Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: পাওনা টাকা চাওয়ায় উত্তর প্রদেশে দলিত মহিলার গায়ে আগুন উচ্চবর্ণের হিন্দুদের?

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওর মহিলা এবং যে ব্যক্তি তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয় তাদের কেউই দলিত নয়। বরং উভয়ই একই পদবী যুক্ত উচ্চবর্ণের মানুষ এবং একে অপরের আত্মীয়।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 24 Dec 2024,
  • अपडेटेड 1:44 PM IST

ভারতে দলিত বা নিচু জাতের মানুষদের সঙ্গে বৈষম্যের ঘটনা নতুন নয়। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল এই সংক্রান্ত একটি ভিডিও। যেখানে একজন অর্ধ দগ্ধ মহিলার সারা গায়ে সাদা রঙের কিছু লাগানো অবস্থায় কোনও একটি স্থানে শুয়ে চিৎকার করতে দেখা যাচ্ছে। 

ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, উত্তরপ্রদেশের এক মহিলার গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ তার অপরাধ সে দলিত হয়ে উচ্চ বর্ণের হিন্দুর কাছে নিজের পাওনা টাকা চাইতে গিয়েছিল।

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “উত্তর প্রদেশে একদল উচ্চ বর্ণের হিন্দু,দলিত মহিলার গায়ে পেট্রোল ঢেলে তাকে পুড়িয়ে দিয়েছে হিন্দুত্ববাদীরা, ওনার অপরাধ উনি ধার নেওয়া টাকা ফেরত চাইতে গেছিলেন। যোগী মডেল এটাই।” (সব বানান অপরিবর্তিত।)

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওর মহিলা এবং যে ব্যক্তি তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয় তাদের কেউই দলিত নয়। বরং উভয়ই একই পদবী যুক্ত উচ্চবর্ণের মানুষ এবং একে অপরের আত্মীয়।

কীভাবে জানা গেল সত্য?

প্রথমত ভাইরাল ভিডিওটি সন্দেহজনক। কারণ ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হয়েছে, উচ্চ বর্ণের হিন্দুর কাছে নিজের পাওনা টাকা চাওয়ায় দলিত মহিলার গায়ে পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্ত ভিডিওটি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলে আমরা লক্ষ্য করি সেটির ৭ সেকেণ্ডে নির্যাতিতা ওই মহিলা তার গায়ে যে ব্যক্তি আগুন লাগিয়ে দিয়েছে তার নাম ‘দেব চৌহান’ বলে উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি ভিডিওটির ৪৩ সেকেন্ডে ওই মহিলা নিজের নাম ‘দীপা চৌহান’ বলে জানিয়েছেন। এর থেকে অনুমান করা যায় যে, ওই নির্যাতিতা মহিলা এবং তার গায়ে যে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে সেই অভিযুক্ত ব্যাক্তি উভয়ই একই বর্ণের মানুষ।

Advertisement

তাই ভাইরাল দাবি ও ভিডিওটির মূল রহস্য জানতে সেটির কি-ফ্রেম সার্চ করলে ২০২৪ সালের ১২ জুলাই একটি এক্স হ্যান্ডেলে এই একই ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটি শেয়ার করে সেখানে লেখা হয়েছে, “উত্তর প্রদেশের মেইনপুরীতে এক দোকানদার ঋণের কারণে মহিলার উপর পেট্রল ঢেলে তাকে জ্বালালো।” পোস্টটির আর্কাইভ এখানে দেখা যাবে।

এরপর উক্ত সূত্র ধরে পরবর্তী সার্চ করলে চলতি বছরের ১৪ জুলাই ভাইরাল ভিডিও থেকে নেওয়া দুটি স্ক্রিনশট-সহ দ্য ফ্রি প্রেস জার্নালের ওয়েবসাইটে ঘটনাটি সম্পর্কে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, “নিজের পাওনা ৮০ হাজার টাকা চাওয়ায় উত্তরপ্রদেশের মেইনপুরী জেলার কোতোয়ালি শহরের কাকান গ্রামের বাসিন্দা দীপা নামক এক মহিলার গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় স্থানীয় এক মোবাইল দোকানদার যুবক। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে দেখে অভিযুক্ত দোকানদার সেখান থেকে পালিয়ে গেছে।” এই একই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে অমর উজালা ও দৈনিক ভাস্কর-সহ একাধিক প্রতিবেদনে। কিন্তু কোথাও নির্যাতিতা মহিলাকে দলিত বা নিম্নবর্ণের মানুষ হিসাবে উল্লেখ করা হয়নি। 

এরপর এ বিষয়য়ে জানতে আমরা উত্তরপ্রদেশের কোতোয়ালি থানার এসএইচও ফাতে বাহাদুর সিং ভাদৌরিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের জানান, “ভিডিওতে নির্যাতিতা যে মহিলাকে দেখা যাচ্ছে তিনি হলেন দীপা চৌহান এবং তার গায়ে যে যুবকটি আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল তার নাম দেব চৌহান। তাদের কেউই দলিত নয় বরং উভয়ই উচ্চবর্ণের মানুষ। দীপা এবং অভিযুক্ত দেব সম্পর্কে একে অপরের আত্মীয় হয় এবং উভয়ই ঠাকুর সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। বর্তমানে দীপা সুস্থ হয়ে বাড়িতে এবং দেব এই ঘটনার জন্য জেলে আছে।”

এর থেকে প্রমাণ হয় পাওনা টাকা নিয়ে একই বর্ণের দুই আত্মীয়র বিবাদকে বর্ণ বিদ্বেষের রঙ দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করা হচ্ছে।

ফ্যাক্ট চেক

দাবি

উত্তর প্রদেশে নিজের পাওনা টাকা চাওয়ায় এক দলিত মহিলার গায়ে পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে উচ্চবর্ণের হিন্দুরা।

ফলাফল

ভিডিওর মহিলা এবং যে ব্যক্তি তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয় তাদের কেউই দলিত নয়। বরং উভয়েরই চৌহান পদবী ও তাঁরা ঠাকুর সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের नंबर 73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement