দিনটা ছিল ২০০০ সালের ২৭ জুলাই। নানুরে (Nanoor) খুন হন ১১ জন। রক্তে আরও লাল হয়ে ওঠে বীরভূমের (Birbhum) মাটি। রাজ্যের ইতিহাসে সেই ঘটনা নানুর গণহত্যা নামে পরিচিত। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। চলে শাসক বিরোধী তীব্র তরজা। ধীরে ধীরে কালের চাকা ঘুরতে ঘুরতে সময় অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। সেই ঘটনার পর কেটে গিয়েছে ২১ বছর। এর মাঝে রাজ্যে ঘটে গিয়েছে রাজনৈতিক পালাবদল। তবে নানুর শান্ত হয়নি।
মাঝের এই সময়টাই বারেবারেই নানুরে চলেছে গুলি বোমা। হয়েছে খুন। আর সেই সমস্ত ঘটনায় অনেক সময়েই উঠে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তত্ত্ব। অভিযোগ উঠেছে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal) ও নানুরের দাপুটে তৃণমূল নেতা কাজল শেখের ( Kajal Shaikh) গোষ্ঠীর কোন্দলের জেরেই বারেবারে অশান্ত হয়েছে নানুর। যদিও জেলার রাজনৈতিক মহলের একাংশের আবার দাবি, অনুব্রত নয়, কাজলের বিবাদ মূলত দলের আরও এক নেতা অভিজিৎ সিংহের সঙ্গে। আর এই বিবাদের জেরে কাজলের সঙ্গে একসময় দলের সম্পর্কেরও বেশ অবনতি হয়। যদিও পরে আলোচনার মাধ্যমে দুই গোষ্ঠীর সমস্যা সমাধান করা হয়। নানুরে দলীয় পদেও আনা হয় কাজলকে।
উল্লেখ্য ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের সময় নানুর বিধানসভা আসনে জেতেন তৃণমূলের প্রার্থী গদাধর হাজরা। তবে ২০১৬ সালের নির্বাচনে ওই আসনে জেতেন সিপিআইএম প্রার্থী শ্যামলী প্রধান। সেই ঘটনার পর তৃণমূলের কেউ কেউ অভিযোগ করেন, পরোক্ষে কাজলই সাহায্য করেছে সিপিআইএমকে। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের বিধানসভা ভিত্তিক ফলাফলে দেখা যায় নানুরে তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও অন্যান্য জায়গার মতো সেখানেও ভোট বেড়েছে বিজেপির। এরপরেই জেলার কোন্দল মেটানোয় সক্রিয় হয় দলীয় নেতৃত্বে।
এবারে নির্বাচনে নানুর বিধানসভা এলাকার ৯টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ২টির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কাজল শেখকে। এবার এই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন বিধানচন্দ্র মাঝি। বিজেপির হয়ে লড়ছেন তারকেশ্বর সাহা। আর সংযুক্ত মোর্চার সিপিআইএম প্রার্থী হয়েছেন নানুরের বিদায়ী বিধায়ক শ্যামলী প্রধান। আগামী ২৯ তারিখ শেষ দফার নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে নানুরে। এখন দেখার ২০২১-এ নানুর দখল করেন কে।