কলকাতায় বসেছে ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভ ইস্ট ২০২১, আর সেই আসরেই ফের ভারতীয় জনতা পার্টির নেতাদের বাঙালি প্রীতি নিয়ে কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সাংবাদিক রাহুল কানোয়ালের প্রশ্নের জবাবে ফের নেতাজি জন্ম জয়ন্তীর প্রসঙ্গ টেনে আনেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। গত কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন প্রসঙ্গে বারবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলামের কবিতা আওড়াতে দেখা যাচ্ছে গেরুয়া শিবিরের নেতাদের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সকলেই রয়েছেন সেই তালিকায়।
নেতাজি জয়ন্তী অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গ উঠতেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন সেদিন জয় শ্রীরামের বাইরেও রাজনৈতিক স্লোগান দেওয়া হয়েছিল। সরকারি অনুষ্ঠানে এভাবে রাজনৈতিক দলের স্লোগান নেতাজির মতো মনীষীর অপমান বলেই মনে করছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এবারের লোকসভা ভোটে বাঙালি অস্মিতা নিয়ে ময়দানে নেমেছে তৃণমূল ও বিজেপি দুই শিবিরই। তাই বাজেট ভাষণে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন যেমন রবীন্দ্রনাথ আওড়ান তেমনি লোকসভার ভাষণে মোদীর গলায় স্থান পান বিবেকানন্দ। এই গোটাটাই বিজেপির ভোট রাজনীতি বলেই মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী। আর বাঙালি সাজতে গিয়ে একের পর এক মনীষীকে অপমান করে চলেছে বিজেপি নেতৃত্ব। তাই রবীন্দ্রনাথের ছবি স্থান পায় বিজেপি নেতাদের ছবির নীচে, সেই নিয়েও কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বহিরাগত তকমা ঝেড়ে বাঙালি আবেগকে হাতিয়ার করে বাংলা দখলের মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। পদ্ম শিবিরের বড়, মেজ, সেজ নেতারার নিয়ম করে সভা-সমাবেশে বাঙালি মনীষীদের কথা তুলে ধরছেন। আর এতেই অস্বস্তি বাড়ছে। বাঙালি মনীষীদের নিয়ে কথা বলতে গিয়েই বিতর্ক বাড়িয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। নবদ্বীপে স্বামীজিকে‘বিবেকানন্দ ঠাকুর’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। রভূমে দলীয় কর্মসূচিতে গিয়ে খোদ জেপি নাড্ডা বলেছিলেন ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মস্থান শান্তিনিকেতন’। যাকে ঘিরে প্রবল বিতর্ক হয়েছিল। অমিত শাহ বোলপুর সফরের সময়ও রবীন্দ্র নাথের ছবি নিয়ে তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তর কলকাতায় অমিত শাহের ব়্যালি চলাকালীন বিদ্যাসাগরের মর্তি ভাঙা নিয়ে তৈরি হয়েছিল উত্তেজনা। গত নভেম্বরে বিরসা মুণ্ডার মূর্তির বদলে অন্য এক অদিবাসীর ছবিতে শাহের মালা পড়ানো নিয়েও কটাক্ষ করেন মমতা। বাঙালি ও বাংলা ভাষাকে অসম্মান করছে বিজেপি শিবির। ইন্ডিয়া টুডের কলক্লেভে এসে মমতা বলেন, তিনি হিন্দি ভাল না বলতে পারলেও চেষ্টা করেন, আর তা টেলিপ্রমটার না দেখেই। ভাষাকে ভাল ভাষতে শিখতে হয়, আবেগ ধরতে হয়, কনক্লেভের মঞ্চে বিজেপি নেতৃত্বকে সেই শিক্ষাই দিতে চাইলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।