Advertisement

একুশের মহারণে মুসলিম ভোটই নিশানা! আসরে মমতা-ওয়াইসি

রাজ্যে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলা তিনটি মালদা, মুর্শিদাবাদ, এবং উত্তর দিনাজপুর চাইলে ভোটে নির্ণায়ক শক্তি হয়ে উঠতে পারে এটা সত্য। তাই সব রাজনৈতিক দলই মুসলিম অধ্যুষিত কেন্দ্রে রাজনৈতিক দলগুলো মুসলিম প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। লড়াইয়ের রাজনীতি যে বদলাতে চলছে তা স্পষ্ট। এখন শেষ হাসি কে হাসে সেটাই দেখার।

রাজ্যে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলা তিনটি মালদা, মুর্শিদাবাদ, এবং উত্তর দিনাজপুর
দেবস্মিতা দাস
  • কলকাতা ,
  • 07 Apr 2021,
  • अपडेटेड 4:35 PM IST
  • রাজ্যে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলা তিনটি মালদা, মুর্শিদাবাদ, এবং উত্তর দিনাজপুর
  • এই তিন জেলায় মুসলিম ভোটব্যাঙ্ককে ধরেই এগোচ্ছে রাজনীতি
  • বাংলায় একুশের মহারণে মমতার কেল্লা সুরক্ষিত তো?

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করে ক্ষমতায় কিংবা তার পাশাপাশি আসার ইচ্ছে ছিল সব রাজনৈতিক দলেরই। জাতীয় স্তরের কয়েকটি রাজনৈতিক দল যেমন শিবসেনা ও আরজেডি বাংলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায়। যদিও পরে তাঁরা সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়ায়। অন্যদিকে, হায়দরাবাদ থেকে আসাদউদ্দিন ওয়াইসির দল এআইএমআইএম (মিম) বাংলায় একুশের মহারণে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। 

পরবর্তীতে আবাসউদ্দিন সিদ্দিকির দল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট বাম ও কংগ্রেসদের সঙ্গে জোট করাতে সরে আসে মিম। কিন্তু শেষ বেলাতে ফের সিদ্ধান্ত বদল করে ওয়াইসির দল। তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণের দিন সকালে আচমকাই ৭ আসন প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে তারা। উত্তর দিনাজপুর, মালদা, রতুয়া, আসানসোল উত্তর কেন্দ্র এবং মুর্শিদাবাদ জেলায় তিনটি আসনে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মিম। ওয়াইসির এই সিদ্ধান্তকে অবশ্য গুরুত্ব দিয়েই দেখছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। 

যে সাত কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়েছে মিম সেই সাত কেন্দ্র যদি দেখা যায় তাহলে বোঝা যাবে মুসলিম ভোটব্যাঙ্ককে ধরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁরা। একুশের নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলই মুসলিম ও সংখ্যালঘু ভোটকে মাথায় রেখেই নির্বাচনী ছক সাজিয়েছে। সেই সম্প্রদায়কে লক্ষ্য রেখেই কিন্তু টক্কর দিতে আসছে মিম,এমনটাই মনে করা হচ্ছে। উত্তর দিনাজপুরে মোফাক্কেরুল ইসলাম, মালদহের মালতিপুরে মতিউর রহমান ও রতুয়ায় সৈদুর রহমান এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল উত্তর কেন্দ্রের দানীশ আজিজকে প্রার্থী করা হয়েছে। জলঙ্গিতে অলসকউত জামান, সাগরদিঘিতে নুরে মেহেবুব আলম ও ভরতপুরে সজ্জাদ হোসেনকে প্রার্থী করা হয়েছে।  

ভোট পরিসংখ্যান যদি দেখা যায় তাহলে ২০১৯ সালে মধ্য ও দক্ষিণবঙ্গে বিজেপিকে মাত করে বেরিয়ে যায় তৃণমূল। আর এই দুই এলাকার ভোটব্যাঙ্কের একটা বড় অশ হল মুসলিম ভোটার। ২০১১ সালের আদমসুমারী অনুযায়ী, দেখা গিয়েছে, রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ২৭ শতাংশ হল মুসলিম। যা জম্মু ও কাশ্মীর এবং আসামের মুসলিম জনসংখ্যার থেকেও বেশি। ওয়াইসি মুর্শিদাবাদে তিন প্রার্থী দিয়েছেন। এর অবশ্য একটা বড় কারণ পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে বেশি মুসলিম ভোটারের শতাংশ মুর্শিদাবাদে। যেখানে ৬৬ শতাংশ মুসলিম রয়েছেন।

Advertisement

অন্যান্য জেলাগুলি যদি দেখা যায় তাহলে মালদায় ৫১ শতাংশ মুসলিম রয়েছেন। ৪৯.৯ শতাংশ মুসলিম ভোটার রয়েছেন উত্তর দিনাজপুরে। বাকি জেলাগুলিতে ৩৭ শতাংশের আশপাশে মুসলিম জনসংখ্যা। এমন এক প্রেক্ষাপটে তৃণমূল ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের তুলনায় নিজের মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক ২০১৯ সালে বাড়িয়েছে অনেকটাই। একটি সমীক্ষা বলছে, ২০১৪ সালে ৪০ শতাংশ মুসলিম ভোট তৃণমূলের সমর্থনে পড়ে। এরপর ২০১৯ সালে ৭০ শতাংশ মুসলিম ভোট তৃণমূল পেয়েছে লোকসভা নির্বাচনে। সেই ভোট কাটার লক্ষ্যেই জোট বেঁধেছে সব দলই।

রাজ্যে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলা তিনটি মালদা, মুর্শিদাবাদ, এবং উত্তর দিনাজপুর চাইলে ভোটে নির্ণায়ক শক্তি হয়ে উঠতে পারে এটা সত্য। তাই সব রাজনৈতিক দলই মুসলিম অধ্যুষিত কেন্দ্রে রাজনৈতিক দলগুলো মুসলিম প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। রাজ্যে মুসলমান ভোটারের উত্তরোত্তর বৃদ্ধি সত্ত্বেও মুসলিম কোনও রাজনৈতিক দল কিন্তু কিছু করে উঠতে পারেনি। 

তবে ওয়াইসির এই সিদ্ধান্ত যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অস্বস্তি বৃদ্ধি করছে তা বলাই বাহুল্য। মমতার শঙ্কা স্পষ্ট যে তাঁর একচেটিয়া মুসলিম ভোটে ভাগ বসাতে এসেছে মিম। সব জনসভা থেকেই মমতা বলেছেন, ‘‘ওরা কিন্তু বিজেপির বি-টিম। ওরা বিজেপির টাকা নেয়। সংখ্যালঘুরা ভুল করবেন না। ওদের বাড়ি হায়দরাবাদে। এখানে নয়।’’ তাই এই সকল কেন্দ্রে লড়াইয়ের রাজনীতি যে বদলাতে চলছে তা স্পষ্ট। শেষ হাসি কে হাসে সেটাই দেখার।

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement