শনিবার, ৯ মার্চ শিলিগুড়িতে 'বিজয় সংকল্প' জনসভা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। এদিন দুপুর ৩টে নাগাদ বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। কাওয়াখালি ময়দানের জনসভায় আজ থাকছেন প্রাক্তন বিচারপতি ও সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও। শিলিগুড়ির মঞ্চ থেকে এদিন সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসও করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভোট ঘোষণার আগে বাংলায় ৯ দিনে ৪ সভা করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
'উত্তরবঙ্গের প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্রে পদ্ম ফোটা চাই'
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপিকে ভোটের আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
'আমাকে কারও জন্য ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স রেখে যেতে হবে না'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমাকে কারও জন্য ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স রেখে যেতে হবে না। বাংলো-গাড়ি রেখে যেতে হবে না। আপনাদের মতো পরিবারদের পাকা বাড়িতে, আনন্দে বাঁচতে দেখাতেই আমার সন্তুষ্টি।'
'তৃণমূল ভাবে ভাইপোর কথা, কংগ্রেস ভাবে পরিবারের কথা'
পরিবারবাদ ইস্যুতে ফের বিরোধী জোটকে খোঁচা প্রধানমন্ত্রীর। তিনি বলেন, 'তৃণমূল ভাবে ভাইপোর কথা, কংগ্রেস ভাবে পরিবারের কথা। সিপিএম ভাবে কীভাবে এদের দু'জনের সঙ্গে ভারসাম্য রেখে চলতে হবে। ইন্ডি জোটের কারও আপনার পরিবারের, সন্তানের ভবিষ্যতের চিন্তা নেই। তারা নিজেদের পরিবারবাদ রক্ষা করতেই ব্যস্ত। আপনার সন্তানের চিন্তা NDA সরকার করে। আর সেই কারণেই আজ গোটা দেশ বলছে, 'ম্যা হুঁ মোদীকা পরিবার।'
'চা চাষের জন্য় উত্তরবঙ্গ প্রসিদ্ধ'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অল্প স্থানের মধ্যে বেশি চা চাষের জন্য় উত্তরবঙ্গ প্রসিদ্ধ। তিনি বলেন, চা-বাগানের শ্রমিক এবং চা-চাষিদের জন্য বিজেপি সরকার বহু কাজ করেছে। এর মাধ্যমেই প্রায় ২৫ হাজার মানুষ দারিদ্র কাটিয়ে উঠেছে। কিন্তু পরিবারপন্থিরা আপনাদের হাতে সমস্ত প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছাতে দেয় না।
সন্দেশখালি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী:
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, 'সন্দেশখালির গরিব আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে তৃণমূল নেতারা কী কী করেছেন তার চর্চা আজ দেশজুড়ে। মহিলাদের উপর অত্যাচার ও গরিবের টাকা লুট করাই তৃণমূলের কাজ।'
১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, 'কেন্দ্র MNRGA-র কাজের টাকা পাঠায়। কিন্তু টিএমসি সরকার ২৫ লক্ষ নকল জব কার্ড তৈরি করে সেই টাকা লুটে নেয়।'
'তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা রেশন দুর্নীতিতে জেলে'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বাংলায় ভ্রষ্ট, দুর্নীতিগ্রস্থ তৃণমূল সরকার আপনাদের রেশনেও কেলেঙ্কারি করলেন। তাঁদের নেতা-মন্ত্রীরা রেশন কেলেঙ্কারিতে জেলে। ভ্রষ্ট, দুর্নীতিগ্রস্ত টিএমসি সরকার এখানে আয়ুষ্মান প্রকল্প লাগু হতে দেয়নি।'
বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমার প্রিয় মা ভাই দাদা এবং দিদি ও বোনেদের সাদর অভিনন্দন জানাই। আমি যখনই উত্তরবঙ্গে এসেছি, এখানকার মানুষের অনেক ভালবাসা পেয়েছি।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি যে ধরনের জীবন কাটিয়ে এখানে এসেছি, তাতে আমি মায়েদের ছোট ছোট জিনিসের জন্য অনেক লড়াই করতে দেখেছি। আর সেই কারণেই শৌচালয়, ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট, গর্ভকালীন আর্থিক সহায়তার মতো জিনিসে এত জোর দেওয়া হয়। আর এখানে তো চাবাগানের স্থান। এখানে জল ও জ্বালানির জন্য এখানে বোনেদের অনেক কষ্ট পেতে হত। আগে বামেরা আপনাদের কথা শোনেননি। কিন্তু তৃণমূলও আপনাদের কথা শোনেনি। তারা তো গরিবের জমি লুটতে ব্যস্ত ছিল। কিন্তু আপনারা যখন আমাকে বললেন, আমি তখনই আপনাদের কাছে পৌঁছে গেলাম।'
