'সুযোগ থাকলে জিভটা কেড়ে নিতাম...,' মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির জনসভা থেকে হুঙ্কার দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চালসা যাওয়ার সময়ে তাঁর গাড়ি দেখে বিরোধীরা 'চোর চোর' আওয়াজ তোলেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। তার প্রেক্ষিতেই মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, 'ক'দিন আগে আমি চালসায় আসছিলাম। আমার গাড়িটা দেখে ওরা চোর-চোর স্লোগান দিচ্ছে। আমি ইচ্ছা করলে মাসে দেড় লক্ষ টাকার উপর পেনশন পেতে পারি। আমি এক টাকা বেতন নিই না। আমি চাইলে লক্ষাধিক টাকার উপর বেতন নিতে পারি। কিন্তু আমি নিই না....।'
এরপরেই তিনি বলেন, 'সুযোগ থাকলে জিভটা আমি কেড়ে নিতাম। ইলেকশন আছে বলে করলাম না। তবে আমি ইলেকশন না থাকলেও করতাম না। কারণ ওটা বিজেপি বলে, চুনচুনকে... আমরা জিভ কেড়ে নেব না। কারণ ওটা আমাদের কাজ নয়।'
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'আপনারা বারবার বিজেপি-কে ভোট দিয়ে দিচ্ছেন। জঙ্গলমহল, উত্তরবঙ্গের মানুষরা। তারপর বলছেন বিজেপি আমাদের কাজের টাকা বন্ধ করে দিচ্ছেন। বিজেপি বাংলাকে টাকা দিচ্ছে না, বলছে বাংলার ১০০ দিনের কাজ, ঘর, রাস্তার টাকা দেবেন না। আমি বলি, ভোটের বাক্সে আপনার অধিকার আছে, বিজেপিকে বন্ধ করে দিন।'
জলপাইগুড়ির সভায় এদিন ফের বিজেপির বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থার ব্যবহারের অভিযোগ তোলেন মমতা। তিনি বলেন, 'কথায় কথায় বলছে কাজ নেই। বিজেপি-তে কারা যাচ্ছে, যার অনেক টাকা, পাছে সিবিআই, IT, ED ধরে। বিজেপি-সিবিআই ভাইভাই।'
শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও খোঁচা দেন মমতা। তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী এলেন কোচবিহারে মিটিং করতে, কই ময়নাগুড়ি, জলপাইগুড়ির দুঃখের কথা বললেন না।'
ওড়িশায় যাত্রীবাহি বাস দুর্ঘটনা নিয়েও এদিন দুঃখপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'আজ সকালে আমায় ১ ঘণ্টা একটা কাজ করতে হয়েছে। আজ একটি বাস যাচ্ছিল পুরীতে। বাসটা পড়ে গিয়েছে। ৪ জন আহত। অনেকে আহত। আমি দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুকে পাঠিয়ে দিলাম সেখানে। একটা অ্যাক্সিডেন্ট হলে পর্যন্ত আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিই।'
কড়া সমালোচনার সুরে মমতা বলেন, 'মোদী সরকার থাকলে আগামিদিনে ভারতে আর নির্বাচন থাকবে না, ওয়ান ম্যান ওয়ান পার্টি, ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশন হয়ে যাবে। এনআরসি করে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেবে। আমি কাল অসমে যাব, ওখানে ৪টি সিটে লড়ছি।'
জোট সমীকরণ নিয়েও এদিন ফের বার্তা দেন মমতা। তিনি বলেন, 'বাংলায় কোনও জোট নেই। তৃণমূল INDIA জোটে আছে দিল্লিতে। সিপিএম এখানে বিজেপি করে, কংগ্রেস এখানে বিজেপি করে, তৃণমূলের ভোট কাটবার জন্য দালালি করে। আর তৃণমূলকে বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে লড়তে হয়। ইডি, সিবিআই, CAA, UCC-র বিরুদ্ধে লড়তে হয়।'