রাজ্যের ডিএ মামলা নিয়ে বড় আপডেট। শুক্রবার অর্থাৎ ৩ নভেম্বর মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। শুনানিতে রাজ্য সরকারের দায়ের করা এলএলপি খারিজ হোক, এমনটাই চাইছেন সরকারি কর্মীরা। কারণ, এই SLP খারিজ হলে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ পাওয়া কার্যত নিশ্চিত হয়ে যাবে। তবে এর আগেও এই মামলা একাধিকবার সুপ্রিম কোর্টে উঠেছে। কিন্ত, মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। এমতাবস্থায় আশার কথা শোনালেন মামলাকারী সংগঠনগুলি।
'ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা পাওয়া কার্যত ১০০ শতাংশ নিশ্চিত। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দায়ের করা এসএলপি খারিজ হবেই। ডিএ মিলবে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের।' এমনটাই মন্তব্য করলেন সরকারি কর্মীদের পক্ষের মামলাকারী সংগঠন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সভাপতি শ্যামল মিত্র। প্রায় একই বক্তব্য আর এক মামলাকারী সংগঠন সরকারি কর্মচারী পরিষদের। সংগঠনের সভাপতি দেবাশিস শীল বলেন, 'এই মামলায় রাজ্য সরকারের আবেদন খারিজ হবে বলে আশাবাদী। কারণ, রাজ্য সরকারের কাছে কোনও যুক্তি নেই।'
৩ তারিখের মামলার দিকে তাকিয়ে রাজ্যের লাখ লাখ সরকারি কর্মী ও পেনশনার। এর আগে ৯ বার সুপ্রিম কোর্টে মামলা উঠলেও শুনানি হয়নি। তবে এবার শুনানি হবে এবং মামলার নিষ্পত্তিও হবে। এমনটাই মনে করছেন সরকারি কর্মীদের সংগঠনগুলি।
এই মামলা নিয়ে কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সভাপতি শ্যামল মিত্র বলেন, 'সুপ্রিম কোর্টের যে কজলিস্ট প্রকাশিত হয়েছে সেই মোতাবেক শুক্রবার হেয়ারিং যে হবে, সেই ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত। মামলার জয় নিয়ে আমাদের মনে কোনও সন্দেহ নেই। জয় নিয়ে ১০০ শতাংশ আমরা আশাবাদী। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই সেই কারণে একটু দেরি হচ্ছে। রাজ্য এসএলপি দায়ের করেছে। সেটা বিচারপতিরা দেখবেন। মামলা শুনবেন। ছোটোখাটো কোনও ত্রুটি বিচ্যুতি থাকলে তার সংশোধন করতে হয়তো বলতে পারেন বিচারপতিরা। এর আগেই কলকাতা হাইকোর্ট ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আমরা আশাবাদী, সুপ্রিম কোর্ট একই নির্দেশ দেবে ও মামলার নিষ্পত্তি করবে।'
সরকারি কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল বলেন, 'এর আগেই হাইকোর্ট বলেছে ডিএ অধিকার। আমাদের মনে হয়, সুপ্রিম কোর্ট এই বক্তব্যকে খারিজ করবে না। কারণ গোটা দেশের একই নিয়মে ডিএ দেওয়া হয়। যদি সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের বক্তব্যকে মান্যতা না দেয় সেক্ষেত্রে অন্য রাজ্যগুলির ডিএ মেলার যে প্রক্রিয়া তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে যাবে। সুতরাং, ডিএ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে আমরা যে জিতব ও মহার্ঘ ভাতা পাব সেই বিষয়ে আমরা নিশ্চিত।'
সরকারি কর্মচারী পরিষদ আগেই জানিয়েছিল মামলার নিষ্পত্তি যাতে দ্রুত হয় সেজন্য তাঁদের তরফে সুপ্রিম কোর্টে নামি কোনও আইনজীবীকে দাঁড় করানো হবে। সেই মোতাবেক, পিএস পাটওয়ালিয়া সরকারি কর্মীদের হয়ে সওয়াল করবেন ডিভিশন বেঞ্চে।
যদিও সরকারি কর্মীদের আশঙ্কা কাটছে না। কারণ, মামলাটির সিরিয়াল নম্বর আছে ৬০। সেই সময় শুনানি হবে কি না তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সরকারি কর্মীদের একাংশ। এই বিষয়ে সরকারি কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল বলেন, 'পাটওয়ালিয়া সাহেব মামলায় থাকবেন। কাল যাতে শুনানি হয় ও নিষ্পত্তি হয় মামলার তার আবেদন তিনি জানাবেন। যদি সময় কম থাকে তাহলে আমাদের আইনজীবীর তরফে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করা হবে যাতে দ্রুত কোনও তারিখ দিয়ে মামলার নিষ্পত্তি করা হয়। মামলার সিরিয়াল নম্বর যাতে এত দূরে না থাকে সেই আবেদনও জানানো হয়ে বিচারপতিদের কাছে।'
প্রসঙ্গত, গত বছর কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া DA মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সরকারের পুনর্বিবেচনার আর্জিও খারিজ করে দেয়। এরপরই রাজ্যের তরফে যাওয়া হয় সুপ্রিম কোর্টে।