'পোষালে থাকুন। নইলে বেরিয়ে যান'। ঠিক এই ভাষাতেই কার্যত অধীর চৌধুরীকে 'সমঝে' দিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে। মমতার সঙ্গে জোট নিয়ে অধীর চৌধুরীর যে তীব্র অনীহা, সেনিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়েই এমনটা বলেন তিনি। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, যতই রাজ্যে মমতার বিরোধিতা করুক প্রদেশ কংগ্রেস, হাইকম্যান্ড কিন্তু মমতার পাশে।
ইন্ডিয়া জোটকে বাইরে থেকে সমর্থন করবেন বলে জানিয়েছিলেন মমতা। যার প্রেক্ষিতে অধীর চৌধুরী বলেছিলেন,'আগামী দিনে বিজেপিকেও সমর্থন করতে পারেন মমতা'। অধীরের এই মন্তব্য নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে মল্লিকার্জুন খাড়গের বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়। খাড়গে সাফ জানান,'মমতাজি প্রথমে বলেছিলেন বাইরে থেকে সমর্থন করবেন। এর আগেও একাধিক দল বাইরে থেকে সমর্থন করেছে। ২০০৪ সালে ইউপিএ সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন করেছিল বামেরা। কিন্তু অতিসম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন, ইন্ডিয়া জোট সরকারে এলে তিনি শামিল হবেন। ফলে এটা স্পষ্ট তিনি আমাদের সঙ্গে আছেন'।
সেই সঙ্গে খাড়গে আরও বলেন,'অধীররঞ্জন চৌধুরী সিদ্ধান্ত নেওয়ার কেউ নন। সিদ্ধান্ত আমরা নিই। কংগ্রেস দল এবং হাইকম্যান্ড সিদ্ধান্ত নেয়। আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব, সেটাই মেনে চলতে হবে'। কিন্তু অধীরের বক্তব্যের সঙ্গে পার্টি লাইনের মিল হচ্ছে না কেন? খাড়গে বলেন,'হাইকম্যান্ড আমরা। আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব, সেটা মেনে চলতে হবে। কারও না পোষালে বাইরে যেতে পারেন।
খাড়গের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে অধীর বলেন,'আমার বিরোধিতা নৈতিক। কংগ্রেসকে যে খতম করবে আমি তাঁকে খাতির করতে পারি না! এ লড়াই আমি কোনওভাবে থামাতে পারি না'।
'ইন্ডিয়া' নিয়ে মমতা কী বলেছিলেন
ভোটের প্রচারে বুধবার মমতা বলেছিলেন,'ইন্ডিয়াকে নেতৃত্ব দিয়ে বাইরে থেকে সব রকম সাহায্য করে আমরা সরকার গঠন করে দেব। যাতে বাংলায় আমার মা-বোনেদের ১০০ দিনের কাজে কোনও দিন অসুবিধা না-হয়।' যার ২৪ ঘণ্টা পরে মমতা ব্যাখ্যা করেন,'সর্বভারতীয় স্তরে আমরা বিরোধী জোট ইন্ডিয়া তৈরি করেছিলাম। আমরা জোটে থাকব। অনেকে আমায় ভুল বুঝেছে। আমি ওই জোটে আছি। আমিই ওই জোট তৈরি করেছি। আমি জোটে থাকবও। এখানকার সিপিএম নেই আর কংগ্রেস নেই। কিন্তু সর্বভারতীয় স্তরে আমরা জোটে থাকব। ভুল বোঝাবুঝির কোনও জায়গা নেই। ভুল খবর ছড়িয়েছে। এতে বিভ্রান্তি হচ্ছে'।
অধীরের প্রতিক্রিয়া
অধীর বলেছিলেন,'ভিতর-বাইরে কী করবেন, সেটা ওনাকে জিজ্ঞেস করুন। আমি ওঁকে ভরসা করি না। জোট ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। ওঁর কথার কোনও দাম নেই। বিজেপির পাল্লা ভারী হলে তিনি চলে যেতে পারেন। জোট ভেঙেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উনি বলেছিলেন, কংগ্রেস সারা দেশে ৪০টি আসনও পাবে না। এখন বুঝেছেন, কংগ্রেসের জোট সরকার ক্ষমতায় আসছে, তাই এদিকে আসার চেষ্টা করছেন'।