কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের টাকা পেতে বেজায় সমস্যায় পড়েছেন বাঁকুড়ার শালতোড়ার এই বাসিন্দা। নাম বিভ্রাটের কারণে তাঁর টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছিল।
তারপর অনেক বলেকয়ে করে সেই টাকা উদ্ধার হয়। এরপর দ্বিতীয় দফার টাকা এখনও আটকে রয়েছে। প্রশাসনের কাছে বার বার গিয়েও সুরাহা হয়নি।
তিনি চন্দনা বাউড়ি। বাঁকুড়া শালতোড়ার বিজেপি প্রার্থী। এবার বিধানসভা ভোটে তাঁকে টিকিট দিয়েছে দল। তাঁর স্বামী শ্রাবণ বাউরি বিজেপি কর্মী। আর বিজেপির সঙ্গে চন্দনাদেবীর যোগাযোগ মোটামুটি ২০১৩ সাল থেকে।
তখন তাঁরা স্থানীয় ভোট অর্থাৎ পঞ্চায়েতে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। কিন্তু বাধা পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ। আর ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে বিস্তর অভিযোগ। বিরোধীদের অভিযোগ, তাঁরা প্রার্থী দিতে পারেনি। আর প্রার্থী দিলেও তা প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছিল এবং হুমকিও দেওয়া হয়েছিল।
বছর আটেক ধরে বিজেপি করা শুরু করেন এবং ধাপে ধাপে তার উত্থান। প্রথমে ছিলেন। গঙ্গাজলঘাটি উত্তর মণ্ডলের ভারতীয় জনতা মহিলা মোর্চার সাধারণ সম্পাদক। এরপর তাঁর কাজের ভিত্তিতে তাঁকে ওই মন্ডলের বিজেপির সাধারণ সম্পাদক করা হয়। বুধবার প্রচারের বেরোনোর আগে জানাচ্ছিলেন সে কথা।
তাঁর স্বামী রাজমিস্ত্রি। বর্ষাকালে কাজের লোক কম থাকে। তাই স্বামী জোগাড়ের কর্মী পেতেন না। সেইজন্য নিজেও বেরিয়ে পড়তেন স্বামীর কাজে সাহায্য করতে।
ইতিমধ্যে নেমে পড়েছেন প্রচারে। বিভিন্ন জায়গায় সভা করে বেড়াচ্ছেন। বাড়িতে রয়েছে ২ মেয়ে এবং ১ ছেলে। বড় মেয়ে বর্ণা রাজামেলা গার্লস হাই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণী পড়ুয়া। ছোট মেয়ে শ্রেয়া। কেলাই প্রাইমারি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে। আর ছেলের নাম স্বপ্নদ্বীপ। তার বয়স ৪ বছর।
আর্থিক অনটনের পরে জন্য উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হলেও পরীক্ষা দিতে পারেননি। মাধ্যমিক পরীক্ষার দু'দিন আগে বাবা মারা গিয়েছিলেন। তবে পিতৃবিয়োগের শোক নিয়েই তিনি পরীক্ষা উতরে দিয়েছিলেন।
প্রচারের বিষয় কী কী হতে পারে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। তাঁর দাবি কয়লা চুরি থেকে চাল চুরি হচ্ছে-সবই হচ্ছে। ১০০ দিনের কাজ পাওয়া যাচ্ছে না। আর কাজের মজুরি দেওয়া হচ্ছে না। এছাড়া এখানে জলের সমস্যা রয়েছে। রাস্তাঘাট নেই। তিনি বলেন, মানুষের স্বার্থে কাজ করব। মহিলাদের জন্য কিছু করতে চাই।
টাকার অভাবে বাড়ি পাকা করতে পারেননি। আপাতত সেটি টালির বাড়ি। বাইরে ডাঁই করে রাখা রয়েছে ইঁট। অসম্পূর্ণ বাড়ির ব্যাপারে তিনি দাবি করেন, নাম বিভ্রাটের কারণে অন্য একজনের একাউন্টে টাকা চলে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সাহায্যের টাকা। অথচ সেই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য আমার নাম, ছবি সব নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর বার বার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়ে, অনেকবার বলাকওয়া করে সেই কিস্তির প্রথম টাকা উদ্ধার হয়। এবার দ্বিতীয় দফায় যে টাকা পাওয়ার কথা তা আটকে রয়েছে।