কখনও 'গুড়বাতাস', কখনও 'নকুল দানা', কখনও আবার 'চড়াম চড়াম ঢাক'। ভোট আসলেই বীরভূমের তৃণমূলের (TMC) জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) মুখ থেকে এই ধরনের নতুন নতুন শব্দ বা কথা শুনতে মোটামুটি অভ্যস্ত পড়েছেন বঙ্গবাসী। আর এবার তিনি বলেছেন 'খেলা হবে'। যা ইতিমধ্যেই কার্যত তৃণমূলের প্রধান প্রচার স্লোগানে পরিণত হয়েছে। এমনকি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) মুখেও শোনা যাচ্ছে 'খেলা হবে' (Khela Hobe)। প্রতিটি সভাতেই তিনি জনগণকে বার্তা দিচ্ছেন "খেলা হবে জেতা হবে।"
তবে তৃণমূল যত 'খেলা হবে' স্লোগানের সুর চড়িয়েছে, ততই এর সমালোচনায় নেমেছেন বিরোধীরাও। 'খেলা হবে' স্লোগানকে কটাক্ষ করে পালটা উন্নয়নের বার্তা দিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সম্প্রতি এক সভায় প্রধানমমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, "দিদি বলছেন খেলা হবে। আর বিজেপি বলছে বিকাশ হবে।" সমালোচনার রেশ বজায় রেখে বাঁকুড়াতেও মমতাকে বেঁধেন মোদী। মমতাকে কটাক্ষ করে মোদী বলেন, "ক্ষেতে জল নেই, চাকরি নেই, আর আপনি বলছেন খেলা হবে। ১০ বছর বাংলার সঙ্গে খেলে এখনও আপনার মন ভরেনি? পশ্চিমবঙ্গ এবার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে খেলা শেষ, বিকাশ আরম্ভ হবে।"
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিও 'খেলা হবে' নিয়ে একহাত নেন মমতাকে। তিনি বলেন, "দিদি বলছেন খেলা হবে। বাড়ির মেয়ে কখনও বাড়ির লোকেদের সঙ্গে খেলা করে? করে না। দিদিকে জিজ্ঞাসা করা উচিত তিনি কী খেলা করবেন? তিনি খেলাই করেছেন বাংলার মানুষের সঙ্গে। মহিলাদের সম্মানের সঙ্গে খেলা করেছেন। গরিব মানুষের ভবিষ্যতের সঙ্গে খেলা করেছেন।" অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের কেউ কেউ আবার 'খেলা হবে' স্লোগানের ভিত্তিতে নির্বাচনে হিংসার আশঙ্কা করেছেন।
এবার প্রশ্ন,' খেলা হবে'র বিরুদ্ধে পালটা আক্রমণে না গিয়ে কেন উন্নয়নের বার্তাকে হাতিয়ার করছে বিজেপি? এক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, রাজ্যের বিগত কয়েকটি নির্বাচনে হিংসার সাক্ষী থেকেছেন মানুষ। যার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিযোগের তির তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অনেক সময় অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্যের অভিযোগও এনেছেন বিরোধীরা। আর সেই কারণেই হয়তো 'খেলা হবে' স্লোগানের মোকাবিলায় পালটা গরমাগরম আক্রমণে না গিয়ে উন্নয়নের বার্তা দিয়েই মানুষের মন জিততে চাইছেন বিজেপি নেতত্ব।