ম্যাজিক সংখ্যা ২৭২ ছুঁতে পারেনি বিজেপি। এহেন প্রেক্ষাপটে অন্ধ্রপ্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডু আর নীতীশ কুমারের আসন নির্ণায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন বিরোধী জোটের শরদ পাওয়ার। নাইডু আর নীতীশ কি ইন্ডি জোটে যোগ দেবেন? কার্যত সেই সম্ভাবনাই উস্কে দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইন্ডি জোটে তিনি যে আছেন তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। নেত্রীর মন্তব্য,'আমি ইন্ডিয়াকে সাহায্য করব। আমার অনেক বন্ধু রয়েছে। আমি চাইব, মোদী চলে যাক। ইন্ডিয়া সরকারে এলে দেশ বেঁচে যাবে'।
মঙ্গলবার বিরাট জয়ের পর সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন,'আমি খুশি, মোদীজি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি। উনি বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছেন। অবিলম্বে ওঁর প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া উচিত। কারণ উনি বলেছিলেন, এবার ৪০০ পার। আমি বলেছিলাম, ২০০ পার হবে কিনা দেখুন। কারণ কিছুটা হাতে রাখতে হয়। এখন টিডিপি (চন্দ্রবাবু নাইডু) আর নীতীশের পায়ে ধরতে হচ্ছে। এদের আমি ভালো করে চিনি। এরা ইন্ডিয়াকে (বিরোধী জোট) ভাঙতে পারবে না। বরং যাঁরা ওদের সঙ্গে গিয়েছেন, অত্যাচার কতটা চলবে...। সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় ইচ্ছামতো আইন পাশ আর সংসদে হবে না'।
প্রণিধানযোগ্য, ভোটের মাসখানেক আগেও ইন্ডি জোটে ছিলেন নীতীশ কুমার। তিনিই পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি ঘুরে জোটের সলতে পাকিয়েছিলেন। অন্যদিকে, টিডিপির চন্দ্রবাবু ২০১৯ সালে নবান্নে এসে মমতার সঙ্গে কথা বলে গিয়েছিলেন। সেবার বিরোধী জোটে ছিলেন তিনি। নাইডু ও নীতীশ দু'জনের সঙ্গে মমতা সম্পর্ক বেশ ভালো। তাই তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। নীতীশ ও নাইডুর সঙ্গে সম্ভবত কথাবার্তা চালাতে পারেন ইন্ডি জোটের শরিকরা। সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও।
বুধবার দিল্লিতে বিরোধী শরিকদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছে কংগ্রেস। ওই বৈঠকের ব্যাপারে তাঁর কাছে কোনও খবর নেই বলে জানান মমতা। তবে বৈঠকে প্রতিনিধি হিসেবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি পাঠাবেন। নেত্রী বলেন,'চেষ্টা করব বৈঠকে কাউকে পাঠানোর। আমাদের পুনর্গণনার দাবি করতে হবে। সিআরপিএফের হাতে দেশটা ছেড়ে চলে যাব না। চেষ্টা করব যাতে অভিষেক যেতে পারে। বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে আমি অনুরোধ করব, সব নেতারা যাতে হাজির হতে পারেন। বৈঠক নিয়ে আমাদের কাছে কোনও তথ্য নেই। অন্তত আমাদের জানানো উচিত ছিল'।
মমতা আরও বলেন,'এত অত্যাচার করার পরেও ইন্ডিয়া জিতেছে। মোদী হেরেছে। অযোধ্যায় হেরেছেন। মোদীজি নিজের আসনে পোস্টাল ব্যালটে হেরেছেন। ৫ লাখ ভোটে আগেরবার জিতেছিলেন। এখন কী হল? এত অহংকার ঠিক নয়। জনতা এত আশীর্বাদ করেছেন, আমরা মাথানত করতে চাই। রবীন্দ্রনাথের ভাষায় জনতাকে বলতে চাই, আমাদের মাথানত করে দাও। আমি মানুষের চোখের ভাষা বুঝি। আড়াই মাস, তিন মাস ধরে কোনও ভোট চলতে পারে না। এতে উন্নয়নের কাজ হয় না। মোদীজি যে আইন করেছেন, ১৪৭ জন সাংসদকে তাড়িয়ে, তা আর হবে না। দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। তাই সংবিধান সংশোধন হবে না'।