"চলুন পাল্টাই", বিজেপিতে (BJP) যোগদানের পর হাওড়ার (Howrah) ডুমুরজলায় প্রথমবার দলের মঞ্চ থেকে এই স্লোগানই তুললেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee)। এদিন নাম না করে তৃণমূলকে (TMC) নিশানা করে রাজীব বলেন, "যখন কেউ ওই দলে যোগ দেন তখন বলা হয় উন্নয়নের জন্য যোগদান, কিন্তু যখন কেউ ওই দল ছেড়ে অন্য দলে যান তখন বলা হয় গদ্দার। এর বিচার মানুষ করবেন। আপনারা যত অপশব্দ প্রয়োগ করবেন তত আমাদের ওপরে আশীর্বাদ আসবে, জেদ বাড়বে, সাহস বাড়বে।" রাজীব বলেন, "২০২১-এ সারা বাংলায় পদ্মফুল ফুটবে, এটা আমাদের শপথ, এটা আমাদের চ্যালেঞ্জ।"
সভা করার অনুমতি পাওয়া যায় না বলে প্রায়শই অভিযোগ তোলে বিজেপি সহ রাজ্যের অন্যান্য বিরোধী দল। এদিন সেই প্রসঙ্গেও রাজ্য সরকাকে আক্রমণ করেন রাজীব। বলেন, "সভা করতে দেওয়া হয় না, মিটিং বানচাল করে দেয়, এটা কীসের লক্ষণ জানেন? শেষের শুরু। তবে আমরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিশ্বাসী নই, রাজনৈতিক শিষ্ঠাচারে বিশ্বাসী, সৌজন্যে বিশ্বসী।" এরপরেই রাজীব দাবি করেন, "অমিত শাহ যে লক্ষ্য দিয়েছেন আগামিদিনে সেখানে পৌঁছব।"
উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের প্রসঙ্গে এদিন রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, "কাজ কিছু হয়েছে, এখনও অনেক বাকি আছে। বাংলার মানুষের অনেক হতাশা। বেকার যুবক যুবতীরা কাজ পাচ্ছেন না। বাইরে চলে যাচ্ছেন। শিল্প শ্মশানে পরিণত হয়েছে। শুধু কেন্দ্রের সঙ্গে শত্রুতা ও ঝগড়া করে গেল। মানুষের স্বার্থে কেন্দ্রের থেকে টাকা আদায় করতে পারলো না। এটা কার ব্যর্থতা? এর জবাব বর্তমান সরকারকে দিতে হবে।" এরপরেই রাজীব বলেন, "অমিত শাহজিকে বাংলার জন্য স্পেশাল প্যাকেজের কথা বলেছি। বিজেপি ক্ষমতায় এলে এখানে শিল্প হবে। আগামিদিনে কেন্দ্র ও রাজ্যে এক সরকার হোক। আমাদের চাই ডবল ইঞ্জিন সরকার।"
'দুয়ারে সরকার', 'পাড়ায় পাড়ায় সমাধান' এবং 'স্বাস্থ্যসাথী কার্ড'-এরও সমালোচনা ঝরে পড়ল রাজীবের গলায়। বলেন, "ভোটের মুখে দুয়ারে সরকার, তার মানে এটা প্রমাণিত এতদিন সরকার দুয়ারে যায়নি। ভোটের মুখে পাড়ায় পাড়ায় সরকার, তার মানে এটা প্রমাণিত যে এতদিন পাড়ায় পড়ায় সমস্যা ছিল। একইসঙ্গে রাজীব বলেন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পুরোপুরি ভাওতাবাজি। শুধু ভোট বৈতরণী পাড় করতে বাংলাটাকে বিক্রি করে দিচ্ছে। এরা বলে ৯৯ শতাংশ কাজ করে দিয়েছে, তাহলে এদের রেখে লাভ নেই। আমাদের সুযোদ দিন, ১০০ শতাংশ করে দেব।" পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের উদ্দেশ্যে রাজীবের প্রশ্ন, "এই সরকার আপনাদের জন্য কী করেছে? শুধু বিজেপির জুজু দেখিয়ে ভোটের কাজে ব্যবহার করেছে।" এদিন রাজীব সাফ জানান, "ধমকে চমকে ভোট হবে না। আমরাও জানি কীকরে ভোট করতে হয়। ১০০ শতাংশ নিরাপত্তা দেওয়া হবে। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হবে।" তৃণমূলকে হঠাতে "চুপ চাপ পদ্মফুলে ছাপ" স্লোগানও তোলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।