Advertisement

মহাযুদ্ধ সম্মুখে, দেখে নিন প্রথম দফার ভোটে ৫ জেলার ৩০ আসনের যাবতীয় খুটিনাটি

দেখতে দেখতে এসে গেল আটদফার নির্বাচনের সূচনার দিন। শনিবার সকালে একুশে বাংলার মসনদের লড়াইয়ে প্রথমবার ভোটের লাইনে দাঁড়াবে রাজ্যবাসী। তবে প্রথমদফায় ২৭ মার্চ ভোট অনুষ্ঠিত হতে চলেছে রাজ্যের ৫ জেলার ৩০টি বিধানসভা কেন্দ্রে। একদা বামেদের দুর্গ হিসাবে পরিচিত বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পূর্ব মেদিনীপুরের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা দিয়েই শুরু হচ্ছে রাজ্যের ভোটপর্ব। গত দুটি বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের সরিয়ে এখানে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের একচ্ছত্র আধিপত্য। তবে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই আদিবাসী এলাকায় বিজেপির সাফল্য সকলের চোখ ধাঁধিয়ে দিয়েছিল।

Phase 1 election
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 23 Mar 2021,
  • अपडेटेड 5:15 PM IST
  • দেখতে দেখতে এসে গেল আটদফার নির্বাচনের সূচনার দিন
  • শনিবার সকালে একুশে বাংলার মসনদের লড়াইয়ে প্রথমবার ভোটের লাইনে দাঁড়াবে রাজ্যবাসী
  • প্রথমদফায় ২৭ মার্চ ভোট অনুষ্ঠিত হতে চলেছে রাজ্যের ৫ জেলার ৩০টি বিধানসভা কেন্দ্রে

দেখতে দেখতে এসে গেল আটদফার নির্বাচনের সূচনার দিন। শনিবার সকালে একুশে বাংলার মসনদের লড়াইয়ে প্রথমবার ভোটের লাইনে দাঁড়াবে রাজ্যবাসী। তবে প্রথমদফায় ২৭ মার্চ ভোট অনুষ্ঠিত হতে চলেছে রাজ্যের ৫ জেলার ৩০টি বিধানসভা কেন্দ্রে। একদা বামেদের দুর্গ হিসাবে পরিচিত বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পূর্ব মেদিনীপুরের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা দিয়েই শুরু হচ্ছে রাজ্যের ভোটপর্ব। গত দুটি বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের সরিয়ে এখানে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের একচ্ছত্র আধিপত্য। তবে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই আদিবাসী এলাকায় বিজেপির সাফল্য সকলের চোখ ধাঁধিয়ে দিয়েছিল। 

শনিবার যে ৩০টি আসনে বিধানসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হতে চলেছে তাতে ২০১৬ ভোটে ২৭টি আসনই গিয়েছিল তৃণমূলের দখলে। গতবার এই অঞ্চল থেকে ২টি গিয়েছিল কংগ্রেসের ঝুলিতে আর একটি পেয়েছিল বাম শরিক আরএসপি। উল্লেখ্য গতবারও এবারের মতোই জোট করে ময়দানে নেমেছিল বাম-কংগ্রেস। তবে একুশের চিত্রটা একেবারেই আলাদা। এবার জোট নয় তৃণমূলের প্রধান বিরোধী হিসাবে উঠে এসেছে বিজেপি। গত লোকসভা ভোটের ফালফলের নিরিখে এই ৩০টি আসনেই তৃণমূলকে কড়া টক্কর দেবে গেরুয়া শিবির।

 

 

প্রধান ৫ রণক্ষেত্র

পুরুলিয়া
এরাজ্যে প্রথম দফার নির্বাচনে নাম রয়েছে পুরুলিয়ার। এখানকার বিদায়ী বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায় সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তিনিই এবার গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী পুরুলিয়া কেন্দ্র থেকে।  ২০১৬ নির্বাচনে তৃণমূলের জ্যোতি প্রসাদ সিং-কে পরাজিত করে পুরুলিয়া আসনটি ছিনিয়ে নেন সুদীপ মুখোপাধ্যায়। গতবার এই আসনে কংগ্রেস পেয়েছিল ৪৪.৫৮ শতাংশ ভোট। সেখানে তৃণমূলের ঝুলিতে গিয়েছিল ৪১.৮৯ শতাংশ ভোট এবং বিজেপির ঝুলিতে ছিল ৬.৯৯ শতাংশ ভোট। এবার কংগ্রেসের হয়ে ভোটের ময়দানে নেমেছেন পার্থপ্রতীম বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শাসক তৃণমূল টিকিট দিয়েছে সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে। 

Advertisement

 

 

বাঘমুন্ডি
এই আসনে তৃণমূলের সুশান্ত মাহাতোর মূল প্রতিপক্ষ বিজেপির জোটসঙ্গী আজসুর (AJSU) অশুতোষ মাহাতো এবং কংগ্রেসের দু'বারের বিধায়ক নেপালচন্দ্র মাহাতো।  ২০১৬ সালে ৪৭.১৬ শতাংশ ভোট পেয়ে এই আসন থেকে জেতে কংগ্রেস। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তৃণমূলের দখলে যায় ৪২.৫৯ শতাংশ ভোট। বিজেপি পেয়েছিল ৫.৯৬ শতাংশ ভোট। তবে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর পরিস্থিতি বদলে গেছে। গতবার পুরুলিয়া থেকে লোকসভা ভোটে জিতে সাংসদ হন জ্যোতির্ময় মাহাতো। পুরুলিয়া লোকসভা আসনেরই অন্তর্গ বাঘমুন্ডি বিধানসভা। এই বিধানসভা থেকেই উনিশের ভোটে ৫০ শতাংশ ভোট পান বিজেপি প্রার্থী।  দ্বিতীয় স্থানে থাকা তৃণমূলের দখলে গিয়েছিল ২৪.১২ শতাংশ ভোট।

বিরোধীদের অস্ত্র আমফান দুর্নীতি, ভোটবাক্সে কোন ঝড়ের অপেক্ষায় সাগর?
একুশের ভোট ভরসা মেয়েরাই, 'দিদি'র দেখানো পথেই গেমপ্ল্যান শাহের?

