বিজেপির বহু কর্মী সমর্থক আশা করেছিলেন যে শেষ মুহূর্তে হয়ত মিরাকল ঘটাতে পারবেন দলীয় নেতৃত্ব। হয়ত সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে আনতে পারবেন ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায়। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। তবে যে লক্ষ লক্ষ কর্মী সমর্থকেরা ব্রিগেডে এসেছিলেন, তাঁরা পুরোপুরি হতাশ হননি। কারণ 'বাংলার ছেলে' অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে দেখা গিয়েছে মঞ্চে।
বঙ্গ রাজনীতিতে বরাবরই বিশেষ ভূমিকা রয়েছে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের। ব্রিগেডে সফল সভার অর্থ, প্রতিপক্ষ ও ভোটারদের কাছে একটি নির্দিষ্ট বার্তা দেওয়া। এদিন ব্রিগেডে জনতাকে উৎসাহিত করতে নিজের ছবির খুব জনপ্রিয় সংলাপ বলতে শোনা যায় মিঠুনকে। তবে বাংলার রাজনীতির সঙ্গে মিঠুনের সম্পর্ক কিন্তু বেশ কয়েক দশকের। ১৯৬০ দশকের শেষ এবং ৭০ দশকের গোড়ার দিকে তিনি নকশাল আন্দোলনের অংশ ছিলেন। পরে অবশ্য সিপিআইএম-এর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল তাঁর।
এরপর ২০১৪ সালে তৃণমূলের টিকিটে রাজ্যসভার সাংসদ হন মিঠুন। কিন্তু বছর দুয়েক পর তাঁর নাম সারদা মামলায় জড়িয়ে যাওয়ায় পদত্যাগ করেন তিনি। তারপর থেকে রাজনীতিতে দেখা যায়নি তাঁকে। সম্প্রতি আরএসএস প্রধান মোহন ভগবতের সঙ্গে কথা হয় তাঁর। তারপর থেকেই জল্পনা চলছিল ফের রাজনীতিতে আসতে পারেন মিঠুন।
মমতা-মিঠুন সম্পর্ক কেমন?
মিঠুনের পদত্যাগে কখনই খুশি ছিলেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে উভয়ের সম্পর্ক বরাবরই ভালই থেকেছে। এমনকি মিঠুনের স্ত্রী যোগিতা বালিকেও নিয়মিত ভাবে রাজ্যের শিল্প সম্মেলনে দেখা গিয়েছে। কথাও বলতে দেখা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। এদিকে ব্রিগেডে নিজের ছোট্ট বক্তব্য কখনই মমতার বিরুদ্ধে কোনও কথা বলেননি মিঠুন। শুধুই শোনা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করতে।
কী চাইছে বিজেপি?
এক্ষেত্রে বিজেপি বহিরাগত দল, তারা বাংলার কৃষ্টি সংস্কৃতি জানে না বলে তৃণমূল বারেবারেই যে অভিযোগ তুলছে তার বিরুদ্ধে অন্য অনেকের মতো মিঠুনও হয়ত হয়ে উঠতে পারেন গেরুয়া শিবিরের জবাব। এক্ষেত্রে বিজেপি যে শুধু প্রতিপক্ষের প্রভাবশালী নেতাদের কাছেই পৌঁছে যাচ্ছে তা নয়, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বিষয়েও আলোচনা চালাচ্ছে।
বাঙালি ধুতি পাঞ্জাবিতে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তী। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় নির্বাচনে লড়াইয়ের সম্ভাবনার কথা একেবারে উড়িয়ে দেননি তিনি। বিজেপি অবশ্য মিঠুনকে প্রচারে নামিয়ে তাঁর জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগাতে চায়। সেক্ষেত্রে বাংলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী সভাগুলিতে মিঠুনকে দেখা যেতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। (লেখক-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রেস উপদেষ্টা)