কলকাতার পর এবার জেলাতেও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Rajib Banerjee) নামে পোস্টার ও ফ্লেক্স। সোমবার সকালে হাওড়া স্টেশন (Howrah Station), হাওড়া ময়দান, কোনা এক্সপ্রেসওয়ে, নবান্ন এলাকা সহ বিভিন্ন জায়গার দেখা যায় ওই পোস্টার ও ফ্লেক্সগুলি। রাজীবের ছবির সঙ্গে কোথাও লেখা, 'আমরা রাজীব পন্থী', 'আমরা দাদার কর্মী', কোথাও লেখা, 'হাজার ভিড়ে একটাই জননেতা', 'আমরা দাদার সেবক', কোথাও আবার লেখা, 'আমাদের অনুপ্রেরণা দাদা', 'আমরা দাদার ভক্ত', আবার কোনও পোস্টারে লেখা, 'অন্যায় যেখানে প্রতিবাদ সেখানে', 'আমরা দাদার কর্মী'। অন্যদিকে নদিয়ার রানাঘাটেও (Ranaghat) দেখা ফ্লেক্স। তাতে লেখা, 'স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রতীক রাজীব ব্যানার্জী জিন্দাবাদ'। পরপর দুই দিন রাজীবের এই ধরনের পোস্টারে খুব স্বাভাবিক ভাবেই উত্তাপ বাড়তে শুরু করেছে বঙ্গ রাজনীতিতে।
প্রসঙ্গত শনিবার কলকাতার হরিদেবপুরে এক অরাজনৈতিক মঞ্চে অভিযোগের সুরে রাজীব বলেন, "যাঁরা যোগ্যতার সঙ্গে কাজ করছেন তাঁরাই প্রাধান্য পাচ্ছেন না। যোগ্যতার সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করেছি। সঙ্গে সঙ্গে পিছনের সারিতে ফেলে দিয়েছে।" তিনি আরও বলেন, "দক্ষতার সঙ্গে, যোগ্যতার সঙ্গে যাঁরা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে চান, তাঁদের প্রথম সারিতে থাকতে দেওয়া হয় না।" রাজীবের এই মন্তব্য ঘিরে রীতিমতো সরগরম হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। আর তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তারপরেই রবিবার শ্যামবাজার, উল্টোডাঙা, গিরিশ পার্ক, কাঁকুরগাছি সহ উত্তর কলকাতার বিভিন্ন জায়গাতে পোস্টার দেখা যার তাঁর নামে। সেই সমস্ত পোস্টারে কোথাও লেখা ছিল, 'কাজের মানুষ কাছের মানুষ', কোথাও আবার, 'ছাত্র যুবর নয়নের মণি' বলা হয় রাজীবকে।
এদিকে এই প্রসঙ্গে হাওড়া সদরের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের আরও এক মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, "এজেন্সিকে পয়সা দিলে সারা শহর জুড়ে, রাজ্য জুড়ে, সারা দেশ জুড়ে ব্যানার লাগানো যায়। কে কি ব্যানার লাগালো তাতে কিছু আসে যায় না। আমার কাজটাই আসল। প্রথম দিন থেকে দল করে আসছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আছি। দীর্ঘ দিন দীর্ঘ পথ অতিক্রম করেছি। কিন্তু কোনওদিন দলের বিরুদ্ধে এই ধরনের কথা বলিনি। মা-ও বলিনি। মাকে গালাগালিও দিইনি। যাঁরা মাকে গালাগালি করে তাদের সম্বন্ধে কি বলব! দিলীপ ঘোষের মতো একজন উশৃঙ্খল নেতা যদি কাউকে প্রশংসা করে সার্টিফিকেট দেন তবে সেটা তাঁর ডিমোশান"।
শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব যত বেড়েছে ততই পূর্ব মেদিনীপুর সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা এমনকি শহর কলকাতার বুকে দেখা গিয়েছে তাঁর নামে পোস্টার। যার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় নেপথ্যে রয়েছেন 'দাদার অনুগামী'রা। আর এবার সেই তালিকায় রাজীবও। রাজনৈতিক মহল মনে করছে দলের একের পর এক নেতা মুখ খোলায় এবং এই ধরনের পোস্টার ব্যানারের মধ্যে দিয়ে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ বিবাদের ছবিটাই বারে বারে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আর বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ধরণের দলীয় কোন্দর তৃণমূলের বিড়ম্বনা বাড়াতে পারে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।