খড়গপুর

খড়গপুর বিধানসভা আসনটি মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। বর্তমানে মেদিনীপুর লোকসভার সাংসদ হলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। গত বিধানসভায় এই আসন থেকে জিতেছিলেন দিলীপবাবু। কিন্তু তিনি ২০১৯ সালে লোকসভার সাংসদ হওয়ায় এখানে পুনঃনির্বাচন হয়। আর তাতে জয় ছিনিয়ে নেন তৃণমূলের দীনেন রায়। সেবার বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করে হেরে যান তপন ভুঁউঞা। 

মেদিনীপুর
প্রথমদফার নির্বাচনে আরও এক হাইপ্রফাইল আসন হোল মেদিনীপুর। গতবার এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূলের মৃগাঙ্ক নাথ মাইতি। তাঁর মৃত্যুর পর এই আসনে অভিনেত্রী জুন মালিয়াকে এবার দাঁড় করিয়েছে তৃণমূল। জুনের প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপির সমিতকুমার দাস। 

খেজুড়ি
এবার এই আসন থেকে তৃণমূল ভোট ময়দানে নামিয়েছে পার্থপ্রতিম দাসকে। তাঁর বিরুদ্ধে লড়ছেন বিজেপির সান্তনু প্রামাণিক। অন্যদিকে সিপিএ-এর হয়ে প্রার্থী হয়েছেন হিমাংশু দাস। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এই আসনটি তফসিলি জাতিদের জন্য সংরক্ষিত। এই বিধানসভা আসনি কাঁথি লোকসভার অন্তর্গত, যার বর্তমান সাংসদ শিশির অধিকারী। গত রবিবারই অমিত শাহের সভায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শিশিরবাবু। সেই কারণে তৃণমূল এবার গতবারের বিধায়ক তথা শিশির ঘনিষ্ঠ  রঞ্জিত মণ্ডলকে টিকিট দেয়নি বলে মনে করা হচ্ছে।

 

 

ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে  লড়াই যে কেন্দ্রগুলিতে
প্রথম দফার নির্বাচনে পুরুলিা এবং ছাতনায় হতে চলেছে সমানে সমানে টক্কর। কারণ গতবার এই দুটি আসনেই জয়ের মার্জিন ছিল খুব কম। ২০১৬ সালের নির্বাচনে এই দুটি আসনেই ৫ হাজার ভোটেরও কম ব্যবধানে জয়ের মার্জিন নির্ধারিত হয়েছিল। পুরুলিয়া থেকে জোটপ্রার্থী কংগ্রেসের সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের জয়ের ব্যবধান ছিল মাত্র ৪,৯৯১ ভোট। অন্যদিকে ছাতনা কেন্দ্রে আরএসপি'র ধীরেন্দ্রনাথ লায়েক তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের সুভাষ বটব্যালকে পরাজিত করেন ২.৪১৭ ভোটে।

 

 

অপরাধ রেকর্ড রয়েছে কতজনের?
প্রথম পর্যায়ের নির্বাচনে প্রতি চারজন প্রার্থী মধ্যে একজনের অপরাধমূলক রেকর্ড রয়েছে।  অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (ADR) নামের একটি সংস্থা পরিসংখ্যান  বিশ্লেষণ করে জানাচ্ছে, ৩০টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ১০টিতে এমন ৫জন প্রার্থী রয়েছে যাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চলছে। কেবল খেজুরি আসনেই এমন প্রার্থীর সংখ্যা ৩৪। এরপরেই রয়েছে শালবনি, এখানে ২০দন প্রার্থীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। অন্যদিকে গড়বেতায় ৮ প্রার্থীর বিরুদ্ধে রয়েছে অপরাধমূলক রেকর্ড।

 

 

 

Advertisement

অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (ADR)-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী  প্রথম পর্যায়ে ১৯১ জন প্রার্থীর মধ্যে ৪৮ জনের বিরুদ্ধে চলছে ফৌজদারি মামলা রয়েছে, এদের মধ্যে গুরুতর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে ৪২ জনের বিরুদ্ধে (২২ শতাংশ)। গুরুতর ফৌজদারি মামলাগুলি অজামিনযোগ্য এবং এতে দোষী প্রমাণিত হলে ৫ বছর কারাদণ্ডও হতে পারে। প্রথম দফার ভোটে ১৯জন প্রার্থীর (মোট প্রার্থীর ১০ শতাংশ) কোটিপতি। অন্য়দিকে ৪জন প্রার্থীর কোনও সম্পদ নেই বলে রিপোর্চে উল্লেখ করা হয়েছে। ২৯৪ আসনের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় আট দফায় ভোটগ্রহণ হবে। যার সূচনা হচ্ছে ২৭ মার্চ। শেষ দফার ভোটগ্রহণ ২৯ এপ্রিল। গণনা হবে ২ মে। 

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement