দলের সাংসদ শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur)-এর অভিমান ভাঙাতে আসরে নামলেন বিজেপি নেতা তথাগত রায় (Tathagata Roy)। নয়া নাগরিকত্ব আইন (CAA) নিয়ে শান্তনু কিছু মন্তব্য করেছিলেন। রবিবার উত্তর ২৪ পরগণার পলতায় তথাগত দাবি করেন, রাজ্য সরকার যতই আপত্তি করুক, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন রাজ্যে চালু করা হবে।
এদিন বিজেপির নেতা এবং মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় বলেন, "নাগরিকত্ব পুরোপুরি কেন্দ্রীয় বিষয়। এ ব্যাপারে রাজ্যের কোনও অধিকার নেই। তাই তৃণমূল কংগ্রেস বা রাজ্য সরকারের তরফ থেকে যদি কোনও আপত্তি আসে- সেটা ফাঁকা আওয়াজ ছাড়া কিছুই নয়। তাঁরা ট্রেন জ্বালিয়ে দিতে পারে, স্টেশন জ্বালিয়ে দিতে পারে, মানুষ খুন করতে পারে। তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু আইনত তারা কিছুই করতে পারেন না। কারণ সংবিধান তাদের সেই অধিকারই দেয়নি।"
সিএএ (CAA) বাস্তবায়নের দেরি হওয়া নিয়ে তথাগতের বক্তব্য, "করোনার কারণে সরকারি অফিসে হাজিরা কম, কাজকর্মে দেরি হচ্ছে। ফলে এই সময়টা দিতে হবে। বিজেপি যখন এই আইন প্রণয়ন করেছে, তার অর্থ এই কাজ ১০০ শতাংশ সফল করার ইচ্ছে বিজেপির রয়েছে। এবং ইচ্ছে আছে বলেই তা কাজে পরিণত হবে। এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।"
এর পাশাপাশি সিএএ (CAA) বাস্তবায়নে দেরি হওয়া নিয়ে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur)-এর ক্ষোভের প্রসঙ্গ তুলে তথাগত জানান "এতে শান্তনুর কোনও দোষ নেই। তাঁর সঙ্গে মতুয়া সম্প্রদায়ের যাঁরা আছেন, সেই মানুষগুলো পূর্ব বাংলায় ধর্মীয় কারণে মুসলিমদের হাতে অত্যাচারিত হয়ে, সেখান থেকে বিতাড়িত হয়ে ভারতে চলে এসেছেন। এখানেও অবহেলা পেয়েছেন। তাঁরা নাগরিকত্ব পাবেন। তাঁদের জন্য সিএএ আনা হয়েছে কিন্তু তাঁরা যদি এর বাস্তবায়ন দেখতে না পান, তবে স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা অধৈর্য হতে পারেন। কিন্তু আমি বলব আপনারা ধৈর্য হারা হবেন না।"
তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছেন তথাগত। এদিন ডায়মন্ড হারবারের জনসভা থেকে অভিষেক দাবি করেন, কয়েক দিন আগে বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডার সভায় সাংবাদিক, চানাচুরওয়ালা মিলিয়ে ৫০০ জনের বেশি লোক উপস্থিত ছিলেন না। এ ব্যাপারে অভিষেককে আক্রমণ করে বিজেপি নেতা বলেন "আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চানাচুরওয়ালার চেয়ে বেশি বলে মনে করি না। তিনি পিসির আঁচল ধরে বসে আছেন। যতদিন পিসি আছেন, ততদিন ভাইপো আছেন। ছয় মাস পরে যখন পিসি চলে যাবেন, তখন ভাইপোকেও আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাই এই নিয়ে ভাবার কোন কারণ নেই।"
এদিনের সভায় থেকে অভিষেক এই অভিযোগ করেন যে বিজেপিতে নেতা না থাকার জন্য তৃণমূল থেকে লোক নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণ চালানো হচ্ছে। অভিষেকের ওই মন্তব্যের জবাবে তথাগত রায় জানান "অভিষেকের কোনও বুদ্ধি সুদ্ধি নেই। এঁচড়েপাকা লোক। অল্প বয়সী ছেলে। পিসির আঁচল ধরে বসে আছেন। পিসির আঁচল ধরেই আবার অস্তাচলে চলে যাবেন।"
তথাগত রায়ের দাবি "অভিষেক যে পরিমাণ সম্পত্তি তৈরি করেছেন, কলকাতার ১০১/এ নম্বর হরিশ মুখার্জি রোডের যে বাড়িটি তিনি তৈরি করেছেন সেই বাড়ির ভিতরে চলমান সিঁড়ি আছে। সেই বাড়ির সম্পত্তির মূল্য ১০০ কোটি টাকার বেশী। অভিষেকেই টাকা কোথায় পেলেন তার খোঁজ করতে হবে।