হুগলি কেন্দ্রে এবারের লড়াই দুই হেভিওয়েটের মধ্যে। একদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিদায়ী সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্য়ায়। দুজনই প্রচারে ব্যস্ত। টলিউডে দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করলেও এখন তাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বী। তবে ভোট প্রচারে বেরিয়ে রচনা জানালেন, তাঁর জীবনে নতুন করে আর কিছু পাওয়ার নেই।
আজ মঙ্গলবার চতুর্থদিনের প্রচারে নামেন রচনা। চন্দননগরে প্রচারে তাঁর সঙ্গী ছিলেন গায়ক-বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেন। 'আমার জীবনে আর কিছু পাওয়ার নেই। এ বার মানুষের জন্য কিছু করতে চাই।' জানান তিনি। এদিন রচনা বেড়াইচণ্ডী মন্দিরে পুজো দেন। তারপর প্রচারে নামেন। সেখানেই রচনা বলেন, 'আমি নাম করে নিয়েছি। খ্যতি আছে। এখন যদি জীবনের শেষ পনেরো কুড়িটা বছর মানুষের জন্য কিছু করতে পারি তাহলে আমি খুশি হব। জীবনে আমার আর কিছু পাওয়ার নেই। আমি দিদি নম্বর এক হতেই হুগলিতে এসেছি। মানুষের প্রতি আস্থা বিশ্বাস আছে তাই বলছি আমি জিতব।'
নির্বাচনী বিধি চালু হওয়ায় অনেকের মনেই প্রশ্ন, ভোট পর্যন্ত রচনা কি তাহলে দিদি নম্বর ওয়ান শো আর করতে পারবেন না? উত্তরে রচনা জানান, 'এটা নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই। বেসরকারি টেলিভিসনে চ্যানেলে অনুষ্ঠান করা যাবে না। এটা কে বলেছে?'
প্রচারে পিছিয়ে নেই বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়ও। রাজহাট পঞ্চায়েত এলাকায় ভোটের প্রচার সারেন তিনি। ওলাবিবিতলায় প্রার্থনা করেন লকেট। তারপর গ্রামে গ্রামে ঘুরতে শুরু করেন। গ্রামবাসীর সঙ্গে ছবিও তোলেন।
প্রসঙ্গত, ভোট প্রচারের প্রথম দিন থেকেই লকেট চট্টোপাধ্যায় ও রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় দুজনেই দাবি করে আসছেন, তাঁরা জয়ের বিষয়ে আশাবাদী। এর আগে রচনা বলেছিলেন, 'দিদি আমাকে হুগলিতে পাঠিয়েছেন, আমার ওপর ভরসা রেখেছেন, তার জন্য আমি মুখ্যমন্ত্রী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কৃতজ্ঞ। আমি চেষ্টা করব দিদি যে আমার ওপর ভরসা করেছেন তা জান-প্রাণ দিয়ে রাখতে। আজ আমি এখানে এসেছি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে। আমরা দেখিয়ে দেব ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে কীভাবে জিততে হয়।'
এর আগে লকেট চট্টোপাধ্যায়ও একই দাবি করেছিলেন। তবে ভদ্রেশ্বরে তাঁকে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। করোনার সময় কোথায় ছিলেন? এই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় লকেটকে। তখন লকেট বলেন, 'শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। শ্রমিকরা রাস্তায় বসে রয়েছে। না জানিয়ে চুক্তি করা হয়েছে।' রচনা তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও তাঁরা যে ভালো বন্ধু সেটাও স্বীকার করে নেন লকেট। রচনাকে কটাক্ষ করে বলেন, 'উনি তৃণমূলে নতুন এসেছেন জানেন না। যত থাকবেন তত বুঝতে পারবেন ৷ যে তিনি কোন দলে এসেছেন ৷ রচনা আমার খুব ভালো বন্ধু ৷ উনি আস্তে আস্তে জানতে পারবেন ৷'
লকেটের প্রতি সৌজন্য দেখিয়েছিলেন রচনাও। তিনি বলেছিলেন, 'আমরা জয় নিয়ে একশো শতাংশ নিশ্চিত। হুগলির মানুষের উপর ভরসা আছে, দিদির উপর ভরসা আছে, আমরা জিতব। লকেটের সঙ্গে দেখা হলে ওনাকেও নমস্কার করব।'