এতদিন হাওড়ায় (Howrah) তৃণমূলের (TMC) নেতা মন্ত্রীরদের মধ্যে কয়েকজন বেসুরো গাইছিলেন। এমনকি তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কেও বলতো শোনা গিয়েছিল, 'জেলায় দলের মধ্যে কেমন যেন ভাঙন দেখা দিয়েছে।' আর এবার হয়ত বাস্তবেও তেমনটা ঘটতে চলেছে। আগামিকাল বৃহস্পতিবার বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন হাওড়ার তৃণমূল নেতা শ্রীকান্ত ঘোষ (Srikanta Ghosh)। বুধবার একথা জানান শ্রীকান্ত নিজেই। এদিন বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের সঙ্গে কলকাতায় বৈঠক করেন তিনি। দীর্ঘক্ষণ বৈঠক হয় তাঁদের মধ্যে। এরপরেই নিজের বিজেপিতে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন শ্রীকান্ত।
শ্রীকান্ত বলেন, "২০০৮ সাল থেকে তৃণমূল করছি। কিন্তু দল কোন যোগ্য সম্মান দেয়নি। শুধু লুটেছে।" শ্রীকান্তর দাবি, তাঁর টাকাতেই হয়েছে তৃণমূলের অনেক বড় বড় অনুষ্ঠান, যার মধ্যে অন্যতম নবান্ন উদ্বোধনের দিন বাইরের সমস্ত অনুষ্ঠান। এমনকি, ২০০৯ সালে ডুমুরজলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্মেলনও তাঁর টাকাতেই হয়েছিল বলে দাবি এই বিক্ষুব্ধ নেতার। শ্রীকান্তবাবুর অভিযোগ, "এতকিছুর পরেও দল তাঁর প্রতি কোনও সম্মান দেয়নি। তাই এই দলে থাকার কোনও মানে হয় না।" শ্রীকান্তর চ্যালেঞ্জ, তাঁর দায়িত্বতে থাকা মধ্য হাওড়া ও দক্ষিণ হাওড়া কেন্দ্র আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে জেতাতে না পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন।
শ্রীকান্ত ঘোষ জানান, আগামিকাল হাওড়া ময়দানে বিজেপির যোগদান মেলাতেই গেরুয়া পতাকা হাতে তুলে নেবেন তিনি। তাঁর সঙ্গে যোগ দেবেন প্রায় হাজার পাঁচেক তৃণমূল কর্মী সমর্থক, যাঁদের একটা বড় অংশই সংখ্যালঘু। এক্ষেত্রে শ্রীকান্তবাবুর অভিযোগ, "সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ তৃণমূলের প্রতি ভরসা রাখতে পারছেন না, তাই তাঁরা বিজেপিতে আসছেন। তৃণমূলের আরও অনেক নেতা মন্ত্রী দল ছেড়ে দেবেন কারন, এখানে কারও কোনো ক্ষমতা নেই। দলটা একটা কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে, যার সদর দফতর কালীঘাট থেকে বর্তমানে ডায়মন্ডহারবারে হয়েছে।" প্রসঙ্গত রাজ্যের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যয়কে নিয়ে এমনিতেই কিছুদিন ধরে অস্বস্তিতে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তার মাঝে পদত্যাগ করলেন জেলার আরও এক মন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লাও। আর এবার বিজেপির পথে পা বাড়ালেন শ্রীকান্ত। সেক্ষেত্রে হাওড়া জেলা দিনে দিনেই তৃণমূলের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।