এক সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ৫০ হাজার ভোটে হারানোর চ্যালেঞ্জ করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এবার পালটা শুভেন্দু অধিকারীকে নন্দীগ্রামে ৫০ হাজার ভোটে হারানো হবে বলে চ্যালেঞ্জ করলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। উত্তরপাড়ায় অভিনেতা তথা তৃণমূল প্রার্থী কাঞ্চন মল্লিকের (Kanchan Mullick) সমর্থনে একটি সভায় এসে কল্যাণ বলেন, "নন্দীগ্রামে (Nandigram) তৃণমূলের গদ্দার শুভেন্দু অধিকারীকে ৫০ হাজার ভোটের ব্যবদানে হারাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।" একইসঙ্গে ডোমজুরে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ২৫ হাজারের বেশি ভোটে হারানো হবে বলে দাবি করেন তিনি। কল্যাণ বলেন , "শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর ঘোষালের মতো নেতারা তৃণমূল ছাড়ায় ভালই হয়েছে। তাতে বাংলার সমস্ত তৃণমূল কর্মীরা একজোট হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারছেন।" একইসঙ্গে এই তিনজনের বিরুদ্ধে কল্যাণের অভিযোগ, "সেচ দফতরে নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে ঠিকাদারদের থেকে টাকা অনেক টাকা নিয়েছেন তাঁরা।"
এদিন লকেট চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন কল্যাণ। তিনি বলেন, "২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে যদি গলার লকেটকে পায়ের নুপুর না বানিয়েছি তো আমার নাম কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় নয়।" দিন কয়েক আগে কল্যাণের যে ভিডিও লকেট শেয়ার করেছেন সেই প্রসঙ্গে শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ বলেন, "লকেট অর্ধ সত্য প্রকাশ করেছেন। এর দ্বারা লকেট চট্টোপাধ্যায়ের বিকৃত মানসিকতা প্রকাশ পাচ্ছে।" এরপরেই হুগলির সাংসদের উদ্দেশ্যে কার্যত হুমকির সুরে কল্যাণ বলেন, লকেটেরও অনেক অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও তাঁর কাছে আছে। যার মধ্যে মাদক মামলায় ধৃত পামেলা গোস্বামীর সঙ্গে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠতম মুহূর্তের ছবিও তাঁর মোবাইলে আছে বলে দাবি করেন কল্যাণ। তৃণমূল সাংসদ বলেন, "২ মে ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর যখন বিজেপির নেতানেত্রীরা ইঁদুরের মতো গর্তে ঢোকার চেষ্টা করবেন, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দল রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজাবে না, বরং ওই ইঁদুরদের সঠিক জায়গায় পাঠানোর ব্যবস্থা করবে।"
লকেট চট্টোপাধ্যায়ের ট্যুইট
অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধে কল্যাণ বলেন," নিজেকে চা ওয়ালা বলে জনতার সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করেন মোদী। কিন্তু গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে তাঁকে কোনওদিন রাজনীতিতে দেখা যায়নি। অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূমে অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। হরিণঘাটার দুধের কাউন্টারে কাজ করে এবং গৃহশিক্ষকতা করে নিজের পরিবারের ভরণপোষণ চালিয়েছেন তিনি। কিন্তু কখনও নিজেরে দারিদ্র্যের কথা শুনিয়ে মানুষের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করেননি।" কল্যাণ বলেন, "শুভেন্দুদের মতো নেতাদের প্রধানমন্ত্রী বাঘ মনে করেছেন, কিন্তু আসলে ওঁরা শিয়াল। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা বাংলার বিধায়ক-সাংসদদের কিনতে বেরিয়েছেন, আর তৃণমূলের গদ্দারেরা বিক্রি হওয়ার জন্য তাঁদের পিছনে লাইন দিয়েছেন।" তৃণমূল সাংসদের দাবি, "২০২১-এ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০০-র বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় এলে ২০২৪-এ মোদীর গদি নড়ে যাবে। তাই প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, নির্বাচন কমিশন ও এজেন্সিগুলি একজোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূল কংগ্রেসের আটকানোর চেষ্টা করছেন।"