উত্তর কলকাতায় তৃণমূল প্রার্থী কে হবেন? গত কয়েকদিন ধরেই প্রকাশ্যেই তৃণমূলের অন্দরে চলছিল বিতর্ক। সেই বিতর্কের জবাবই সম্ভবত বৃহস্পতিবার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিলেন, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর তাঁর আস্থা এখনও অটুট। আর সুদীপের বিরোধী, অধুনা বিজেপি নেতা তাপস রায় যে কেন্দ্রীয় এজেন্সির ভয়ে দলবদল করেছেন, তাও নাম না করে বলে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।
উত্তর কলকাতায় সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাপস রায়ের 'মধুর' সম্পর্ক সর্বজনবিদিত। শোনা যাচ্ছে, উত্তর কলকাতার তৃণমূল সাংসদ হতে চেয়েছিলেন তাপস রায়। কিন্তু তাঁকে দল টিকিট দিতে চায়নি। তার পরই তিনি দলত্যাগ করবেন বলে মনস্থির করেন। এ দিন নাম না করে সেই তাপসকে আক্রমণ করেছেন মমতা। তাপসের বাড়িতে ইডি হানার প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূল নেত্রীর দাবি, এজেন্সির ভয়েই বিজেপিতে গিয়েছেন। তিনি বলেন,'এখন তো এজেন্সিগুলোকে পকেটে পুরে নিয়েছে। তৃণমূলে থাকলে চোর, আর বিজেপিতে গেলে ওয়াশিং পাউডার... কী যেন বলে.. ওয়াশিং মেশিন ভাজপা। কেউ কেউ তো ভয়ে চলে যাচ্ছে। বাবাহ! ইডি ধরেছে। একদিন বাড়ি গিয়েছে যদি আবার যায়! তাঁকে ফোন করে গদ্দাররা বলে দিচ্ছে, ইডির লোকেরা বলছে, বিজেপিতে চলা যাও, হো যায়েগা।'
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যোগ নিয়ে আক্রমণ করেছিলেন তাপস রায়। অতিসম্প্রতি সুদীপকে সরাসরি নিশানা করেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষও। বড় শাহজাহান বলে কটাক্ষও করেছেন। কিন্তু দলনেত্রী উত্তর কলকাতায় যে সুদীপকেই ভাবছেন, সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন সভা শেষে। বৃহস্পতিবার কলেজ স্কোয়্যার থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত মিছিল করে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস। সেই মিছিলের শেষে সভামঞ্চে মমতা বলেন,'সুদীপদা ও নয়নাকে বিশেষ করে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই অনুষ্ঠান আয়োজনে তাঁদের ভূমিকার জন্য...'।
নাম না করে কুণাল অভিযোগ করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্যে রোজভ্যালি কেলেঙ্কারি থেকে মুক্তি পেয়েছেন সুদীপ। রোজভ্যালি কাণ্ডে সুদীপকে গ্রেফতার করার দাবি করে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন কুণাল। উত্তর কলকাতায় মহিলা কাউকে দলের প্রার্থী করার প্রস্তাবও দিয়েছেন। কুণাল নাম নিয়েছেন শশী পাঁজার। ইতিমধ্যেই তাপস রায় দল ছেড়েছেন। আর কুণাল ঘোঁসা করে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্রের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। ইতিমধ্যে সুদীপের বাড়ি গিয়ে ফিশফ্রাই, জলভরা খেয়ে আপাতত বিতণ্ডায় জল ঢেলেছেন কুণাল। রাজনৈতিক মহলের মতে, সুদীপকে নিয়ে তৃণমূলের একটা অংশে আপত্তি থাকলেও মমতার ভরসার পাত্র এখনও তিনি। ধন্যবাদজ্ঞাপনেই তা স্পষ্ট হয়েছে।