Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: আর্য-বিরোধী মন্তব্যের জন্য জওহরলাল নেহেরুকে চড় মারার দাবিটি ভুয়ো

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল একটি পোস্টে দাবি করা হয়েছে যে ১৯৬২ সালে নাকি আর্য বিরোধী মন্তব্যের জন্য নেহেরুকে চড় মারা হয়েছে।

জওহরলাল নেহেরুকে নিয়ে আবারও বিভ্রান্তকর দাবি ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়
ঋদ্ধীশ দত্ত
  • কলকাতা,
  • 25 Apr 2022,
  • अपडेटेड 11:56 AM IST


স্বাধীন ভারতের প্রাক্তন ও প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর ছবি সম্বলিত একটি পোস্ট সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে। 

ভাইরাল সেই পোস্টে দাবি কর হচ্ছে, ১৯৬২ সালে নাকি তাঁর আর্য-বিরোধী মন্তব্যের জন্য স্বামী বিদ্যানন্দ বিদেহ তাঁকে চড় মেরেছিলেন। একটি পোস্টকার্ড শেয়ার করা হয়েছে যাতে ইংরাজিতে লেখার অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, "৬২ সালে নেহেরু নিজের ভাষণে বলেছিলেন যে আর্যরা নাকি ভারতে উদ্বাস্তু। এই শুনে ওই অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথী স্বামী বিদ্যানন্দ উঠে নেহেরুকে চড় মারেন। এরপর মাইক নিজের কাছে টেনে নিয়ে বলেন, "আর্যরা উদ্বাস্তু নয়, তারা আমারই পূর্বপুরুষ এবং তারা ভারতের। কিন্তু আপনাদের শরীরে আরবের পূর্বপুরুষদের রক্ত বইছে। আজ যদি আপনার জায়গায় সর্দার প্যাটেল প্রধানমন্ত্রী হতেন, আমাদের দেশের পরিস্থিতি এতটা খারাপ হত না।" 

ভাইরাল হওয়া এই ঘটনার তথ্যসূত্র হিসেবে "বিদেহ গাথা" নামের একটি বইয়ের ৬৩৭ নম্বর পাতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। 

এই পোস্টের আর্কাইভ এখানেএখানে দেখা যাবে। 

ইন্ডিয়া টুডে অ্যান্টি ফেক নিউজ ওয়ার রুম অনুসন্ধান করে পেয়েছে যে ভাইরাল দাবিটি সত্যি নয়। প্রথমত, এই ছবিটির সঙ্গে দাবি করা ঘটনাটির কোনও সাদৃশ্য নেই। দ্বিতীয়ত, এই ধরনের কোনও ঘটনার উল্লেখও ওই বইতে, বা অন্য কোথাও নেই। 

আফয়া তদন্ত

সবার প্রথম ভাইরাল ছবিটির উৎস খুঁজতে আমরা এর রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ইয়েন্ডেক্সে রিভার্স সার্চের দরুণ "আউটলুক"-এর ওয়েবসাইটে ওই একই ছবিটি দেখতে পাওয়া যায়। 

ছবির বিবরণে লেখা ছিল যে এই ছবিটি ১৯৬২ সালে ইন্দো-চিন যুদ্ধের আগে তোলা ছবি যখন নেহেরু কোনও মতে একদল দাঙ্গাবাজের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন। সেই সঙ্গে ওই প্রতিবেদনে এটাও লেখা ছিল যে ছবিটি আসলে অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) সংস্থা দ্বারা তোলা হয়েছে। 

Advertisement

সেই মতো কিওয়ার্ড সার্চের সাহায্য নিয়ে আমরা আসল ছবিটি এপি-র ওয়েবসাইটে খুঁজে পাই। সেখানে লেখা ছিল যে, ১৯৬২ সালে পাটনায় কংগ্রেস পার্টি একটি মিটিং চলাকালীন জনাকয়েক ব্যক্তি সেখানে হামলা চালানোর পর নিরাপত্তারক্ষীদের দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে ঠিক এইভাবে রক্ষা পেয়েছিলেন নেহেরু। 

সুতরাং, ভাইরাল পোস্টে যে ধরনের দাবি করা হয়েছে, তার সঙ্গে যে এই ছবির কোনও সম্পর্ক নেই, এ কথা পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। 

এ বার চলে আসা যাক সেই তথ্য় সূত্র সম্পর্কে যা দ্বারা এমন দাবি করা হয়েছে। এই দুটি বইয়ে বিস্তারিতভাবে খুঁজেও এই ধরনের কোনও তথ্যের সন্ধান পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য, এর আগে ২০২০ সালেও এই একই দাবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল যখন "দ্য লজিক্যাল ইন্ডিয়ান"-সহ একাধিক সংস্থার তরফে এর সত্যতা যাচাই করা হয়। 

সুতরাং ভাইরাল হওয়া পোস্টের যে সত্যতা নেই, তা হলফ করেই বলা যায়। 

(যশ মিত্তলে ইনপুট সহকারে)

ফ্যাক্ট চেক

দাবি

১৯৬২ সালে আর্য-বিরোধী মন্তব্যের জন্য স্বামী বিদ্যানন্দ বিদেহর হাতে চড় খেয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু।

ফলাফল

ভাইরাল ছবিটি ১৯৬২ সালে ইন্দো-চিন যুদ্ধের আগে পটনায় কংগ্রেসের এক সভা চলাকালীন তোলা। চড় খাওয়ার ঘটনাটির কোনও সত্যতা নেই।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের नंबर 73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement