প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, নিজেই সেকথা সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন। দল মনে করলে তিনি ভোটেও লড়বেন, সেইকথাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে নাম না করে নিশানা করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁকে ‘তালপাতার সেপাই’ কটাক্ষ করার পাশাপাশি চ্যালেঞ্জ করে জানিয়েছেন, “ডায়মন্ড হারবারে নির্বাচনে দাঁড়ালে লক্ষ লক্ষ ভোটে হারাব।” আর এর পরেই পাল্টা উত্তর দিতে ময়দানে নেমে পড়লেন কুণাল ঘোষ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নিয়ে কটাক্ষ করার পাশাপাশি সাংবাদিক বৈঠকেও প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমন শানিয়েছেন কুণাল। প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের আপাতত বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি বলা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল নেতা। প্রাক্তন বিচারপতি নিজেই নিশ্চিত তিনি এই দলে থাকতে পারবেন না, এমন কটাক্ষ করতেই শোনা যায় কুণাল ঘোষকে।
প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কেন শুভেন্দু অধিকারীর নারদে টাকা নেওয়া নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন না তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কুণাল ঘোষ। নারদের ভিডিও বিজেপিই সামনে এনেছিল। তাহলে কেন এই তদন্ত শেষ না হওয়ার আগে ক্লিনচিট দেওয়া হল তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। মুখে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বললেও আদতে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রাজনীতির ক্ষমতার জন্য এসব করছেন বলেই আক্রমণ করেন কুণাল। পাশাপাশি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এদিনের বক্তব্যে আদালত অবমাননা হয়েছে বলেও দাবি করেন তৃণমূল নেতা।
বিচারপতি থাকাকালীন রাজ্যের বিভিন্ন দুর্নীতি মামলায় এজলাসে বসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করে নানা কথা বলতে শোনা গিয়েছিল অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে। সেসব নিয়ে তৃণমূলের কুণাল ঘোষ কার্যত তাঁকে চ্যালেঞ্জ করে বলেন, ”অবসরের বেশিদিন বাকি নেই। তার আগেই আপনি স্বেচ্ছাবসর নিয়ে আসুন না রাজনৈতিক ময়দানে। তার পর দেখা যাবে।” রবিবার নিজের অবসরের কথা ঘোষণার সময়ে এসব প্রসঙ্গ টানেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর মন্তব্য ছিল, ”ক্ষমতাসীন দলের নেতারাই আমাকে বার বার চ্যালেঞ্জ করেছেন। বলেছেন, রাজনীতির ময়দানে নেমে লড়ে দেখান। তাঁরাই আমাকে এই জায়গায় আসতে বাধ্য করেছেন। আমি তাই আসছি।” তাঁর সিদ্ধান্তের পর রাজনীতির ময়দানে স্বাগত জানিয়েও খোঁচা দিতে ছাড়েননি কুণাল ঘোষ।
কুণাল ঘোষের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট করে লেখেন, ”অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, দুর্নীতির সঙ্গে আপোষ শুরু করে দিলেন? মনে রাখুন, ১) শুভেন্দুর বিরুদ্ধে নারদায় FIR করেছে আপনার প্রিয় CBI তদন্ত এড়াতেই ওর দলবদল। আপনি ক্লিন চিট দিচ্ছেন? ২) শুভেন্দু বলেছিল নারদা কেসটি ‘প্রমাণিত’ সত্য। তারপরেও আপনার এই যুক্তি? এ তো দুর্নীতিগ্রস্তকে আড়াল করার ভাষা। আপনি এসবে নেমে পড়লেন? সবটা আরেকবার ভেবে দেখুন।”