Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: ইজরায়েলের ৩০টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে ইরান? রইল ভিডিওর আসল রহস্য

একটি ভিডিওটি শেয়ার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করা হচ্ছে, ইরানের মিসাইল হামলা করে ইজরায়েলের ৩০টি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ধ্বংস করে দিয়েছে।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 03 Oct 2024,
  • अपडेटेड 3:20 PM IST

গত ১ অক্টোবর স্থানীয় সময় রাত পৌনে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত টানা প্রায় পৌনে দু-ঘণ্টা ইজরায়েলে মিসাইল হামলা চালায় ইরান। ইজরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে কমপক্ষে ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে বলে খবর। ইজরায়েলি বিমান হানায় নিহত হিজবুল্লা প্রধান সৈয়দ হাসান নাসরুল্লার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতেই এই হামলা। যদিও ইজরায়েলের দাবি ইরানের এই হামলায় তাদের তেমন কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।  

আর এই আবহে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে ইরান-ইজরায়েল সংঘাত সংক্রান্ত একটি ভিডিও। যেখানে একটি ধ্বংসপ্রায় স্থানে কিছু মানুষ দাঁড়িয়ে আছেন। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, সেটিতে ইরানের মিসাইল হামলার জেরে ইজরায়েলের ৩০টি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের ধ্বংসের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।  

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “ইরান সফলভাবে ইসরায়েলের ৩০টি F-35 যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে। যার প্রতিটির মূল্য 100 মিলিয়ন ডলারের উপর! এই জেটগুলি 40,000 নিরপরাধ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করতে ব্যবহৃত হয়েছিল।” (সব বানান অপরিবর্তিত।) 

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটিতে ইজরায়েলের যুদ্ধবিমান ধ্বংসের দৃশ্য নয়। বরং চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে গাজার রাফাহ শহরের শাবোরা ক্যাম্পে ইজরায়েলি হামলার পরের দৃশ্য হিসেবে ভিডিওটি আগেই প্রচারিত হয়েছে। 

কীভাবে জানা গেল সত্য?

প্রথমত, ভাইরাল ভিডিওটি সন্দেহজনক। কারণ তা শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ইরানের মিসাইল হামলার জেরে ইজরায়েলের ৩০টি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের ধ্বংস হয়েছে। কিন্তু ভিডিওটি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করেও সেখানে এমন কোনও যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। যা থেকে এই ভিডিওতে থাকা দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। 

তবে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করার সময় আমরা এর ফ্রেমের উপরে আরবি ও ইংরেজি উভয় ভাষায় ‘hani.alshaer’ নামটি দেখতে পাই। সেই সূত্রে ধরে এই সংক্রান্ত কিওয়ার্ড সার্চ করলে ইনস্টাগ্রামে চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি ‘Hani Alshaer’ নামক এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে এই একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। প্রোফাইলটি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলে জানা যায় যে তিনি আল জাজিরার প্যালেস্টাইন ভিত্তিক সাংবাদিক। হানি আলশায়েরের পোস্টের ক্যাপশন থেকে আমরা জানতে পারি, ভাইরাল ভিডিওতে দেখতে পাওয়া ধ্বংসপ্রায় স্থানটি গাজার রাফাহ শহরের শাবোরা ক্যাম্পের। যেখানে হামলা চালিয়েছিল ইজরায়েলি সেনা।

Advertisement

উক্ত তথ্যের উপরে ভিত্তি করে এই সংক্রান্ত একাধিক কিওয়ার্ড সার্চ করলে চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি আল জাজিরার আরবি ভাষার সংবাদ পোর্টাল aljazeera.net-এ একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়। যে প্রতিবেদনে হানি আলশায়েরকে সরজমিনে রিপোর্টিং করতেও দেখা গেছে। এমনকি ২ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের সেই প্রতিবেদনের ২ মিনিট ১৬ সেকেণ্ডের ফ্রেমের সঙ্গে আমরা ভাইরাল ভিডিওর ফ্রেমের হুবহু মিল খুঁজে পাই। পাশাপাশি প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে দুই ইজরায়েলি বন্দিকে উদ্ধার করার লক্ষ্যে গাজার রাফাহ শহরের শাবোরা ক্যাম্পে মিসাইল হামলা করে ইজরায়েল। এই হামলার কারণে বেশ কয়েকজন প্যালেস্টাইন নাগরিক নিহত ও আহত হয়েছিলেন।

চলতি বছরের ১২ ফ্রেব্রুয়ারি তুরস্কের সরকারি সংবাদ সংস্থা Anadolu Agency-এর একটি প্রতিবেদনে এই একই তথ্য পাওয়া যায়। ভাইরাল ভিডিওর ফ্রেমের সঙ্গে হুবহু মিল থাকা একটি ছবি-সহ সেখানে উল্লেখ করা হয়, গত ১২ ফ্রেব্রুয়ারি প্যালেস্টাইনের রাফাহ শহরে হামলা চালায় ইজরায়েলি সেনা। আর এই হামলার জেরে একটি খালি মাঠে তৈরি হয় বেশ কয়েকটি গর্ত। 

এর থেকে প্রমাণ হয় যে ইরানের মিসাইল হামলার জেরে ইজরায়েলের যুদ্ধবিমানের ধ্বংসের দৃশ্য দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়েছে গাজার রাফাহ শহরের শাবোরা ক্যাম্পে ইজরায়েলি হামলার পরের ভিডিও। যা গত ফেব্রুয়ারি মাসে ঘটেছিল। 

ফ্যাক্ট চেক

দাবি

ভিডিওটিতে ইরানের মিসাইল হামলার জেরে ইজরায়েলের ৩০টি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ধ্বংসের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

ফলাফল

ভাইরাল ভিডিওটিতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে গাজার রাফাহ শহরের শাবোরা ক্যাম্পে ইজরায়েলি হামলার পরের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। 

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের नंबर 73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement