Advertisement

'বীরভূমের হাওয়া মঙ্গলকোটকে গরম করুক, চাই না', অনুব্রতকে হুঁশিয়ারি সিদ্দিকুল্লার

রাজ্যের মন্ত্রী আর তৃণমূল (TMC) নেতার কোন্দল ফের প্রকাশ্যে এল। পূর্ব বর্ধমান (East Bardhaman)-এর মঙ্গলকোট বিধানসভা নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি (Siddiqullah Chowdhury) আর বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলে (Anubrata Mondal)-এর বিরোধ দিন দিন বেড়েই চলেছে।

রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি। ছবি: সুজাতা মেহরা
সুজাতা মেহরা
  • বর্ধমান,
  • 05 Dec 2020,
  • अपडेटेड 2:13 PM IST
  • মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি আর বীরভূম তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরোধ
  • ফের তা প্রকাশ্যে এল
  • তোপ দাগলে সিদ্দিকুল্লা

রাজ্যের মন্ত্রী আর তৃণমূল (TMC) নেতার কোন্দল ফের প্রকাশ্যে এল। পূর্ব বর্ধমান (East Bardhaman)-এর মঙ্গলকোট বিধানসভা নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি (Siddiqullah Chowdhury) আর বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলে (Anubrata Mondal)-এর বিরোধ দিন দিন বেড়েই চলেছে।  

সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি নিজেরই দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করলেন। শুক্রবার তিনি বলেন, "দলের স্বার্থে সাড়ে চার বছর সহ্য করে আছি। সহ্যের একটা সীমা আছে। আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, অনুব্রত মণ্ডল তিনি বীরভূমে আছেন, নেতৃত্ব দিচ্ছেন, দিতে পারেন। কিন্তু বীরভূমের গরম হাওয়া মঙ্গলকোটকে গরম করুক, এটা আমি চাই না। বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম, আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট বীরভূম থেকে সরে বর্ধমান জেলায় যুক্ত হওয়া উচিত।"

মঙ্গলকোটের বিধায়ক ও রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী বর্ধমানের সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের কাছে এভাবেই দলেরই নেতা তথা বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি ও মঙ্গলকোটের পর্যবেক্ষক অনুব্রত মন্ডলকে সতর্ক করে দিলেন। একই সঙ্গে সামনে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও মঙ্গলকোট দখল নিয়ে সিদ্দিকুল্লা বনাম অনুব্রত মণ্ডলের লড়াই।

উল্লেখ্য দিন কয়েক আগেই সিদ্দিকুল্লা তাঁর অনুগামীদের মিথ্যে গাঁজা মামলায় জেলে অভিযোগ করেন অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে। শুক্রবার আবার তাঁর কর্মী ও গ্রামবাসীদের হুমকি ও চোখ রাঙানোর  এলাকায় গন্ডগোল পাকানোর চেষ্টার অভিযোগ করলেন।

তিনি বলেন, গ্রামের মানুষদের কাছে সরকারি পরিকল্পনা জানাতে যখন তিনি যাচ্ছেন, গ্রামবাসীদের শাসাছে ওখানকার যারা তৃণমূলের নেতৃত্বে আছেন। তারা ভয় দেখাচ্ছে। আমাদের দলের কর্মীদের আর একটা কর্মী হুমকি দিয়ে তারা ভাল কাজ করছেন না। তাদের সাবধান হওয়া উচিৎ।

সিদ্দিকুল্লা বলেন, পুলিশকেও বলব সজাগ দৃষ্টি রাখুন। আমরা বরাবরই গন্ডগোলের বিপক্ষে। তবে কেউ যেন না ভাবেন আমরা দুর্বল। 

Advertisement

তিনি জানান, প্রতি সপ্তাহে দুয়ারে সরকারের পরিকল্পনা নিয়ে যেতে চেষ্টা করছেন। মঙ্গলকোট বড় এলাকা। কাটোয়ার সঙ্গে ৩টে পঞ্চায়েত যুক্ত। এদিকে মঙ্গলকোট ১৮ টা পঞ্চায়েত। স্বাভাবিক ভাবেই প্রতি পঞ্চায়েতে মানুষের সঙ্গে মিশতে হবে। কথা বলতে হবে। তিনি এসপি কেও বলেছেন কেউ যেন গলমাল করতে না পারে সে দিক দেখতে।

