নন্দীগ্রামের (Nandigram) ফলাফলের দিকে নজর ছিল গোটা দেশের। রবিবারের শে বেলায় মমতার (Mamata Banerjee) জেতার খবর মেলায় সকলেই ভেবেছিলেন ষোলকলা পূর্ণ হল তৃণমূলের। কিন্তু ক্লাইম্যাক্সের অ্যান্টি-ক্লাইম্যাক্সও যে অপেক্ষা করছিল তা ছিল অজানা। সবুজ ঝড়ে বিজেপিকে উড়িয়ে দেওয়ার দিনে একদা ছায়াসঙ্গী শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) কাছে ১৯৫৭ ভোটে হেরে গেলেন তৃণমূলের প্রধান মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তালেগোলে প্রায় সকলেই বলে দিয়েছিলেন শেষ রাউন্ডে বাজিমাত করে ভোটে জিতলেন মমতা। কিন্তু আদপে ফল হয়েছিল উল্টোই।
সর্বভারতীয় কংগ্রেসের (AITC) তরফ থেকে নিজে টুইট করে অবশ্য জানানো হয়, 'নন্দীগ্রামের ভোট গণনা এখনও শেষ হয়নি। দয়া করে কোনও রকম আগাম ধারণা করে নেবেন না।' যদিও বাংলার বিজেপি কো-ইনচার্জ অমিত মালব্য টুইটে মমতার এই পরাজয় নিয়ে কটাক্ষ করেন টুইটে। তিনি লেখেন, 'This is BIG. Mamata Banerjee, the sitting Chief Minister, loses Nandigram. BJP’s Suvendu Adhikari wins by 1,622 votes. After this crushing defeat what moral authority will Mamata Banerjee have to retain her Chief Ministership? Her defeat is a taint on TMC’s victory...' হারের পরেও কি মুখ্যমন্ত্রী হবেন? মমতার নৈতিক পরাজয় নয়? তবে জনতার রায় মেনে নিয়েও মমতা জানান, ভোট গণনায় কারচুপি হয়েছে। আদালতে যাবেন তিনি।
ভটোর ফলে বিজেপির একের পর এক হেভিওয়েট তারকা প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। এদিন চুঁচুড়ায় ধাক্কা খেয়েছেন লকেট। প্রায় ১৪ হাজার ভোটে তিনি হেরেছন তৃণমূলের অসিত মজুমদারের কাছে। অন্যদিকে হুগলির আরেক আসন সিঙ্গুরে শেষ হাসি বেচারাম মান্নার। কড়া লড়াইয়ে তিনি হারালেন মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টচার্য। রবীন্দ্রনাথ ভট্টচার্য বহু বছরের বিধায়ক ছিলেন। কিন্তু এবার তাকে টিকিট দেয়নি ঘাসফুল শিবির। তারপরেই বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। কিন্তু বিজেপিতে যোগে দেওয়ার পরেও স্থানীয় কর্মীদের মধ্যে প্রবল ক্ষোভ ছড়িয়েছিল রবীন্দ্রনাথকে বিজেপি প্রার্থী করায়। তারপরেও তাকে প্রার্থী করাতে অনড় থাকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এদিন বেচারাম মান্না ২৫,৯৩৩ ভোটে হারালেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে।
বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনে এবার ২৯২টি আসনে আজ ফলপ্রকাশ। ২টি আসনে করোনার জেরে প্রার্থী মৃত্যুর পরে ওই আসনে পরে নির্বাচন হবে। এবারের নির্বাচনে রাজ্যে ২৯৩টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি। বাগমুণ্ডি আসনটি তারা ছেড়েছে জোটসঙ্গীদের উদ্দেশ্যে। অন্যদিকে, ২৯১টি আসনের প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। পাহাড়ের তিনটি আসন ছেড়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। কিন্তু সেখানে মোর্চা শিবির কার্যত দুই ভাগ। বিমল গুরুং ও বিনয় তামাং শিবির দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছে। অন্যদিকে, পাহাড়ে জিএনএলএফ সমর্থন দিয়েছে বিজেপিকে। এবারের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৈরি হয়েছে সংযুক্ত মোর্চা। বামদল গুলি, কংগ্রেস ও আব্বাস সিদ্দিকীর আইএসএফ মিলে নতুন জোট তৈরি করেছে। প্রত্যেক দলই প্রার্থী দিয়েছে। কিন্তু মুর্শিদাবাদে বেশ কিছু আসনে জোট হয়নি। সেখানে শরিক দলগুলি একের অপরের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছে।