এনডিএ সরকারের আয়ু বেশিদিন নয়। কালীঘাটে দলের বৈঠকের পর কার্যত এটাই বোঝাতে চাইলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন,'অগণতান্ত্রিকভাবে সরকার গঠন করছে, তাই অভিনন্দন জানাতে পারব না। ১৫ দিনও এই সরকার চলতে না পারবে হয়তো'। মমতার মতে,'যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই বর্বর সরকার ঘরে ফিরে যাক। ভারতে চালাবে ইন্ডিয়া'।
এ দিন মমতা বলেন,'এটা কেউ ভাববেন ইন্ডিয়া আজকে সরকার গঠনের দাবি করেনি বলে কাল করবে না। আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি'। সেই সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়া উচিত ছিল বলেও মনে করেন মমতা। তাঁর কথায়,'দেশ বদল চাইছে। এত বড় হারের পর মোদীবাবুর উচিত ছিল অন্য কাউকে ছেড়ে দেওয়া'। তাঁর সংযোজন,'ওঁর জায়গায় আমি থাকলে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে সরকার গঠন করতাম না। আমি বলেছিলাম, চারশো তো দূর, দুশোও পার করবে না। নির্বাচনের পর ভোট বেড়ে গিয়েছিল। নির্বাচন কমিশনের কাছে কোনও ব্যাখ্যা পাইনি'।
কেন এনডিএ সরকার কেন বেশিদিন টিকবে না, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মমতা। তাঁর মন্তব্য,'নতুন সরকার শেষপর্যন্ত ইন্ডিয়ার হবে। কিন্তু যে ক'টা দিন থাকে! দেখতে দিন কাকে কতটা সন্তুষ্ট রাখতে পারে? এনডিএ-তে চাওয়া বেশি। ইন্ডিয়া মঞ্চের কোনও চাওয়া নেই। আমরা মানুষের ভালো চাই। তাই অপেক্ষা করতে হবে'।
এই সরকার কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করাবে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন মমতা। তাঁর বক্তব্য,'দেশের জন্য এটা হিতকর নয়। গণতন্ত্রকে আরও দুর্বল করবে। মোদী একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি। তার কাছাকাছিও যাননি। কীভাবে বিল পাশ করবেন? সংবিধান সংশোধনী কীভাবে করবেন? কারণ দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যা নেই। গতবার যে বিল পাশ করেছে, সেগুলি নিয়ে কারও সঙ্গে আলোচনা করেননি। সব কিছুর একটা লক্ষ্মণরেখা থাকে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই সরকার পড়ে, ততই মঙ্গল। ভয় দেখিয়ে চমকে ধমকে ১৪৭ জনকে তাড়িয়ে যে কোনও বিল পাশ করিয়ে দেবে! এটা আর হবে না'।
এ দিন লোকসভা ও রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতাও ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা হলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ডেপুটি কাকলি ঘোষ দস্তিদার। লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা থাকলেন ডেরেক ও'ব্রায়েন। তাঁর ডেপুটি হলেন সদ্য তৃণমূলে আসা সাগরিকা ঘোষ। রাজ্যসভায় তৃণমূলের মুখ্যসচেতক নাদিমুল হক। এবার নতুন দায়িত্ব দেওয়া হল সাগরিকা ঘোষ এবং কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে। মমতা দলীয় সাংসদদের নির্দেশ দিয়েছেন,'আমরা শক্তিশালী। আর দুর্বল ভাববেন না। তৃণমূল কংগ্রেস তৃতীয় বৃহত্তম দল। লোকসভা আর রাজ্যসভা মিলিয়ে আমাদের ৪২ জন সাংসদ। আমরা বসে থাকার জন্য সংসদে যাচ্ছি না। সিএএ, এনআরসি বাতিলের দাবিতে সোচ্চার হব'।