২৬ এপ্রিল দেশে তথা রাজ্যে দ্বিতীয় দফার লোকসভা নির্বাচন। আর এই দফায় ভোট রয়েছে উত্তরবঙ্গের ৩ লোকসভা কেন্দ্রে। যাদের মধ্যে অন্যতম বালুরঘাট। গতবার এই আসন থেকে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রবিবার বালুরঘাটে প্রচারে এসে প্রথম থেকেই বিজেপির প্রতি আক্রমণাত্মক ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই মমতার হুঁশিয়ারি, "কে কী পরবেন, রং পছন্দ করবেন নিজের বিষয়। কেউ ঠিক করবে না।’’
রবিবার বালুরঘাটের কুমারগঞ্জের চকরাম রায় মাঠের জনসভা থেকে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "দূরদর্শনের রং, রেল স্টেশনের রং গেরুয়া হচ্ছে কী ভাবে? আমাদের গর্ব সেনাবাহিনীর বাড়ির রং গেরুয়া হচ্ছে। যাঁরা সাধু হচ্ছেন গেরুয়া পরে, তাঁদের অপমান নয়? কাশীতে পুলিশকেও গেরুয়া পরিয়েছেন। কবে বলবে দেখবেন, সকালে গেরুয়া শরবত খেতে হবে।"
বালুরঘাটের সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধেও সুর চড়ালেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । শনিবারই শুভেন্দু বলেছিলেন, রাজনৈতিক বিস্ফোরণ হবে । এবার তারই জবাব দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । নাম না করে মমতা বলেন,'বোমা আমরা ফাটাব তোমাদের বিরুদ্ধে'।
এদিন সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'বলে বোমা ফাটাব। একটা কালিপটকা ফাটিয়ে দেখো। বোমা তোমাদের বিরুদ্ধে ফাটাব। কালো টাকা কোথায় গেল? গদ্দার জবাব দাও।' শুভেন্দুকে খোঁচা দিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, 'টাকা বাঁচাতে তৃণমূলের সব খেয়েদেয়ে এখন বিজেপিতে গিয়েছে'।
নির্বাচনী প্রচারের প্রায় প্রতিটি সভা থেকেই কেন্দ্রীয় বঞ্চনা এবং এনআরসি-সিএএ বিরোধী আওয়াজ তুলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবারের বালুরঘাটের সভাও তার ব্যক্তিক্রম নয়। এই বিষয় নিয়েই কথা বলতে গিয়ে তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, কেন বিজেপি তথা তাদের প্রার্থী সুকান্ত মজুমদারকে ভোট দেওয়া উচিত নয়। মুখ্যমন্ত্রী রবিবারের জনসভা থেকে বলেন, ‘‘৩৫০ কেন্দ্রীয় টিম পাঠিয়েছ। অনেক জ্বালিয়েছ। আমি ১০ দিন ধরে বলে যাচ্ছি শ্বেতপত্র প্রকাশ করো। বিহার, বাংলা, উত্তরপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রের এজি রিপোর্ট-সহ শ্বেতপত্র প্রকাশ করো। আমি দেখতে চাই কে চোর, আর কে সাধু।’’
বালুরঘাটের উন্নয়নের খতিয়ান দিতে গিয়ে তৃণমৃল সুপ্রিমো বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার কী করেছে, তা বলতে শুরু করে তবে দিনরাত একাকার হয়ে যাবে। একটা রামায়ণ, একটা মহাভারত, একটা কোরান, একটা বাইবেলে কুলাবে না।’’ এদিন বিসএফএফ-কেও নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বিএসএফ-এর দিকে তোপ দেগে বলেন, 'গ্রামের রাস্তা বন্ধ করে বলেছে ভোট দিতে যাবেন না', এমন প্ররোচন দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি নির্বাচনে কমিশনে জানান হচ্ছে বলেও জানান মমতা।