Advertisement

শুভেন্দু-দিলীপে আস্থা নেই ? মমতাকে রুখতে মোদীই ভরসা বিজেপির?

কংগ্রেস-বামেরা জোট করেছে ঠিকই তবে শাসক-বিরোধীরাদের ক্ষমতার আস্ফালনে তার ধারে কাছে নেই। এবারের নির্বাচনে বাংলার পালস ধরতে বরাবরই সচেষ্টা বিজেপি। বাঙালির প্রাণের উৎসব দুর্গাপুজো থেকে বাংলার মনীষী, আবেগের উৎস বুঝতে খামতি রাখেনি পদ্ম শিবির। কিন্তু তৃণমূলের মূল সরাতে হিমশিমও কম খেতে হচ্ছে না। 

তবে কি এবারের লড়াই জনপ্রিয়তা বনাম জনপ্রিয়তা?
দেবস্মিতা দাস
  • কলকাতা ,
  • 22 Feb 2021,
  • अपडेटेड 2:11 PM IST
  • নির্বাচনে বাংলার পালস ধরতে বরাবরই সচেষ্টা বিজেপি।
  • লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকেই ফাটল ধরেছে তৃণমূলে
  • তবে কি এবারের লড়াই জনপ্রিয়তা বনাম জনপ্রিয়তা?

বিধানসভা নির্বাচনে বাংলা দখলের লড়াইয়ে রাজ্যে এবার লড়াই মূলত তৃণমূল এবং বিজেপির। কংগ্রেস-বামেরা জোট করেছে ঠিকই তবে শাসক-বিরোধীরাদের ক্ষমতার আস্ফালনে তার ধারে কাছে নেই। এবারের নির্বাচনে বাংলার পালস ধরতে বরাবরই সচেষ্টা বিজেপি। বাঙালির প্রাণের উৎসব দুর্গাপুজো থেকে বাংলার মনীষী, আবেগের উৎস বুঝতে খামতি রাখেনি পদ্ম শিবির। কিন্তু তৃণমূলের মূল সরাতে হিমশিমও কম খেতে হচ্ছে না। 

লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকেই ফাটল ধরেছে তৃণমূলের। মুকুল রায়, সব্যসাচী দত্ত, শোভন চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারি, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ একাধিক মমতা শিবিরের হেভিওয়েট নেতারা এখন গেরুয়া শিবিরে। যার মধ্যে শুভেন্দুর দল বদল বড় আলোড়ন ফেলেছিল বঙ্গ রাজনীতিতে। কিন্তু এত হেভিওয়েট নেতা থাকতেও কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপরই আস্থা রাখতে হচ্ছে পদ্ম শিবিরকে। 

যদিও তৃণমূলের কথায়, বাইরে থেকে বর্গী আসে, নিয়ম মেনে প্রতি মাসে। মমতা শিবিরের তরফে এই 'বর্গী' কথার সারতত্ত্ব যে 'বহিরাগত' তা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী বাংলা এক মাসেই তিন বার এলেন নরেন্দ্র মোদী। এছাড়াও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডারা এসে একের পর এক জনসভা, পরিবর্তন যাত্রার সূচনা ইত্যাদি কর্মসূচী করছেন। কিন্তু বাংলার নেতাদের কেন সেই উপস্থিতি নেই, এ প্রশ্ন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। দলবদলের পর থেকেই শুভেন্দু-রাজীবরা জনসভা করেছেন ঠিকই, কিন্তু তা 'ছাপ' ফেলতে পারছে কোথায়? বরং কালো পতাকা, 'বিশ্বাসঘাতক' ব্যানার ও স্লোগানের মুখে বারংবার পড়তে হচ্ছে দুই নেতাকে। 

অথচ তৃণমূলে থাকতে শুভেন্দু অধিকারীর সভা ছিল সেই 'হেভিওয়েট' সভা! পদ্ম-যোগে সে জৌলুস কমেছে কিছুটা এমনটাই মত একাংশের। বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় আসলে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী কেন হবেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল, রয়েও গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তা যে তৃণমূলকেও ছাপিয়ে যায় তা মোদী-শাহরা জানেন। পর পর দু'বার সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বাংলার কুর্সিতে বসার ক্ষমতা মমতা রাখেন, এ কথা অনস্বীকার্য। কিন্তু দেশের প্রেক্ষাপটে দেখলে সেই ইতিহাস মোদীও তৈরি করেছেন।

Advertisement

তবে কি এবারের লড়াই জনপ্রিয়তা বনাম জনপ্রিয়তা? তৃণমূল সুপ্রিমো লড়াইয়ের ময়দানে প্রথমেই জানিয়ে দিয়েছেন, "২৯৪ কেন্দ্রে আমিই প্রার্থী। আমায় দেখে ভোট দিন। প্রার্থী কে হচ্ছেন সে নিয়ে ভাববেন না।" ওয়াকিবহাল মহলের মত, দলবদলের রাজনীতিতে দলের কোনও নেতা, নিজের জনপ্রিয়তাকেই কাজে লাগাতে চাইছেন নেত্রী। কিন্তু এই মুহুর্তে পদ্মশিবিরে তো তারকার হাট। অন্য দলের নেতা থেকে টলিউডের একাংশ, ভোটের হাওয়ায় গেরুয়া দলে নাম লিখিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু জনপ্রিয়তায় কোথাও কি 'কিছু কম পড়িয়াছে'? নরেন্দ্র মোদী, শাহ-নাড্ডারা যেভাবে রণনীতি মেনে বাংলায় এসে প্রচার চালাচ্ছেন সেখানে এ প্রশ্ন উঠছেই। দলে নেতা-নেত্রীদের প্রাবল্য থাকলেও ট্রাম্প কার্ড যেন সেই মোদী-শাহ।

সম্প্রতি এই প্রেক্ষাপটকে সাহায্য করছে নয়া ট্রেন্ড। তা হল নরেন্দ্র মোদীদের নিশানা কিন্তু তৃণমূল শিবিরের অন্য কোনও নেতা-নেত্রীরা নন। মমতা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে লক্ষ্য করেই ছক সাজাচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি। তবে কি মমতার কথাকেই মান্যতা দিচ্ছেন তাঁরা? ২৯৪টি আসনে মমতা ও তাঁর জনপ্রিয়তাই পদ্মের মাথাব্যথার কারণ? লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ১৮টি আসনে জিতেছে কিন্তু সেখানেও কিন্তু মোদী-হাওয়াই কাজ করেছে অনেকটা। এখন এই জনপ্রিয়তার সম-লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসে কে, সেটাই দেখার।

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement