'জেলে ওঁকে মেরে ফেলার চক্রান্ত হচ্ছে,' দাবি অরবিন্দ কেজরিওয়ালের স্ত্রী সুনীতা কেজরিওয়ালের। রবিবার রাঁচিতে INDIA ব্লকের একটি মেগা সমাবেশ ছিল। সেই সভা থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন সুনীতা কেজরিওয়াল। তিনি বলেন, 'ওরা মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালকে হত্যা করতে চাইছে, তাঁকে ওষুধের সঠিক ডোজ দেওয়া হচ্ছে না।' সুনীতা কেজরিওয়াল বলেন, 'আমার প্রশ্ন, আমার স্বামী কী ভুল করেছেন? কেন তাঁকে জেলে পাঠানো হলো? দিল্লির জন্য সেরা পারফরম্যান্স দিয়েছেন তিনি। জেলের তালা ভেঙে কেজরিওয়ালকে মুক্ত হবেন।'
সুনিতা কেজরিওয়াল বলেন, 'অরবিন্দজি IRS-এর চাকরি পেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর ঝোঁক ছিল সমাজসেবার প্রতি। ২০০৬ সালে চাকরি ছেড়ে সমাজসেবা শুরু করেছিলেন। ২০১১ সালে আন্দোলন হয়েছিল। সেই আন্দোলনের কথা আপনারা সবাই জানেন। জনগণের অধিকারের জন্য দু'বার দীর্ঘ অনশন করেছেন। উনি ডায়াবেটিস রোগী, চিকিৎসকরা তাঁকে এমনটা না করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি রাজি হননি এবং নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিলেন। তিনি নিজের নীতিতে অটল। যখন তিনি প্রথমবারের মতো দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হন, তার ৪৯ দিনের মধ্যে পদত্যাগ করেন। ক্ষমতার প্রতি তাঁর কোনও আসক্তি নেই। তিনি শুধুই দেশের সেবা করতে চান।'
আম আদমি পার্টির নেতা এবং রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিং বলেন, 'আমি দলিতদের সবচেয়ে বড় নেতা শিবু সোরেনের সামনে মাথা নত করছি। এখানে দু'জন সাহসী মহিলা রয়েছেন। কল্পনা সোরেন ও সুনীতা কেজরিওয়াল।' তিনি বলেন, 'তেজস্বী যাদব যেভাবে বিজেপি এবং অন্যান্য দলের নেতাদের বিরদ্ধে লড়াই করছেন, তার জন্য আমি তাঁকে অভিনন্দন জানাই। আমরা এখানে হেমন্ত সোরেন এবং অরবিন্দ কেজরিওয়ালের জন্য এসেছি। আমরা প্রধানমন্ত্রী মোদীকে একটি বার্তা দিতে চাই যে, গোটা আদিবাসী সমাজ আপনার বিরুদ্ধে।' সঞ্জয় সিং বলেন, 'বিজেপি আম্বেদকরের সংবিধানে বিশ্বাস করে না, নাগপুরের সংবিধানে বিশ্বাস করে। সংবিধান বাঁচাতে লড়াই করতে হবে। বিজেপি বলছে আমাদের ৪০০ আসন দাও, আমাদের সংবিধান বদলাতে হবে।' তিনি বলেন, 'স্বৈরাচারী শাসকের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গোটা দেশ, সমগ্র INDIA ব্লক একসঙ্গে দাঁড়িয়েছে। আমরা আমাদের দেশ ও সংবিধান বাঁচাতে লড়াই করছি।'
আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব বলেন, 'আমি মানুষের সুনামি দেখছি। এর মানে এটাই যে, ঝাড়খণ্ড বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।' তিনি বলেন, 'আমরা এখানে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সম্পর্কে কথা বলতে আসিনি, শিক্ষা এবং চাকরির মতো গুরুতর বিষয় নিয়ে কথা বলতে এসেছি। আমাদের বিশ্বাস, আমরা সবার জীবনে উন্নতি আনতে পারব। আমরা আমাদের নেতা হেমন্ত সোরেন এবং অরবিন্দ কেজরিওয়ালের জন্য দু'টি আসন খালি রেখেছি।'
সমাবেশে, ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের স্ত্রী কল্পনা সোরেন বলেন, 'হেমন্তজি জেল থেকে বার্তা দিয়েছেন যে, আমরা সংবিধানকে ধ্বংস হতে দেব না। জনসাধারণ এনডিএকে দু'বার নির্বাচিত করেছে, রাজ্যে এনডিএকে জায়গা দেয়নি। কিন্তু এনডিএ এই রাজ্যগুলি দখল করতে চায়। কোথাও বিধায়কদের কেনা হয়, কোথাও নেতাদের গ্রেফতার করা হয়। তিনি প্রায় আড়াই মাস ধরে কারাগারে রয়েছেন। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে, নির্বাচনের আগে নেতা ও মুখ্যমন্ত্রীদের জেলে রাখা হচ্ছে।'
কল্পনা বলেন, 'বিরোধীদের মুখ বন্ধ করার জন্য এজেন্সি ব্যবহার করা হচ্ছে। হেমন্তজি লিখেছেন, বিজেপি যেভাবে আইন তৈরি করছে, তাতে আদিবাসীরা সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হবে। মণিপুর দেখ, জ্বলছে। উপজাতির মহিলাদের ছিনতাই করা হচ্ছে, আমাদের ঝাড়খণ্ডকে বাঁচাতে হবে।'