পশ্চিমবঙ্গের করোনা পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক। ভোটের কারণে লাখ লাখ মানুষের জমায়েত হচ্ছে। সেকারণে বাড়ছে সংক্রমণ। এমন মত প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকদের একাংশ। এই পরিস্থিতিতে করোনার সংক্রমণ আটকাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গতকাল এরাজ্যে ৮৪১৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। মৃতের সংখ্যা ছিল ২৮।
কোন দল কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দেখব একনজরে
বিজেপির পদক্ষেপ
পশ্চিমবঙ্গে এখনও ৩ দফার ভোট বাকি। ২২, ২৬ ও ২৯ এপ্রিল এই ৩ দফার ভোট হবে। তার আগে রাজ্যে নরেন্দ্র মোদীর ৬টি ও অমিত শাহর ৮টি জনসভা হওয়ার কথা।
গতকাল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা তাঁর দলের কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই ভোট হবে। তাই 'করোনা মুক্ত বুথ' এই প্রচার অভিযান চালাতে হবে। সেজন্য বিভিন্ন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের হেল্পলাইন নম্বর জারি করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, করোনা আক্রান্তদের সবরকম সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।
রাহুল গান্ধির জনসভা বাতিল
পশ্চিমবঙ্গের করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এখানে আর কোনও জনসভা করবেন না বলে গতকাল ঘোষণা করেছেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধি। অন্য রাজনৈতিক দলগুলিকেও একই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা আবেদন জানিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত, এখনও পর্যন্ত মাত্র একবার রাজ্যে এসে জনসভা করে গিয়েছেন রাহুল। আগামী ৩ দফার ভোটের আগে তাঁর রাজ্যে আসার কথা ছিল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, রাহুলের জনসভা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তের জেরে বেশ চাপে পড়েছে তৃণমূল ও বিজেপি। কারণ, কোভিড সংক্রমণের কথা মাথায় লেখে রাহুল সভা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই এখন বিজেপি ও তৃণমূল সভা করলে তাদের সমালোচিত হতে হবে।
তৃণমূলের সিদ্ধান্ত
আগামী ৩ দফার ভোটের জন্য তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১৭টি জনসভা করার কথা ছিল। কিন্তু, বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে কলকাতার সমস্ত জনসভা বাতিল করেছেন তিনি। গতকাল এই নিয়ে রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন জানান, জেলার যে সভাগুলি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করার কথা আছে। সেগুলি হবে। তবে অল্প সময়ের জন্য। আর কলকাতার প্রচারের জন্য ২৬ তারিখ একটি প্রতীকী সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
করোনার মধ্যেই রাজ্যে চলেছে প্রচার
গোটা দেশের সঙ্গে সঙ্গে চলতি মাসের প্রথম থেকেই রাজ্যে করোনার সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। তারপরও রাজনৈতিক দলগুলি ভোট প্রচার চালিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ ছিল, করোনা বিধি মেনে প্রচার করতে হবে। কিন্তু, সেই নির্দেশ মানতে দেখা যায়নি দলগুলিকে। সংযুক্ত মোর্চার তরফে প্রথম সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, করোনার সংক্রমণের কারণে তারা আর বড় সভা করবে না। এরপরই নড়েচড়ে বসে অন্য রাজনৈতিক দলগুলি। তাদের তরফেও সূচিতে কাটছাঁট করা হয়।