দীপাবলির আবহে বাজি পোড়ানো উপভোগ করেন অনেকেই। তবে অনেক সময় এই বাজি-পটকা থেকে ঘটে যায় নানা ধরনের অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা। তেমনই একটি ভিডিও এ বার সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, একটি দোকানের সামনে মানুষের জটলা ভিড় করে রয়েছে এবং কয়েক মুহূর্তেই সেখানে আগুন ধরে যাচ্ছে।
দেখতে দেখতে দোকানের সামনে থাকা সরঞ্জামেও বাজির আগুন ধরে যাচ্ছে এবং ক্রমশ তা গোটা দোকানকে নিজের গ্রাসে নিয়ে নিচ্ছে। ভিডিওটি পোস্ট করে একে দিল্লির সদর বাজারের ঘটনা বলে দাবি করা হয়েছে। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "দিল্লীতে আতশ বাজির দোকানে ভয়াবহ আগুন। #sadarbazardelhi #delhi."
আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভাইরাল ভিডিওটি দিল্লির নয় বরং তেলেঙ্গানার। এই আগুন লাগার ঘটনাটি গত ২৭ অক্টোবর ঘটেছিল।
কীভাবে জানা গেল সত্যি
ভাইরাল ভিডিওটি থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে তার রিভার্স ইমেজ সার্চ করার পর আমরা একটি ইউটিউব চ্যানেলে ওই একই ভিডিও দেখতে পাই যা গত ২৮ অক্টোবর আপলোড করা হয়েছিল। ভিডিওটি আপলোড করে সেখানে লেখা হয়, এটি হায়দরাবাদের ঘটনা।
এই বিষয়টিকে সূত্র ধরে কিছু কিওয়ার্ড সার্চ করে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত একটি খবর দেখা যায়। ২৯ অক্টোবরের এই খবরে বলা হয় যে হায়দরাবাদে পারস আতশবাজির দোকানে আগুন লাগার ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক বিশৃঙ্খলতা সৃষ্টি হয়। দ্য হিন্দুতে প্রকাশ পাওয়া আরেকটি খবর অনুযায়ী, উক্ত ঘটনার পর পাশে থাকা একটি রেস্তোরাঁর মালিক ২৭ অক্টোবরের আগুন লাগা নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর সুলতান বাজার পুলিশ পারস ফায়ারওয়ার্কসের মালিক গুরুবিন্দর সিংয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
২৭ অক্টোবর প্রকাশ পাওয়া আজতকের খবরে উল্লেখ করা হয় যে এই ঘটনাটি হায়দরাবাদের ওবিডসে্র হনুমান টেকরি নামক এলাকায় থাকা বাজি-পটকার দোকানে লেগেছিল। সেই সঙ্গে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয় যে দোকানটি অবৈধভাবে গড়ে উঠেছিল, যার কোনও শংসাপত্র ছিল না। পুলিশ আগুনের ঘটনা নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে। তবে প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত আগুন লাগার সঠিক কারণ জানা যায়নি।
নিউজ এজেন্সি এএনআই-এর একটি এক্স পোস্টে সুলতান বাজার থানার এসিপি কে শঙ্করের একটি বয়ান তুলে ধরা হয়। যেখানে তিনি বলেন যে দোকানে লাগা আগুন নেভাতে প্রায় দু-তিন ঘণ্টা সময় লাগে। এই ঘটনায় একজন মহিলা আহত হন এবং সাত থেকে আটটি গাড়ি আগুনে পুড়ে যায়। সেই সঙ্গে পুলিশ আরও জানায় যে, দীপাবলির তিন দিন আগে বাজি বিক্রির জন্য দোকানগুলিকে লাইসেন্স দেওয়া হয়। তবে এই দোকানে আগে থেকেই বেআইনিভাবে বাজি বিক্রি করা হচ্ছিল।
ফলত বিষয়টি পরিষ্কার যে তেলেঙ্গানার হায়দরাবাদের একটি ভিডিওকে দিল্লির বলে শেয়ার করা হচ্ছে।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে দিল্লির একটি বাজির দোকানে ভয়াবহ আগুন।
এই ভিডিওটি দিল্লির নয় বরং তেলেঙ্গানার হায়দরাবাদের। গত ২৭ অক্টোবর অগ্নিকাণ্ডটি ঘটেছিল।