু নয়। বরং এর পিছনে রয়েছে বিক্রেতা সংস্থার মনস্তাত্বিক খেলা। যে খেলায় গ্রাহকের মনস্তত্ত্বে প্রভাব ফেলে সংস্থা। কী রকম? আসলে গ্রাহক বা ক্রেতার কাছে ১ টাকা সাশ্রয় মানেই অনেকটা কম মনে হয়। ৪০০ টাকার জায়গায় তাঁকে দিতে হচ্ছে ৩৯৯। মনস্তত্ত্বের ভাষায় একে বলা হয় 'প্ল্যাসিবো ইফেক্ট'।
'প্ল্যাসিবো ইফেক্ট' কী?
প্ল্যাসিবো ইফেক্ট হল মনোবিজ্ঞানের এমন একটি অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তি মনে করেন তাঁর পরিস্থিতি আগের থেকে ভাল হয়েছে। অথচ পরিস্থিতি একই রয়েছে। তাঁর মনস্তত্ত্বই এভাবে কাজ করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যদি কোনও ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা দুর্বল হয়ে ওঠে অথচ তাঁকে যদি বোঝানো যায় তিনি আগের থেকে সুস্থ হয়েছেন তখন তিনি মানসিকভাবে শান্ত হন। তিনি মনে করেন, তাঁর অবস্থা আগের চেয়ে ভালো হয়েছে। অথচ বাস্তব অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয় না। তিনি আগের মতোই অসুস্থ রয়েছেন। অথচ তাঁর মানসিক অবস্থা তাঁকে উদ্বেগমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।
কেনাকাটায় 'প্ল্যাসিবো ইফেক্ট' কীভাবে কাজ করে?
ধরা যাক, শপিংমল বা অনলাইন কোনও জিনিসের দাম ৩৯৯ টাকা। সেই জিনিসটির দাম আদতে কিন্তু ৪০০ টাকাই। কিন্তু ৪০০ টাকা ও ৩৯৯ টাকার মধ্যে ১ টাকার ফারাক হলেও ক্রেতার মনস্তত্ত্বে প্রভাব ফেলে। ক্রেতাকে ৪০০ টাকা দিতে হলে তিনি মনে করতেন এটা অনেকটা দামি। কারণ দাম ৪০০-র ঘরে। অথচ ৩৯৯ টাকা দাম হলে তা থাকবে ৩০০-র ঘরে। ফলে মাত্র ১ টাকা কম দিতে হলেও ক্রেতার কাছে মনে হয় না এটা দামি। মাত্র ১ টাকা দাম কম রেখে সংস্থার ক্রেতার মানসিকতায় প্রভাব ফেলে।