ঠিক ১০ বছর আগের নন্দীগ্রাম স্মৃতি উস্কে দিল একুশের বিধানসভা নির্বাচন। তৎকালীন প্রেক্ষাপট আলাদা থাকলেও লড়াই একটাই। ফের পরিবর্তন। চাকরি-কৃষক উন্নয়ন-বেকার সমস্যা নিয়ে বাম সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পেয়েছিলেন বিপুল জনসমর্থন। এবার নন্দীগ্রামে অবশ্য ত্রিমুখী লড়াই। বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী বনাম তৃণমূলের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম সংযুক্ত মোর্চার মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। একুশের নির্বাচনে এই ভোট 'ফ্যাক্টর' না হলেও হাইভোল্টেজ তো বটেই।
নির্বাচনে এই প্রথম হলেও যুব রাজনীতিতে তিনি পোড় খাওয়া। ভোটের লড়াইয়ের মঞ্চে হেভিওয়েট প্রার্থীদের বিরুদ্ধে লড়াই যে সহজ নয় একথা জানে রাজনৈতিক মহল। তবে কুলটির চলবলপুর গ্রামের মেয়ে মীনাক্ষী কিন্তু এই লড়াইয়ে 'নির্ভীক'। আজতক বাংলার সঙ্গে কথোপকথনে বাম নেত্রী বলেন, "কোনও ভয়, দোটানা কিছু নেই। ভোটের ময়দানে এই প্রথমবার লড়ছি এটা ঠিক কিন্তু এদের বিরুদ্ধেই তো গত দশক ধরে লড়াই করছি। তৃণমূল-বিজেপির বিরুদ্ধে, চাকরি, বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে গিয়েছি। শুধু মঞ্চ বদলেছে, অন্য স্টেজে এসেছি। লড়াইটা একই আছে।"
আরও পড়ুন, নন্দীগ্রামে মমতা বনাম মীনাক্ষী! এই যুব মুখকেই কেন ভরসা বামেদের?
যদিও এবার লড়াই বামেদের একার নয়। কংগ্রেস এবং আব্বাস সিদ্দিকীর দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সংযুক্ত মোর্চা হিসেবে লড়াই করছে তাঁরা। ডিওয়াইএফআইয়ের (DYFI) রাজ্য সভানেত্রী ও সিপিআইএমের রাজ্য কমিটির সদস্য মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে 'নন্দীগ্রামের মুখ' করার লক্ষ্য একটাই যুব সম্প্রদায়ের আস্থা কুড়োনো। প্রচারে নেমে সেই সফলতা কি পেলেন বাম নেত্রী?
মীনাক্ষীর কথায়, "যুব বলতে কী বোঝায়? নির্দিষ্ট বয়স। সেই দলে সকলে রয়েছে, গৃহবধূ, চাকরি না পাওয়া যুবক, ইটভাটায় কাজ করা ছেলেটি -আমরা তাঁদের কাছে পৌঁছেছি। সকলে মুখিয়ে আছে পরিবর্তনের জন্য। যাঁরা মুখের গ্রাস, হাতের কাজ কেড়েছে, দুর্নীতি করেছে, কেবল সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে মুখিয়ে রয়েছে। তাদের কারণে কেউ কেউ ভোট বিমুখ হয়েছে ঠিকই, রাজনীতি বিমুখ নয়। দমবন্ধ পরিবেশ থেকে তাঁরাও মুক্তি চায়।"
আরও পড়ুন, "গরিবের শোষণ পাপ, ক্ষমা চেয়ে নাহি মাফ", হুঁশিয়ারি পৃথা তায়ের
কিন্তু এই মঞ্চের নাম নন্দীগ্রাম! ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটনো মমতার মসনদ দখলের উত্থান এই মাটি থেকেই। এবার সেই মাটিতেই ফের ফিরেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। প্রচার করছেন, 'বাংলা নিজের মেয়েই চায়'। নন্দীগ্রামকে 'ছোট বোন' আত্মীয়তায় বেঁধে ইতিমধ্যেই শুরু করেছেন প্রচার। বামেদের 'বাংলার মেয়ে' কি পারবে মমতা ম্যাজিককে রুখতে?
যদিও বাম নেত্রী বলেন, "মমতা ম্যাজিকের বিরুদ্ধে মীনাক্ষী ম্যাজিক কাজ করবে না। বরং কর্মসংস্থানমুখী ম্যাজিক কাজ করবে। পিছিয়ে পড়া রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রগতিশীলতার ম্যাজিক কাজ করবে। গণতন্ত্রের পক্ষের ম্যাজিক কাজ করবে। এই ম্যাজিক করার জন্য নন্দীগ্রামের মানুষ, পশ্চিমবঙ্গের মানুষ মুখিয়ে রয়েছে।"