মুকুটমণিপুরের (Mukutmanipur) নাম নিশ্চয় অনেকেই শুনেছেন। দুই নদীর সংযোগস্থলে তৈরি এই বাঁধ বাঁকুড়া (Bankura) জেলার অন্যতম প্রধান পর্যটন কেন্দ্র। এই নদীবাঁধ ও পারিপার্শ্বিক প্রাকৃতিক দৃশ্যের টানে বছর বছর এখানে ছুটে আসেন বহু পর্যটক। তবে শুধু নদীবাঁধ ও প্রাকৃতিক শোভাই নয়, মুকুটমণিপুর পর্যটকদের পছন্দের স্থান হিসেবে গড়ে ওঠার নেপথ্যে রয়েছে আরও বেশ কিছু উপাদান। যার অন্যতম এখানকার কুটির শিল্প। মুকুটমণিপুরের বাঁশের শিল্প পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। বাঁশ দিয়ে এখানকার শিল্পীদের তৈরি নানান ঘর সাজানোর সামগ্রী সংগ্রহ করেন পর্যটকরা। কিন্তু যাঁদের তৈরি সামগ্রী দিয়ে ঘর সাজান পর্যটকরা, বাস্তবে তাঁদের জীবন ঠিক কতটা সাজানো? অর্থাৎ কেমন আছেন মুকুটমণিপুরের বাঁশের শিল্পীরা?
মুকুটমণিপুরের দহলা গ্রামে বংশ পরম্পরায় বাঁশের এই শিল্পকর্ম করে চলেছেন একদল শিল্পী। ৮ - ১০ শিল্পী মিলে একটি ইউনিট হিসবে কাজ করেন। তাঁদেরই একজন হৃদয় কালিন্দী জানাচ্ছেন, সরকার মেশিন দিয়েছ। কিন্তু ব্যাস, ওই পর্যন্তই। বছর দুয়েক আগে ঋণের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তা আজ পর্যন্ত মঞ্জুর হয়নি বলেই দাবি তাঁর। এমনকি এর জন্য বহুবার বিডিও এবং এসডিও দফতরে গেলেও কোনও সুরাহা হয়নি বলেই জানাচ্ছেন হৃদয়বাবু। পাশাপাশি কর্মসাথীতে আবেদন করেছিলেন। তাও হয়নি বলে জানাচ্ছেন শিল্পী। এমনকি এখনও পর্যন্ত বিশ্ববাংলার তরফে তাঁদের তৈরি কোনরকম সামগ্রী কেনা হয়নি বলেও দাবি হৃদয়বাবুর। তার মধ্যে আবার চলে আসে করোনাকাল ও দীর্ঘ লকডাউন। যার জেরে রীতিমতো কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন মুকুটমণিপুরের বাঁশের শিল্পীরা।
এদিকে দেখতে দেখতে চলে এল আরও একটা ভোট। খুব স্বাভাবিক ভাবেই আবার আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতির ডালি নিয়ে মানুষের সামনে হাজির রাজনৈতিক দলগুলি। এই পরিস্থিতিতে মুকুটমণিপুরের বাঁশের সামগ্রী তৈরির শিল্পীদের আবেদন, সরকার যারাই গঠন করুক, তারা যেন তাঁদের দিকে একটু নজর দেয়। এক্ষেত্রে তাঁদের শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সহজে ঋণ, তৈরি সামগ্রী বিক্রির ব্যবস্থা এবং বয়স্ক শিল্পীদের জন্য ভাতা চালুর আবেদন জানাচ্ছেন হৃদয়বাবুরা।