জলপাইগুড়ির সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নাম না করে আক্রমণ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। আজ কোচবিহারের মাথাভাঙার পরে জলপাইগুড়িতে সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে ভাষণ দিতে গিয়ে ঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি তুলে ধরেন। তারপরই বিভিন্ন ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকার, বিজেপিকে আক্রমণ করেন তিনি। মমতা বলেন, আত্মপ্রচারে ব্যস্ত থাকেন প্রধানমন্ত্রী।
মমতা বলেন, 'কোথাও কোথাও প্রধানমন্ত্রী এসে বলেন, আমার নামে নাম দেওয়া হয় না। কেন দেব? সব টাকাটা দাও, তাহলে নাম দেব। অর্ধেক টাকা তোমার, অর্ধেক টাকা রাজ্যের, তাহলে তোমার নাম কেন থাকবে? মানুষের নাম কেন থাকবে না? রাজ্যের নাম কেন থাকবে না? শুধু রাজনীতি। কিছু লোককে রেশন দেয়। সবাইকে নয়। সবাইকে আমরা দিই, ৫ কেজি চালের মধ্যেও নিজেও ফটো, বিজেপি পার্টির সিম্বল। লোককে দুটো খেতে দেবে সেখানেও তার প্রচায় চায়। এত আত্মপ্রচারে ব্যস্ত কেন? তুমি দেশের প্রধানমন্ত্রী, সবাই তোমার নাম জানে, সবাই তোমাকে চেনে।'
এরপরই মমতা বলেন, 'যদি তোমরা এতই আত্মবিশ্বাসী হও যে জিতবে, তাহলে রোজ লোকের বাড়ি কেন ইনকাম ট্যাক্সের রেড করাচ্ছো। কেন েজেন্সি দিয়ে রেড করাচ্ছো? তোমার বিজেপি নেতারা এনআইএ, আয়কর দফতর, সিআইএসএফকে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। লজ্জার বিষয় যে আর্মি হাসপাতালগুলোকেও অর্গানাইজারদের হাতে দিয়ে দিয়েছে বিজেপি। লজ্জা করে না। নির্লজ্জ, বেহায়া, ভাঁওতা দেওয়া রাজনৈতিক দল। দেশে সেনারা কখনও রাজনীতি করেনি। বিএসএফ, সিআইএসএফ, ইনকাম ট্যাক্সও করত না। আমার কাছে নথি আছে। শীতলকুচির ঘটনা মনে আছে আপনাদের? চার জন সংখ্যালঘু ও একজন রাজবংশীকে মেরে দিয়েছিল। বিজেপি করলেই সাদা! তৃণমূল করলেই কালো। যার বাড়িতে গিয়েছে, তার বাচ্চা দুধ খেতে পারছে না। স্নান করতে পারছে না। ওর বলছে বিজেপি করো। আমি বিজেপির মতো সন্ত্রাস করি না। বিজেপির কাছে আত্মসমর্পণ করবেন না। যাঁদের সব গেছে, হাঁড়ি, কড়া, সব কিছু, সব করে দেবে সরকার।'
এর আগে কোচবিহারের মাথাভাঙায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আজ একটা মিটিং করতে আসবেন বাবুরা। দেখবেন কত কুমিরের অশ্রু ঝড়বে। জিজ্ঞেস করুন, আমরা যে তোমাদের ১১ লক্ষ বাড়ির তালিকা দিয়েছিলাম... ৩ বছর ধরে আবাসের টাকা দাও না। রাস্তার টাকা দাও না, ১০০ দিনের কাজের টাকা দাও না। আবাস, রাস্তায় বাংলা এক নম্বরে ছিল।' এদিন উত্তরবঙ্গের ঝড়-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন মমতা। তিনি জানান, রাজ্যের তরফে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি করে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপে সেটা করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, 'এমন সময়ে আমাদের ভোট হয়, আমাদের দুর্ভাগ্য, এই সময়ে রোদ থাকে বেশি, ঝড় হয়, পানীয় জলের অভাব থাকে বেশি। বাংলা হচ্ছে প্রকৃতি মাতার রাজ্য। একদিকে যেমন পাহাড় আছে, তেমনই নদী-সমুদ্র-পুকুর রয়েছে। সবচেয়ে বেশি সাইক্লোন বাংলাদেশে ও বাংলায় হয়। তা সত্ত্বেও আমরা যেহেতু ইলেকশন চলছে... বিজেপি পার্টি ভোট মানে না। যার বিয়ে সে নিজেই পুরোহিত।'