মন্ত্রী বলেন, যাঁরা হুমকি দিচ্ছেন, তাঁরা ওখানকার যারা তৃণমূলের নেতৃত্বে আছেন তাদের মধ্যেই। তবে আমি নাম এখন প্রকাশ করতে চাইছি না। আমাদের দলের কর্মীদের আর একটা কর্মী হুমকি দেবে কেন? তারা ভাল কাজ করছেন না তাদের সাবধান হওয়া উচিত। 

আমি যাদের কাছে যাব তাদের কেউ হুমকি দেবে, চোখ রাঙাবে এটা বরদাস্ত করবো ভাবছেন নাকি। এটা খুব সহজ কথা নয়। আমি প্রত্যেক সপ্তাহে যাব। প্রয়োজনে প্রতিদিন যাব। দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব বলছে এলাকায় যেতে। আমি চাইলে ২০০-৫০০ গাড়ির মিছিল করতেই পারি। কিন্তু সুশৃঙ্খল মানুষ আমি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আস্থা রাখি। কিন্তু একজন কেও ফার্স্ট ডিভিশন ফার্স্ট ক্লাস পাস করবে আর একটা ছেলে বারবার ফেল করবে আর ফেল করা ছেলের গুরুত্ব থাকবে। ফার্স্ট ডিভিশন পাস ছেলের গুরুত্ব থাকবে না এটা বুদ্ধিমানের কথা নয় । এটা নির্বোধের কথা। 

সিদ্দিকুল্লা বলেন, সুব্রত বক্সী বলেছিলেন অনুব্রত ও মঙ্গলকোটের আরও যাঁরা ছিলেন, মিলেমিশে একসঙ্গে কাজ করুন। মিটিং করুন। কিন্তু  তা হয়নি। আজ পর্যন্ত হয় নি। সেটা আমার কোনো ত্রুটি নয় । আমি লক্ষ্য করছি লোকসভা ভোটে আমাদের দল জিতলেও এলাকায় বিজেপি ১৩৩টি বুথে এগিয়েছিল । এই পর্যালোচনাটা কে করবে। সেই হিসাবে তাঁর (অনুব্রত মন্ডল মঙ্গলকটের পর্যবেক্ষক) নাম করে বলতে চাই না। তাঁর সঙ্গে যাঁরা আছেন, তাঁরা ভুল ত্রুটি করলে দায় কিন্তু তার উপর পড়বে।

এদিন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী দলেরই নেতার দিকে আঙ্গুল তোলেন। বললেন, বিজেপির সঙ্গে কথা বলা যাবে, আলোচনার পরিবেশ তৈরি করা যাবে। রাতের অন্ধকারে তাদের সাথে যোগাযোগ রাখা যাবে আর সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বা দলের যারা ভোট করেছেন তাদের রাঙা চোখ দেখাতে হবে, এটা সহজ ভাবে মেনে নেওয়া যায় না। 

মন্ত্রীর অভিযোগে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসে তাহলে কি অনুব্রত মন্ডল তলায় তলায় বিজেপি করছেন ? এ বিষয়ে মন্ত্রী জানান , "অনুব্রতবাবু  বিজেপি করেন কিনা বলতে পারব না তবে তার সাথে যারা আছেন তারা গন্ডগোল করার চেষ্টা করছেন এটা আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি । তাদের সাবধান হওয়া উচিত দলের স্বার্থে।"

তিনি জানান, আমি চাই মঙ্গলকোটের আরও উন্নয়ন হোক। কোনও ভাবে বিজেপি যেন দাঁত ফোটাতে না পারে। সেটা একার আমার দায়িত্ব কিন্তু  নয়। যাঁরা সেখানে সংগঠনের ক্ষমতা ধরে রেখেছেন (উল্লেখ্য মঙ্গলকোটের দায়িত্বে আছেন অনুব্রত মণ্ডল), এ দায়িত্ব কিন্তু তাঁদের। তাঁদেরকেই ঠিক করতে হবে। আমি এ জায়গায় প্রচন্ড শক্ত।

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement