লোকসভা ভোটের আগে ইন্ডিয়া জোট নিয়ে আবারও উঠে গেল প্রশ্ন। নীতীশ কুমার ইতিমধ্যেই এনডিএ-তে যোগ দিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসকে নিশানা করেছেন। শ্লেষ মিশিয়ে বলেছেন,'৪০ পাবে কিনা তার ঠিক নেই!' ওদিকে, সপা নেতা অখিলেশ যাদবও উত্তরপ্রদেশের কয়েকটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছেন। এবার আরও একটা ধাক্কা খেতে চলেছে ইন্ডিয়া জোট। উত্তরপ্রদেশে রাহুল গান্ধীর 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা' প্রবেশের আগেই বিরোধী জোটে ভাঙন ধরছে। আরএলডি সঙ্গে বিজেপির পাকা কথা সারা হয়ে গিয়েছে বলে খবর।
সূত্রের খবর, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এবং আরএলডির মধ্যে জোটের ফর্মুলা কার্যত পাকা। যে কোনও সময় আসন ভাগাভাগির কথা ঘোষণা হতে পারে। বহুদিন ধরেই আলোচনা চলছে বিজেপি ও আরএলডির শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে। শোনা যাচ্ছে, আরএলডি ২টি লোকসভা আসনে প্রার্থী দেবে। এই দুটি আসন হল, বাগপত ও বিজনৌর। এছাড়াও জয়ন্ত চৌধুরীর দল আরএলডিকেও একটি রাজ্যসভা আসন দেওয়া হবে। ২-৩ দিনের মধ্যে দুই দলের তরফে চূড়ান্ত ঘোষণা তকরা হতে পারে। উল্লেখ্য, রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের ন্যায় যাত্রা ১৪ ফেব্রুয়ারি উত্তরপ্রদেশের চান্দৌলিতে প্রবেশ করবে। তার পর ১১ দিন যাত্রা চলবে সে রাজ্যে।
বিরোধী দলগুলি দাবি করছিল, জয়ন্ত চৌধুরী এবং তাঁর দল আরএলডি ইন্ডিয়া জোটের অংশ। লোকসভা নির্বাচনে একসঙ্গে লড়াই করবে। যদিও জয়ন্ত এ ব্যাপারে কোনও উচ্চবাচ্যই করেননি। শোনা যাচ্ছে, দুদিকের দরজাই খোলা রেখেছিলেন জয়ন্ত।
পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ মূলত জাঠ, কৃষক ও মুসলিম অধ্যুষিত। এখানে মোট ২৭টি লোকসভা আসন রয়েছে। ২০১৯ সালে বিজেপি ১৯টি আসন জিতেছিল। বিরোধী জোটের দখলে ছিল ৮টি আসন। এর মধ্যে সপার খাতায় ৪টি এবং বিএসপির ঝুলিতে ৪টি। কিন্তু, আরএলডি কোনও আসনেই জিততে পারেনি। এমনকি পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের জাঠ গোষ্ঠীর সমর্থনও পাননি জয়ন্ত। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও আরএলডি কোনও আসন পায়নি।
২০১৯ সালে জয়ন্ত চৌধুরীর দল আরএলডি সপা-বসপার সঙ্গে জোট করে তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। তিনটি আসনেই হারে তারা। জয়ন্ত চৌধুরী নিজের গড় বাগপত থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। বিজেপির সাতপাল মালিকের কাছে ২৩ হাজার ভোটে হেরেছিলেন। মথুরা থেকে হেমা মালিনীর কাছে হেরে যেতে হয়েছে আরএলডির কুনওয়ার নরেন্দ্র সিংকে। অজিত সিং প্রথমবার মুজাফফরনগর আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। যে আসনটি জাঠদের জন্য খুব নিরাপদ বলে মনে করা হয়। বিজেপির সঞ্জীব বালিয়ানের কাছে ৬৫০০-এর বেশি ভোটে হেরেছিলেন। সপা-বসপার ছাড়াও কংগ্রেসের সমর্থন পেয়েছিলেন অজিত ও জয়ন্ত চৌধুরী। টানা দ্বিতীয়বার লোকসভা নির্বাচনে চৌধুরী পরিবারকে খালি হাতে থাকতে হয়েছিল।
২০১৪ সালে আরএলডি-র ভোটের হার ছিল ০.৯%। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সঞ্জীব বলিয়ান মুজফফরনগর আসনে জিতেছিলেন। মেরুকরণের ফলে বিজেপি জিতেছিল বলে মনে করেন অনেকে। ২০১৯ সালে সপা-বসপা এমনকি কংগ্রেসের সমর্থন পেয়ে আরএলডি-র ভোটের হার দাঁড়ায় ১.৭।