Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: BSF-র কাঁধে ঝুলছে বাংলাদেশি নাগরিকের লাশ? ভাইরাল ছবির সত্যতা জানুন

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, কয়েকজন বিএসএফের জওয়ান একজনের মৃতদেহ কাঁধে করে নিয়ে যাচ্ছেন। দাবি করা হচ্ছে, সেই দেহটি একজন বাংলাদেশি নাগরিকের।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 17 May 2024,
  • अपडेटेड 10:13 AM IST

বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আর এই অবৈধভাবে কাঁটাতারের বেড়া পেরতো গিয়ে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারান অনেকেই। প্রায় সেই সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হয় সংবাদমাধ্যমেও।

তবে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি নাগরিকের প্রাণ হারানোর বিশেষ পোস্ট। যেখানে একটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, কয়েকজন বিএসএফের জওয়ান একজনের মৃতদেহ কাঁধে করে নিয়ে যাচ্ছেন। সরাসরি উল্লেখ না করা হলেও ছবিটি পোস্ট করে ইঙ্গিত করা হচ্ছে, ওই মৃতদেহটি একজন বাংলাদেশি নাগরিকের। যাকে হত্যা করেছে বিএসএফ।

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ছবিটি পোস্ট করে লিখেছেন, “ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিএসএফ এর কাঁধে ঝুলছে বাংলাদেশের লাশ!”

এই একই ছবি ব্যবহার করে অপর এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন “ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিএসএফ এর কাঁধে ঝুলছে বাংলাদেশের মানুষের লাশ! এ শুধু একজনের লাশ নয় ওদের কাঁধে ঝুলছে পুরো বাংলাদেশ! সীমান্তের মানুষগুলোর বেঁচে থাকার কি কোন অধিকার নাই এ নিয়ে এদেশের ছাত্র সমাজের কোন প্রতিবাদে উদ্বেগ নেই।” (সব ক্যাপশনের বানান অপরিবর্তিত।) এমনই একটি পোস্টের আর্কাইভ এখানে দেখা যাবে।

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, বিএসএফের জওয়ানদের কাঁধের মৃতদেহটি কোনও বাংলাদেশি নাগরিকের নয়। বরং সেটি ছত্তীসগঢ়ে পুলিশ এবং বিএসএফের যৌথ অভিযানে নিহত মাওবাদীর দেহ। 

কীভাবে জানা গেল সত্য?

বিএসএফের জওয়ানের হাতে নিহত বাংলাদেশি নাগরিক দাবিতে ভাইরাল ছবিটির সত্যতা জানতে আমরা ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। তখন আমরা গত ১৭ এপ্রিল একটি এক্স হ্যান্ডেলে এই একই ছবি দেখতে পাই। ছবিটি পোস্ট করে সেখানে লেখা হয়েছে, ছত্তিশগড়ের কাঁকেরে বিএসএফের অভিযানে মৃত কুখ্যাত শঙ্কর রাও-সহ ২৯ জন মাওবাদী।

Advertisement

এরপর এক্স হ্যান্ডেলে প্রাপ্ত তথ্যের উপরে ভিত্তি করে আমরা একাধিক কিওয়ার্ড সার্চ করি। তখন আমরা গত ১৭ এপ্রিল দ্য টেলিগ্রাফে এই একই ছবি-সহ একটি প্রতিবেদন দেখতে পাই। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৬ মার্চ ছত্তিশগড়ের কাঁকের জেলার হিদুর এবং কালপার গ্রাম সংলগ্ন পাহাড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর এনকাউন্টারে খতম ২৯ জন নকশাল। তবে টেলিগ্রাফের এই প্রতিবেদনে মৃতদের নাম-পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি। সেই সঙ্গে কোনও বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যুর কথাও এখানে উল্লেখ করা হয়নি। 

যেহেতু ভাইরাল ছবির মৃত ব্যক্তিকে বাংলাদেশি বলে দাবি করা হচ্ছে। তাই আমরা গত ১৬ মার্চের এনকাউন্টারে মৃতদের মধ্যে কোনও বাংলাদেশি ছিলেন কিনা সেই তথ্য জানার জন্য আমাদের স্থানীয় প্রতিনিধি এস করিমুদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের জানান, গত ১৮ এপ্রিল মাওবাদীদের তরফে মৃতদের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সেই তালিকায় কোনও বাংলাদেশি নাগরিকের নাম নেই।

এই তালিকায় প্রত্যেকের নাম ও তাদের বাড়ির ঠিকানা উল্লেখ করা ছিল। যা খতিয়ে দেখে খুব সহজেই প্রমাণ হয় যে, ছত্তীসগঢ়ে যৌথ বাহিনীর অভিযানে মৃত মাওবাদীর দেহকে বিভ্রান্তিকরভাবে বাংলাদেশি নাগরিকের দেহ দাবি করে ভাইরাল করা হয়েছে।

ইনপুট: এস. করিমুদ্দিন, ছত্তীসগঢ়

ফ্যাক্ট চেক

দাবি

বাংলাদেশি নাগরিকের দেহ নিয়ে যাচ্ছে বিএসএফ।

ফলাফল

বিএসএফের জওয়ানদের কাঁধের মৃতদেহটি কোনও বাংলাদেশি নাগরিকের নয়। বরং সেটি ছত্তীসগঢ়ে পুলিশ এবং বিএসএফের যৌথ অভিযানে মৃত মাওবাদীর দেহ।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের नंबर 73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement