২০১৪ সালের জেতা আসন ঝাড়গ্রাম। ২০১৯ সালের ভোটে হাতছাড়া হয় তৃণমূলের। গোপীবল্লভপুরের জনসভায় সে কথাই মনে করিয়ে মমতা দাবি করলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে ভরসা করে ভোট দিয়েছেন ঝাড়গ্রামের মানুষ। তার পর কিছুই করেনি বিজেপি।
এ দিন তৃণমূল নেত্রী বলেন,'এটা দিল্লির নির্বাচন। আমাদের সাংসদ ছিলেন একবার (ঝাড়গ্রাম)। আগেরবার বিজেপির সাংসদ হল। পুরো মিথ্যা কথার উপর ভরসা করে প্রধানমন্ত্রী এসে একটা ভাষণ দিয়ে গেলেন। ঝাড়গ্রামে মানুষ ভাবলেন আহারে একবার প্রধানমন্ত্রী এসেছেন ভোট দিয়ে দিই। তারপর কিছু করেছে? যিনি জিতেছেন তিনি কিছু করেছেন? যাঁকে ভোট দিয়েছেন তাঁকে ক'বার দেখেছেন?'
জঙ্গলমহলের সঙ্গে তাঁর অতীতের সম্পর্কের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন মমতা। বলেন,'জঙ্গলমহলে যাঁর হাত ধরে ঢুকি, তাঁর নাম ছত্রধর মাহাতো। মনে আছে, লালগড়ে চিতামণি নামে বয়স্ক মহিলার কান কেটে দেওয়া হয়েছিল। তিনজন গুলিতে মারা গিয়েছিল। সিপিএমের হার্মাদরা মেরেছিল। ২০০৮ সালে ছত্রধর তৃণমূল কংগ্রেস করত। সেই মৃতদেহগুলি নিয়ে মেদিনীপুর চৌরাস্তায় গেলাম। ওখানে ৪-৫ ঘণ্টা ধরে প্রতিবাদ হল। তার পর মৃতদেহগুলি নিয়ে আমরা তাঁদের গ্রামে গেলাম। সেই থেকে আমার জঙ্গলমহলে আসা'।
মমতা যোগ করেন,'তখন লালগড় কেউ যেত না। পীরাকাটার জঙ্গল পেরিয়ে আমি যেতাম। অনেকবার আমার গাড়ি আটকেছে। গোপীবল্লভপুর আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। জঙ্গলমহল আমি অন্যদের চেয়ে বেশি বুঝি। জেতার পর নয়াগ্রামে সভা করেছিলাম। আমি হোমগার্ডের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। সেই কথা রেখেছি'।
ঝাড়গ্রামে কী কী উন্নয়ন করেছেন, তার ফিরিস্তও দিয়েছেন মমতা। বলেন,'জঙ্গলকন্যা সেতু, লালগড়ে সেতু করে দিয়েছি। ২০১৭ সালের এপ্রিলে আমরা নতুন জেলা করেছি। মেডিক্যাল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মাল্টিসুপার হাসপাতাল করে দিয়েছি! কী করিনি বলুন তো! আর্চারি অ্যাকাডেমি করেছি। আজ আমি গর্বিত। বড় বড় পদে চাকরি হচ্ছে এখানকার মানুষদের। সাঁওতালি ভাষা অলচিকি-কে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। অনেক সাঁওতালি স্কুল তৈরি হয়েছে'।