শিলিগুড়ির সভামঞ্চে অভিজিতের সঙ্গে হাত মেলালেন মোদী
শিলিগুড়ির সভামঞ্চে পৌঁছেই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাত মেলালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দুজনকে হাসিমুখে পরস্পরকে অভিবাদন জানাতে দেখা যায়। এরপর টয় ট্রেনের মডেল, ছবির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান বিজেপি নেতৃত্ব।
রেলের একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ও চায়ের জন্য প্রসিদ্ধ এই উত্তরবঙ্গে আসাটা আমার জন্য সৌভাগ্যের। আজ প্রায় ১০,০০০ কোটি টাকার প্রকল্পের সূচনা হল। বাংলা, বিশেষত উত্তরবঙ্গে গত ১০ বছরে আমাদের সরকারের অগ্রাধিকার ছিল।'
এদিন একাধিক রেল সংক্রান্ত প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। একলাখি— বালুরঘাট বিভাগ, বারসোই— রাধিকাপুর বিভাগ, রানিনগর জলপাইগুড়ি— হলদিবাড়ি বিভাগ, শিলিগুড়ি— আলুয়াবাড়ি বিভাগ ভায়া বাগডোগরা, শিলিগুড়ি— সেবক— আলিপুরদুয়ার জংশন— সামুকতলা (আলিপুর দুয়ার জংশন— নিউ কোচ বিহার) বিভাগের সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
এর পাশাপাশি শিলিগুড়ি থেকে রাধিকাপুর পর্যন্ত নতুন প্যাসেঞ্জার ট্রেন পরিষেবার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
কাওয়াখালির সভামঞ্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
বিমানবন্দর থেকে সড়কপথে কাওয়াখালির সভামঞ্চে পৌঁছে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সঙ্গে মঞ্চে রয়েছেন বিজেপির নেতা-সাংসদরা।
নোট ভোট টু তৃণমূল: অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গে অভিজিৎ বলেন, 'আমাদের ৪২ আসনের মধ্যে ৪২ আসনই দখল করতে হবে। যাতে তৃণমূল বাংলা থেকে মুছে যায়। আমরা খবর পাচ্ছি, তৃণমূল ভেতরে ভেতরে ভাঙছে। অনেকেই দল ছাড়তে চাইছেন। সিবিআই ও ইডি এই দলের নেতাদের ধাওয়া করেছে। ভাল নেতারাও বেরিয়ে যাচ্ছেন। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে শপথ নিন এই দুর্বত্তদের একটা ভোটও দেওয়া যাবে না। তারা নারী নির্যাতন করে। সন্দেশখালির ঘটনা সবাই জানেন। আমাদের শপথ নিতে হবে। এই লোকসভা নির্বাচন থেকে উদ্যোগ নিতে হবে। নোট ভোট টু তৃণমূল, তৃণমূলকে একটা ভোটও নয়।'
আবাস যোজনার টাকা চুরি করা হয়েছে: অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
অভিজিৎ বলেন, 'খাদ্য দুর্নীতিতে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জেলে আছেন। শিক্ষা দুর্নীতিতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী জেলে আছেন। আবাস যোজনার টাকা চুরি করা হয়েছে। ৫০ হাজার টাকার মধ্যে ২৫ হাজার টাকা নিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই দুর্বত্তদের চোখের সামনে দেখেছেন। আগামী নির্বাচনে এই দুষ্কৃতীদের দলকে শিক্ষা দিতেই হবে। তাদের বাংলার ক্ষমতা থেকে উৎক্ষাত করতে হবে। বুঝিয়ে দিতে হবে যে তাদের মেয়াদ শেষ। তাদের বোঝাতে হবে যে দুর্নীতির মূল্য চোখাতেই হবে।'
শুরুতেই বক্তব্য রাখলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ইস্যুতে সোচ্চার অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'বহু চাকরিপ্রার্থী যাঁরা অনেক বেশি নম্বর পেয়েছেন, তাঁদের চাকরি দেওয়া হয়নি। যাঁরা অনেক নম্বর পেয়ে বেশ কিছু টাকা দিয়েছেন, তাঁদের চাকরি দেওয়া হয়েছে।' তিনি বলেন, 'এই দুর্বত্তরা নিজেদের পকেটে টাকা ঢুকিয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থাটাকে শেষ করে দিয়েছে।'