ভোটের হার বেড়ে যাওয়া নিয়ে সন্দেশ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ মালদা দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী শাহনওয়াজ আলি রেইহানের সমর্থনে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কায় জনসভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সভা থেকেই তিনি ইভিএম নিয়ে নিজের আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন। মঙ্গলবার প্রথম দুই দফার ভোটের হার প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। ভোটের পর কমিশন সূত্রে যে হিসাব পাওয়া গিয়েছিল, মঙ্গলবার দেখা যায় তার চেয়ে বেশি ভোট বেড়েছে। আর তা নিয়েই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'নির্বাচন আসলেই নানারকম মিথ্যা কথা শুরু হয়ে যায়। যেদিন প্রথম দফা ও দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ হল, কমিশনের সূত্র ধরেই সব সংবাদমাধ্যমে লিখেছে কোথায় কত শতাংশ ভোট পড়েছে। নির্বাচন কমিশনও সেটা জানিয়েছে। আমি গতকাল রাত্রে সাড়ে ৯টার সময় শুনতে পেলাম ৫.৭৫ শতাংশ ভোট বাড়িয়ে দিয়েছে। যেখানে যেখানে বিজেপির ভোট কম পড়েছে সেসব জায়গায় বাড়িয়ে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন একটা নোটিশ জারি করেছে। আমি বলব নাগরিকদের সন্দেশ দূর করার জন্য ইভিএম মেশিন কারা তৈরি করেছে, মেশিনের চিপ কারা তৈরি করেছে, ভোটের হার বাড়ল কী করে, প্রথম দফায় কী ছিল, দ্বিতীয় দফায় কী ছিল, কত ভোটার ছিল? সেটা আমরা জানতে চাই। হঠাৎ করে বেড়ে গেল, ১৯ লক্ষ মেশিন মিসিং আছে অনেকদিন ধরে। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি লোকের ভোট পাল্টে দিয়ে নিজেদের মেশিন ঢুকিয়ে দিচ্ছে।'
এরপরেই মমতা বলেন, 'এটা আমার সন্দেহ, এই সন্দেহ যাতে নাগরিকদের মনে না আসে, তাই নির্বাচন কমিশন সন্দেহ দূর করুক। বিজেপির কমিশন হয়ে বসে থেকে কোনও লাভ নেই। নিরপেক্ষ কমিশন হয়ে কাজ করতে দেখতে চায় ভারতের জনগণ। তাই আসল সত্যিটা কী তা জানাতে হবে মানুষকে। যাতে প্রতারণা না করা হয়। ইলেকশনেও চিটিং?'
প্রচণ্ড গরমে ভোট করা নিয়েও তিনি কমিশনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, 'গরম লু বইছে বাইরে। তার মধ্যেি কাতারে কাতারে মানুষ উপস্থিত হয়েছেন। আমার নিজেরই লজ্জা লাগছে। যে এই গরমের মধ্যে এত মানুষকে কষ্ট করে জেরে এনে আমাদের নির্বাচনের কথা বলতে হচ্ছে। আসলে এটা তো আমাদের হাতে থাকে না। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন ঘোষণা করে। আমরা ফেব্রুয়ারির মধ্যেই মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, মাদ্রাসা, হাই মাদ্রাসা পরীক্ষা করে দিয়েছিলাম। যাতে এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনটা করা যায়। ১ জুন পর্যন্ত নির্বাচন চলবে। আমি গত ৩১ অগাস্ট থেকে বাইরে আছি। এক মাস হয়ে গেল। আরও এক মাস প্রচার চালাতে হবে। শুধু বিজেপিকে সন্তুষ্ট করার জন্য, আমি দুঃখের সঙ্গে বলছি নির্বাচন কমিশন মানুষের কথা একটু ভেবে দেখতে পারে।'