ব্রিগেডে সভা করে পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা ভোটের জন্য ৪২ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর তাতে উত্তর মালদা থেকে ঘাসফুল শিবিরের প্রার্থী হয়েছেন প্রাক্তন আইপিএস আধিকারিক প্রসূন বন্দ্যোপাধ্য়ায়। প্রচারও শুরু করে দিয়েছেন প্রসূন বন্দ্যোপাধ্য়ায়। টিকিন পাননি গনিখান চৌধুরির বোনের মেয়ে মৌসম বেনজির নূর। এই নিয়ে তিনি যে হতাশ তা গোপন রাখেননি মৌসম।
প্রসঙ্গত উত্তর মালদায় প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই কার্যত গায়েব ছিলেন মৌসম বেনজির নূর। দলের প্রচারেও দেখা মেলেনি তাঁর। এরপর থেকেই মাথাচাড়া দেয় মৌসমের দলবদলের জল্পনা। এবার এই নিয়ে মুখ খুললেন নেত্রী নিজেই। মৌসম জানান, ব্যক্তিগত কাজে দু’দিনের জন্য দিল্লি যেতে হয় তাঁকে। এরপর শারীরিক অসুস্থতার কারণে কলকাতার বাড়িতে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। পাশাপাশি স্বীকার করে নেন, চব্বিশের লোকসভা ভোটে তাঁর দাঁড়ানোর ইচ্ছা ছিল। তবে তৃণমূল টিকিট না দিলেও দলের হাত ছাড়বেন না।
সংবাদ মাধ্যমের সামনে মৌসমের বক্তব্য, বিজেপিকে হারাবার ইচ্ছা ছিল। উত্তর মালদা আসন থেকে দাঁড়ানোর আশা করেছিলাম। উত্তর মালদা আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো ভেবেছিলাম। সেইসঙ্গে মৌসম যোগ করেন, গতবারের নির্বাচনে একই পরিবার থেকে দুই সদস্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলাম। তাই ভোট কাটাকাটিতে হেরে গিয়েছিলাম। এবারের নির্বাচনে আশা পূরণ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রাক্তন পুলিশকর্তা প্রসূন বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে প্রার্থী করেছেন। দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে দলের একজন সৈনিক হিসাবে ওয়েলকাম জানাব। দলের একজন সৈনিক হিসাবে নির্বাচনী ময়দানে লড়াই করবো।
প্রসঙ্গত, তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতেই সামনে আসে বহু নেতা-নেত্রীর ক্ষোভের খবর! বারাকপুর থেকে প্রার্থী না করায় দলকে আক্রমণ করেন অর্জুন সিং। তৃণমূল ছেড়ে সদ্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তিনি। টিকিট না পেয়ে অভিমান হয়েছিল সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। ১০ মার্চ তৃণমূল আসন্ন লোকসভা ভোটের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর থেকেই কোতয়ালি বাড়ির সদস্য তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মৌসম বেনজির নূরের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। এই আবহেই তাঁর দলবদলের জল্পনা বাড়ছিল। টিকিট না পেয়ে অভিমানী হলেও দলবদলের জল্পনায় আপাতত জল ঢাললেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম। মৌসম জানিয়েছেন, তৃণমূল ছেড়ে অন্য দলে যোগ দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা তাঁর নেই। প্রদেশ কংগ্রেসের নেতৃত্বের তরফ থেকে একাধিকবার অনুরোধ করা হয়েছিল। হাইকমান্ড থেকেও যোগাযোগ করা হয়। তবে তাঁর তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আস্থা আছে। চব্বিশের ভোটে দল যা দায়িত্ব দেবে সেটাই পালন করবেন। ২০০৮ সালে প্রথমবার বিধায়ক হন মৌসম। ২০০৯ ও ২০১৪ সালে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে উত্তর মালদা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন মৌসম। ২০১৯ সালে তিনি লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হন। কিন্তু, বিজেপির কাছে তিনি পরাজিত হন। আপাতত তিনি তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ।