চলতি মাসের ৭ তারিখ সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ইন্ডিয়ান অয়েলের তরফে হলদিয়ায় এই অনুষ্ঠান আয়োজিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। এর আগে নেতাজি জয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে 'জয় শ্রীরাম ধ্বনি'র পর মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ না দেওয়া নিয়ে অনেক রাজনৈতিক চর্চা হয়েছে। এই আবহে সাত তারিখে হলদিয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাবেন কিনা তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। তবে মোদীর মঞ্চে মমতার উপস্থিতির থেকেই বেশি জল্পনা শুরু হয়েছিল অভিনেতা দেবকে নিয়ে। অনুষ্ঠানে ঘাটালের সাংসদ দেবকেও আমন্ত্রণ জানান হয়েছিল। আর তাই নিয়েই ভোটের আগে বঙ্গ রাজনীতিতে নতুন জল্পনা শুরু হয়েছিল, তবে কি এবার দেবও গেরুয়া শিবিরের পথেই হাঁটছেন।
সরকারি অনুষ্ঠানের প্রোটোকল মেনেই প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণপত্র পেয়েছেন তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী এবং কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী। দিব্যেন্দু আগেই জানিয়েছেন, এটা সরকারি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র। কেন্দ্রের ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি সেখানে হাজির থাকবেন। শুভেন্দুর মত দিব্যেন্দু এবার বিজেপিতে যাচ্ছেন তা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই চর্চা চলছে। প্রোটোকল মেনেই সাংসদদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও দলবদলের আবহে এই পদক্ষেপ কেবলই নিয়মরক্ষার বলে মনে করছেন না রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। কারণ শাসক দলের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে গোটা অধিকারী পরিবারের। শিশির অধিকারীকে একাধিক পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে তৃণমূল । দলবদলের জল্পনা ইতিমধ্যেই উসকে দিয়েছেন দিব্যেন্দ্যুও। ১০ ফেব্রুয়ারি লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা তমলুকের সাংসদের। ওইদিন তিনি সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে৷ এই আবহে মোদীর অনুষ্ঠানে ডাক পাওয়া ঘাটালের সাংসদ দেবকে নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছিল। যিনি নিজে শুভেন্দুর খুড়তুতো ভাই হন। সেই জল্পনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁর একটি ট্যুইট। যেখানে বিজেপি সাংসদ দাবি করেন মোদীর সভায় শিশির অধিকারীর সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন দেব স্বয়ং।
দেবের গেরুয়া গমন নিয়ে যখন জোর আলোচনা বঙ্গ রাজনীতিত তখন তার অবসান ঘটালেন ঘাটালের সাংসদ নিজেই। সৌমিত্রকে ট্যুইট করেই জবাব দিলেন অভিনেতা। জানিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে তিনি অংশ নিতে পারছেন না। দেব লিখেছেন, "প্রিয় সৌমিত্র, আপনার পথচলা এবং সাফল্য দেখে আমি গর্বিত। আমায় ক্ষমা করবেন কারণ ওই অনুষ্ঠানে থাকতে সক্ষম হব না, তবে আমন্ত্রণপত্র পেয়ে আমি বাধিত। আমাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা হলেও আপনার জন্য ভালবাসার এবং বিশেষ জায়গা থাকল। "
সম্প্রতি দিল্লি গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। শোনা যাচ্ছে টলিপাড়ার আরও কয়েকজন অভিনেতাও এবার গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাতে পারেন। এই আবহে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে দেবের আমন্ত্রণ নতুন সম্ভাবনাই উস্কে দিচ্ছিল। তবে আপাতত সেই জল্পনায় নিজেই জল ঢাললেন তৃণমূলের অভিনেতা সাংসদ।