Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: ২০০০-এর নোটের বিদায়বেলায় বাজারে হাজির নতুন মুদ্রা? পুরনো দাবি ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সোশ্যাল মিডিয়ায়

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই ঘোষণার পর থেকে সোশ্য়াল মিডিয়ায় একাধিক জল্পনা শুরু হয়েছে। বাজারে নতুন মুদ্রা আসতে চলেছে, এমন দাবি করা শুরু করেছেন অনেকেই। এই দাবিতে চারটি ছবির একটি কোলাজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে।

ফ্যাক্ট চেক: ২০০০-এর নোটের বিদায়বেলায় বাজারে হাজির নতুন মুদ্রা?
ঋদ্ধীশ দত্ত
  • কলকাতা,
  • 28 May 2023,
  • अपडेटेड 6:44 PM IST

২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাস নাগাদ তাকে প্রথমবার দেখেছিল ভারতবাসী। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে, মাত্র সাত বছরের মাথায় সে বিদায় নিতে চলেছে। কথা হচ্ছে গোলাপী রঙের ২০০০ টাকার নোট নিয়ে। গত ১৯ মে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বাজার থেকে আস্তে-আস্তে তুলে নেওয়া হবে ২০০০-এর নোট। চলতি বছর ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাঙ্কে এই নোটগুলি জমা করা যাবে। 

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই ঘোষণার পর থেকে সোশ্য়াল মিডিয়ায় একাধিক জল্পনা শুরু হয়েছে। বাজারে নতুন মুদ্রা আসতে চলেছে, এমন দাবি করা শুরু করেছেন অনেকেই। এই দাবিতে চারটি ছবির একটি কোলাজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে। 

চারটি ছবির এই কোলাজে প্রথম ছবিতে একটি ২০০ টাকার কয়েন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। দ্বিতীয় ছবিতে দেখা যাচ্ছে কোনও এক ব্য়ক্তির হাতে ৩৫০ টাকার নোটের একটি বাণ্ডিল। একই ভাবে তৃতীয় ও চতুর্থ ছবিতে সবুজ রঙের ১০০০ টাকা ও ১২৫ টাকার একটি কয়েন দেখা যাচ্ছে। 

ছবিগুলি শেয়ার করে অনেকেই লিখছেন যে, এগুলি দেশের নতুন মুদ্রা হতে চলেছে। 

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক টিম অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, দাবিটি পুরোপুরি ভুয়ো। ৩৫০ ও ১০০০ টাকার নোটের বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বাকি দুটো কয়েন বাজারে চলতি কোনও মুদ্রা নয়, বরং একটি স্মারক। 

কীভাবে জানা গেল সত্যি...

সবার প্রথম আমরা খুঁজে দেখার চেষ্টা করি যে বাজারে নতুন মুদ্রার বিষয়ে রিজার্ভ ব্য়াঙ্কের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে কোনও ঘোষণা করা হয়েছে কিনা। তখন আমরা সংস্থা এএনআই-এর একটি খবর দেখতে পাই যা ২৮ মে প্রকাশ পেয়েছে। 

Advertisement

সেখানেই উল্লেখ করা হয় যে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠান ও স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষপূর্তি মাথায় রেখে প্রধানমন্ত্রী এই স্মারক মুদ্রার সূচনা করেছে। এ বাদে অন্য কোনও নতুন মুদ্রার বিষয়ে সেই প্রতিবেদনে কিছু লেখা হয়নি। 

এরপর আমরা ছবিতে থাকা বাকি মুদ্রাগুলিকে নিয়ে সার্চ করি। সবার প্রথম ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর টিভি৯ বাংলার একটি প্রতিবেদন দেখা যায়। সেখানে লেখা হয় যে, ইস্কনের প্রতিষ্ঠাতা শ্রী প্রভুপাদের জন্মবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী মোদী এই স্মারকমুদ্রা প্রকাশ করেছেন। 

শুধু তাই নয়, ২০১৫ সালে বাবা আম্বেদকরের ১২৫ তম জন্মবর্ষেও একই ধরনের ১২৫ টাকার স্মারকমুদ্রা প্রকাশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। যদিও কোনও মুদ্রাই বাজারে লেনদেনের প্রকাশ করা হয়নি, বরং স্মারক হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছিল। 

এ বাদে ২০০ টাকার নোটের বিষয়ে সার্চ করে পাওয়া যায় যে, স্ন্যাপডিলের মতো বিপণন ওয়েবসাইটে আগে থেকেই এই কয়েন রয়েছে। বিবরণ অনুযায়ী, তাতিয়া টোঁপির ২০০ তম জন্মবার্ষিকীতে এই কয়েন প্রকাশ করা হয়। বলাই বাহুল্য়, এই কয়েনও আর্থিক লেনদেনের জন্য নয়, শুধুমাত্র স্মারক হিসেবেই প্রকাশ করা হয়েছিল। 

এরপর আমরা ৩৫০ ও ১০০০ টাকার নোটের বিষয়টি নিয়ে কিছু কিওয়ার্ড সার্চ করি। তখন দ্য কুইন্ট, ফ্যাক্টলি, ইন্ডিয়া ডট কম-এর মতো একাধিক সংস্থার ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদন আমাদের নজরে পড়ে। সেখানে স্পষ্টতই বলা হয়, ৩৫০ এবং ১০০০ টাকার নোটের দাবিটি ভুয়ো। ২০১৯ সালেও একই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে একই গুজব শেয়ার করা হয়েছিল। 

এই বিষয়ে আরও নিশ্চিত তথ্য পেতে আমরা যোগাযোগ করি রিজার্ব ব্যাঙ্ক কলকাতা শাখার কনসিউমার এডুকেশন এবং প্রোটেকশন সেলের ম্যানেজার মহন্ত পাতারের সঙ্গে। তিনি আমাদের জানিয়ে দেন যে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে কোনও নতুন মুদ্রা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা সরকারিভাবে ঘোষণা করা হবে। চুপিচুপি কোনও নোট প্রকাশ হয় না। 

ফ্যাক্ট চেক

দাবি

ভারতের নতুন মুদ্রা।

ফলাফল

এর মধ্যে দুটি মুদ্রা স্মারক। বাকি দুটি নোটের বান্ডিলে ভুয়ো নোট দেখা যাচ্ছে।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের नंबर 73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement