হাওড়ায় দলের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই মাথা ব্যাথা বাড়িয়েছে তৃণমূলের (TMC) শীর্ষ নেতৃত্বের। লক্ষ্মীরতন শুক্লার পদত্য়াগ, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Rajib Banerjee) ক্ষোভ সহ বিভিন্ন ঘটনা, বারেবারেই প্রকাশ্যে এনে দিয়েছে হাওড়ায় (Howrah) তৃণমূলের ভিতরের অনৈক্যের চিত্র। আর যার ফায়দা তুলতে ময়দানে নেমে পড়েছে বিজেপি (BJP)। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে হাওড়ায় বিরাট মিছিল করল তৃণমূল। রবিবার ডুমুর জলা স্টেডিয়াম থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত ওই মিছিলে দলে দলে যোগ দেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা। মিছিলের নেতৃত্ব দেন অরূপ রায় (Arup Roy) ও প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও মিছিলে উপস্থিত থাকলেন জটু লাহিড়ী, ব্রজমোহন মজুমদার, গুলশন মল্লিক, ভাস্কর ভট্টাচার্য সহ একাধিক শীর্ষ স্থানীয় নেতৃত্ব। তবে এদিনের মিছিলে দেখা যায়নি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বৈশালী ডালমিয়া ও লক্ষ্মীরতন শুক্লাকে।
ইতিমধ্যেই হাওড়ায় মিছিল করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দাবি করেন, 'গঙ্গার এই পারে মেদিনীপর থেকে বীরভূম পর্যন্ত তৃণমূলের ঝান্ডা ধরার লোক পাওয়া যাবে না।' এদিন দিলীপের সেই মন্তব্যকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অরূপ রায় বলেন, "২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জেলায় ১৬ - ০ ব্যবধানে জিতেছিল তৃণমূল। ২০২১-এও ১৬ - ০ করে দেখিয়ে দেব এখানে বিজেপির পতাকা ধরার লোক নেই।" তবে রাজীব বৈশালীরা কেন অনুপস্থিত সেই প্রশ্নের উত্তের অরূপ বলেন, "সকলকে আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছিল, যাঁরা আন্তরিকভাবে দল করতে চান তাঁরা সকলেই উপস্থিত হয়েছিলেন।"
তবে অরূপ রায় নির্বাচনে সবকটি আসনে জেতার দাবি করলেও রাজীব, বৈশালীদের অনুপস্থিতি হাওড়ায় তৃণমূলের সাংগঠনিক একতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। প্রসঙ্গত মাঝে দিন কয়েক চুপ থাকার পর শনিবার ফের ফেসবুক লাইভে একশ্রেণির নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "আমি যখন মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করি, তখন কতিপয় নেতা এটাকে নিয়ে অপব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছেন। এতে দুঃখ লাগে। আমি মানুষের কাছে দায়বদ্ধ।" তাঁর প্রশ্ন, "আমি কিছু বললে সেটা নিয়ে কথা হচ্ছে, কিন্তু ভালো কাজ করতে চাইলে সেটায় যখন বাধা দেওয়া হচ্ছে, তাই নিয়ে তো কিছু বলা হচ্ছে না?" তিনি সাফ বলেন, "মানুষের কাজ করার জন্য যেটা আমার কাছে কমফর্টেবল মনে হয়েছে সেটাকেই প্রাধান্য দিয়েছি। যা বলেছি দলের মঙ্গলের জন্য বলেছি।" তবে দলের অপর নেতা তথা হাওড়ার সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য এদিনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে থাকার কথাই জানিয়েছেন। সেক্ষেত্রে এখন দেখার আগামিদিনে কোথায় দাঁড়ায় হাওড়া জেলা তৃণমূল।