প্রাক্তন আইপিএস আধিকারিক দেবাশিস ধরকে বীরভূমে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। তাঁর নামে দেওয়াল লিখনও শুরু হয়েছিল। সেই দেবাশিসের মনোনয়ন বাতিল করল নির্বাচন কমিশন। জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার তাঁকে 'নো ডিউজ' সার্টিফিকেট দেয়নি। সে কারণে বাতিল হয়েছে দেবাশিসের মনোনয়ন। bangla.aajtak.in-কে দেবাশিস জানিয়েছেন, এটা পুরোপুরি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। যত দ্রুত সম্ভব তিনি হাইকোর্টে মামলা করতে চলেছেন।
বলে রাখি, মঙ্গলবার বীরভূমের সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, এখনও দেবাশিসকে ছাড়পত্র তাঁর সরকার। দেবাশিস বলেছিলেন, তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ ক্যাডার। রাষ্ট্রপতির কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছিলেন। সেখান থেকে অনুমোদন এসে গিয়েছে। তবে এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে তার আঁচ পেয়েছিল বিজেপি। তাই পদ্ম-প্রতীকে মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন দেবতনু ভট্টাচার্য। ২০২১ সালে আমতায় তাঁকে টিকিট দিয়েছিল বিজেপি। সেবার হেরেছিলেন তিনি। তার আগে করতেন হিন্দু সংহতি। তাঁর মনোনয়ন গৃহীত হয়েছে। দেবতনুর মনোনয়নপত্র গৃহীত হয়েছে।
২০২১ সালের ১০ এপ্রিল বিধানসভা নির্বাচনের চতুর্থ দফায় শীতলকুচিতে গুলি চলে। ভোটের সময় কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয় ৪ জনের। কাউকে ১০ মিটার, কাউকে ২০ মিটার দূর থেকে গুলি করার অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনার পর সাসপেন্ড করা হয় তাঁকে। এই ঘটনার তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে ডেকে পাঠানো হয় ভবানীভবনেও। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আইপিএস দেবাশিস ধরের যোধপুর পার্কের বাড়িতে যান সিআইডি-র তদন্তকারী আধিকারিকরা। অস্বাভাবিক সম্পত্তি বৃদ্ধি-সহ একাধিক অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। তদন্তে নেমে একাধিক নথিও বাজেয়াপ্ত করা হয় বলে সিআইডি সূত্রে খবর। সিআইডি সূত্রে দাবি করা হয়, ২০১৫-২০১৮ সাল এই তিন বছরের মধ্যে আইপিএস দেবাশিস ধরের সম্পত্তি কয়েক গুণ বেড়েছে। আর তাতে সাহায্য করেছেন আইপিএস ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী সুদীপ্ত রায়চৌধুরী।
২০১০ সালের স্টেট পুলিশ সার্ভিসের অফিসার হন দেবাশিস ধর। পরে তিনি আইপিএস হয়েছিলেন। নির্বাচন কমিশন তাঁকে কোচবিহারের সুপার করেছিল একুশের বিধানসভা ভোটে। তবে শীতলকুচিকাণ্ডের পর সাসপেন্ড হন। তারপর অফিসার অন কম্পালসারি ওয়েটিং হিসাবে তিনি ছিলেন। পদত্যাগপত্রে তিনি ব্যক্তিগত কারণের কথা জানিয়েছিলেন। পরে তাঁকে বীরভূমের প্রার্থী করে বিজেপি।