বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তৃণমূলকে ক্ষমতা থেকে সরাতে আদা-জল খেয়ে নেমে পড়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। নতুন বছরের প্রথম দিনেই নিজের গড় কাঁথি ও নন্দীগ্রামে জোড়া সভা করলেন শুভেন্দু। সেখান থেকেই রীতিমত নিজের পুরনো দলকে হুঁশিয়ারি দিতে দেখা গেল নন্দীগ্রামের ভূমিপুত্রকে। দীর্ঘদিন ধরেই কলকাতা , হাওড়া-সহ আটকে রয়েছে রাজ্যের মোট ১১০টি পুরসভার ভোট। এনিয়ে শুভেন্দু অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকার ভোট করতে ভয় পায়। তাই পুরসভায় ভোট হতে দিচ্ছে না। এই প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটে পুরনো দলের দাদাগিরির প্রসঙ্গও টেনে আনেন শুভেন্দু।
এদিনও নিজের বক্তব্যে দক্ষিণ কলকাতা বনাম রাজ্যের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন নন্দীগড়ের প্রাক্তন বিধায়ক। কটাক্ষ করেছেন।তৃণমূল এখন দেড়জনের কোম্পানি হয়ে গেছে। আর অধিকারী পরিবারকে ছোট করতে নীচুস্তরের লোকজনকে গুরুত্ব দিচ্ছে। নিজের লড়াইকে ধর্মযুদ্ধ আখ্যা দিয়েছেন। রাজ্য সরকার দক্ষিণ কলকাতা ও ডায়মন্ড হারবার ছাড়া রাজ্যের আর কোথাও উন্নয়ন প্রকল্পের কথা ভাবে না সেই খোঁচাও দিয়েছেন নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক।
পাটিগণিত মেনেই প্লাস থেকে মাইনাস হবে TMC, গেমপ্ল্যান তৈরি শুভেন্দুর
গত ২৩ ডিসেম্বর কাঁথির ডরমেটরি ময়দানে তৃণমূল নেতৃত্ব সভা করে শুভেন্দুকে মীরজাফর তকমা দিয়েছিল। সেই প্রসঙ্গেই এদিন প্রণব মুখোপাধ্যায়কেও কাঁথির সভায় টেনে আনেন শুভেন্দু। দেশের প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি তার সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছিলেন তা মনে করিয়ে বলেন, 'শুভেন্দু বিশ্বাসঘাতক নয়'। এরপরেই নাম না নিয়ে ফিরহাদ হাকিম ও সৌগত রায়কে নাম না করেই আক্রমণ করেন শুভেন্দু। প্রবীন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছিলেন, "ওঁর বিজেপির সঙ্গে কী ডিল হয়েছে কে জানে!" সেই কথার রেশ ধরেই এদিন সভায় শুভেন্দু বলেন, ডিল হয়েছে প্রতি বছর স্কুল সার্ভিসের পরীক্ষা হবে রাজ্যে। ছেলেমেয়েরা চাকরি পাবে। টেট পরীক্ষা হবে প্রতিবছর। ২ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকার ঠিকা কাজের বদলে বাংলার ছেলেমেয়েরা সরকারি চাকরিতে ভদ্রস্থ মাইনে পাবেন। 'ঢপের চপ' স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের পরিবর্তে আয়ুষ্মান ভারত বাস্তবায়িত হবে। প্রধানমন্ত্রী কিষাণ নিধি প্রকল্পের সুবিধা পাবেন বাংলার কৃষকরা। রাজ্যে কায়েম হবে সুশাসন। আর তাই জন্যই চাই কেন্দ্র ও রাজ্যে এক সরকার।
কাঁথিতে 'যোগদান মেলা'য় ভাই সৌমেন্দু ও ১৪ বিদায়ী কাউন্সিলর ছাড়াও ৪ থেকে ৫ হাজার মানুষ বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি করেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিনই সভা রয়েছে শুভেন্দুর। দুই মেদিনীপুরের নিচের ও মাঝের তলার তৃণমূল নেতা কর্মীরা এই সব সভায় বিপুল সংখ্যায় বিজেপিতে যোগ দেবেন বলেই আশা গেরুয়া শিবিরের। আর তাই বছরের প্রথম দিন প্রাক্তন দলকে শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি ৩০ জানুয়ারির মধ্যে এমন পরিস্থিতি করব যে বিজেপি এখানে ১০০ শতাংশ আসনে জিতবে।